somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

সাখাওয়াত হোসেন  বাবন
ব্লগিং শুরু করি প্রথম আলো ব্লগে "আমার কবিতা নামে" আমি ব্লগিং করি মূলত নিজের ভেতরে জেগে উঠা ব্যর্থতা গুলোকে ঢেকে রাখার জন্য । দুনীতিবাজ, হারামখোর ও ধর্ম ব্যবসায়িদের অপছন্দ করি ।

আড়িপাতা, হাটে হাড়ি ভাঙ্গা ও বাক স্বাধীনতা

২৭ শে ডিসেম্বর, ২০২১ বিকাল ৪:১৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

কথায় আছে দেয়ালের ও নাকি কান আছে । সে কান দিয়ে দেয়ালের ওপাশ থেকে নাকি সব কিছু শোনা যায় । ভাল কথা বললে ক্ষতি নেই কিন্তু খারাপ খারাপ কথা বললে, খাচ্চোর খাচ্চোর কথা বললে খবর আছে । এক কান হতে দশ কান, এক দেয়াল হতে অন্য দেয়াল লাফিয়ে লাফিয়ে সে কথা ছড়াতে ছড়াতে ছড়াতে বিশ্বময় ছড়িয়ে পরতে খুব সময় লাগে না । মুহূর্তের মধ্যে মান ইজ্জতের ফালুদা হয়ে যায়। কুত্তা দৌড় দৌড়াতে দৌড়াতে জানের অবস্থা কয়লা কয়লা হয়ে ছারখার । তখন ছাইড়া দে মা কাইন্দা বাঁচি অবস্থা । সাম্প্রতিক ঘটনাগুলোকে উদাহরণ হিসাবে নিলে এ ব্যাপারে আর কিছু বলতে হয় না পরিস্থিতির ভয়াবহতা খুব সহজেই অনুমান করা যায় ।

বাক স্বাধীনতা বা নাগরিক চিন্তা, ভাবনা ও তা প্রকাশের অধিকারের দিয়ে সংবিধানে একটি আইন আছে । কিন্তু যারা এসব ছড়াচ্ছে তারা সংবিধানের ধার ধারছে না । আইনের তোয়াক্কা করছে না । কাউকে জব্দ করার জন্য ব্যক্তিগত কথোপকথোন অডিও ফাস করে দিয়ে মজা দেখছে । কোন বাছবিচার নেই কোন কিছুর তোয়াক্কা নেই । আজ এর তো কাল আরেক জনের। পাড়া, মহল্লায় পটকা ফাটার মতো ফুটফাট ফাঁস হয়ে যাচ্ছে সব । কথায় আছে,খারাপ লোকের হাড়ি নাকি হাটে ভাঙ্গে । এখন আর হাটে নয় নেটেই হাড়ি ভেঙ্গে দিচ্ছে । দু চারজন খারাপ লোকের হাড়ি হাটে ভাঙলে কোন ক্ষতি নেই । বেশ হয়েছে , ভাল হয়েছে বলে সকলে মজা দেখতে লেগে যাচ্ছে । শেয়ারের পর শেয়ার ম্যাসেজের পর ম্যাসেজ আহা কত মজা ! ব্যটা জব্দ হয়েছে ।


কিন্তু তবুও এ ক্ষেত্রে , সংবিধানের পরিষ্কার লঙ্ঘন হচ্ছে আমার আজকের ব্লগ লেখার বিষয় সেটাই ।

সংবিধানের খুব সম্ভব , ৩৯ অনুচ্ছেদে নাগরিকদের চিন্তা,বিবেক ও বাক স্বাধীনতা কথা বলা আছে ।
সেখানে বলা আছে যে,

(ক) প্রত্যেক নাগরিকের বাক ও ভাব প্রকাশের স্বাধীনতার অধিকারের, এবং
(খ) সংবাদপত্রের স্বাধীনতার নিশ্চয়তা প্রদান করা হইল।

কিন্তু রাষ্ট্রের প্রয়োজনে সরকার নিরাপত্তা বা ডিজিটাল আইন প্রণয়ন করেছে । সেখানে বলা হয়েছে যে, রাষ্ট্রের নিরাপত্তার প্রয়োজন যে কোন নাগরিকের ফোনালাপ নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা প্রতিষ্ঠান সমূহ শুনতে বা রেকর্ড করতে পারবে । এ কাজের জন্য প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতিও ওই সকল প্রতিষ্ঠান সংগ্রহ করেছে বলে প্রতীয়মান হচ্ছে । কিন্তু কথা হচ্ছে, রাষ্ট্রের নিরাপত্তার স্বার্থে আড়িপাতার জন্য আইন করা হলেও, ডিজিটাল আইনে কিন্তু তা প্রকাশ করার অনুমতি কোন প্রতিষ্ঠানকেই দেওয়া হয়নি । তাই এটা পরিষ্কার আইনের লঙ্ঘন । যা সমর্থনযোগ্য নয় । নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছে কোন ব্যক্তির আচার আচরণ সন্দেহজনক মনে করলে তার ফোনালাপ রেকর্ড করতেই পারে । কিন্তু তারাও তা প্রকাশ করতে পারবে না । তাহলে প্রশ্ন দাঁড়াচ্ছে, কারা এসব প্রকাশ করছে ? কেন করছে ?

