
আর দিয়েন না ভাবিসাব, মিডায় মুখ মাইরা আনে ।
ভাবির দেওয়া খাবার খেতে খেতে রোমান্টিক দেবর বলছে, ভাবি আপনার দেওয়া খাবার অতি মিষ্টিতে আর খাওয়া যাচ্ছে না তাই আর দিয়েন না । ভাবিসাপ তো আর বুঝতে পারছেন না যে, মিডার কথা বলে, দেবর তার সোনার সংসারটা ভেঙ্গে দিচ্ছে ।
ভাই, ভাই হাই, হাই ( জামাই ) বিপদে পরলে আমি নাই । আরো আছে, অতি ভক্তি চোরের লক্ষণ । এসবই প্রচলিত বাংলা কথাবার্তা । আগের দিনে ময় মুরুব্বিরা কথায় কথায় এসব উপমা ব্যবহার করতেন । ছোট বেলা মার কাছ থেকে এসব শুনতে শুনতে কখন যে মস্তিষ্কের সেলে সেলে গেঁথে গিয়েছিলো ।বুঝতে পারিনি এখন সময়ে, অসময়ে এসব বের হয়ে আসে । অতি ভক্তি চোরের লক্ষণ । এটি একটি বাগধারা । যার অর্থ হচ্ছে, কোন কিছুই বেশি বেশি বা অতিরিক্ত ভাল না।
কথার প্যাচে কাউকে বাঁশ দেওয়ার জন্যই মূলত জনপ্রিয় সব বাগধারাগুলোর সৃষ্টি হয়েছিলো।
পরপর দু'টো জাতীয় নির্বাচনের পর জনপ্রতিনিধিদের প্রতি দেশের জনগণের আস্থা