যেহেতু মোবাইল নেটওয়ার্কের মাধ্যমে ফোনালাপগুলো শোনা বা রেকর্ড হচ্ছে, সেহেতু নাগরিকদের প্রত্যাহিক জীবনের প্রয়োজনীয়, অপ্রয়োজনীয় অনেক কথাবার্তাই রেকর্ড হয়ে যেতে পারে যা রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তার জন্য অপ্রয়োজনীয় হলেও ব্যক্তি জীবনের জন্য অত্যন্ত গোপনীয় ও গুরুত্বপূর্ণ । তাই কারো ব্যক্তিগত কথাবার্তা প্রকাশ হয়ে গেলে, উক্ত ব্যক্তি ও তার পরিবারের সদস্যদের সামাজিক মানসিক ও রাষ্ট্রীয় জীবন মুর্হর্তে দুর্বিষহ হয়ে উঠে। ব্যক্তির দোষ থাকলেও তার পরিবারের সদস্যদের সেই দোষে দোষী করে সামাজিক ভাবে হেয় করা কিন্তু রাষ্ট্রীয় আইনের পরিপন্থী । কথা হচ্ছে, রাষ্ট্র যেহেতু কোন প্রতিষ্ঠানকে কারো ব্যক্তিগত তথ্য প্রকাশ করার অনুমতি প্রদান করেনি তাহলে কারা , কি স্বার্থে এসব রসালো কথাবার্তা প্রকাশ করছে ? সেটা খুঁজে দেখার দায়িত্ব ও রাষ্ট্রের ও সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোর। কিন্তু কেউ ই এ ব্যাপারে কোন ব্যবস্থা নিচ্ছে না । সত্যি্‌ই এটা ভাববার বিষয় ।

যারা আজ একজনের ইশারায় অন্যজনের ব্যক্তিগত তথ্য ফাঁস করছে তারাই কিন্তু কাল আরেকজনের ইশারায় আজকের ইশারাদাতার তথ্য ফাঁস করে দিতে মোটেও কুণ্ঠাবোধ করবে না । ইট মারলে পাটকেল খেতে হয় । তাই সকলের নিজ স্বার্থেই রাষ্ট্রীয় আইনের যথাযথ ব্যবহার উচিত । কোন অবস্থাতেই আইনের অপব্যবহার করা উচিত নয় ।

যেহেতু শুধুমাত্র মোবাইল বা টেলিফোনে আলাপকারীদের তথ্যই ফাঁস হচ্ছে, সেহেতু এর দায় দায়িত্ব বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন্স কোম্পানি লিমিটেড বা বিটিসিএল বাংলাদেশের সরকারি টেলিফোন সংস্থা ও বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ টেলিযোগাযোগ কোম্পানি উপর গিয়ে পরে । তাই তাদের তাদের নিজেদের স্বার্থে খুঁজে বের করতে হবে, কারা প্রকাশ করছে কি স্বার্থে রাষ্ট্রীয় আইন ভঙ্গ করে ব্যক্তিগত তথ্য প্রকাশ করছে ।


সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে ডিসেম্বর, ২০২১ বিকাল ৪:৩৭
৩টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

একটি ছবি ব্লগ ও ছবির মতো সুন্দর চট্টগ্রাম।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৮:৩৮


এটি উন্নত বিশ্বের কোন দেশ বা কোন বিদেশী মেয়ের ছবি নয় - ছবিতে চট্টগ্রামের কাপ্তাই সংলগ্ন রাঙামাটির পাহাড়ি প্রকৃতির একটি ছবি।

ব্লগার চাঁদগাজী আমাকে মাঝে মাঝে বলেন চট্টগ্রাম ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

মেহেদী নামের এই ছেলেটিকে কি আমরা সহযোগীতা করতে পারি?

লিখেছেন ইফতেখার ভূইয়া, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১০:০৪


আজ সন্ধ্যায় ইফতার শেষ করে অফিসের কাজ নিয়ে বসেছি। হঠাৎ করেই গিন্নি আমার রুমে এসে একটি ভিডিও দেখালো। খুলনার একটি পরিবার, ভ্যান চালক বাবা তার সন্তানের চিকিৎসা করাতে গিয়ে হিমশিম... ...বাকিটুকু পড়ুন

দ্য অরিজিনস অফ পলিটিক্যাল জোকস

লিখেছেন শেরজা তপন, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১১:১৯


রাজনৈতিক আলোচনা - এমন কিছু যা অনেকেই আন্তরিকভাবে ঘৃণা করেন বা এবং কিছু মানুষ এই ব্যাপারে একেবারেই উদাসীন। ধর্ম, যৌন, পড়াশুনা, যুদ্ধ, রোগ বালাই, বাজার দর থেকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। ভালোবাসা নয় খাবার চাই ------

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৯ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:০৬


ভালোবাসা নয় স্নেহ নয় আদর নয় একটু খাবার চাই । এত ক্ষুধা পেটে যে কাঁদতেও কষ্ট হচ্ছে , ইফতারিতে যে খাবার ফেলে দেবে তাই ই দাও , ওতেই হবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

জাতীয় ইউনিভার্সিটি শেষ করার পর, ৮০ ভাগই চাকুরী পায় না।

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৯ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৭



জাতীয় ইউনিভার্সিটি থেকে পড়ালেখা শেষ করে, ২/৩ বছর গড়াগড়ি দিয়ে শতকরা ২০/৩০ ভাগ চাকুরী পেয়ে থাকেন; এরা পরিচিত লোকদের মাধ্যমে কিংবা ঘুষ দিয়ে চাকুরী পেয়ে থাকেন। এই... ...বাকিটুকু পড়ুন

×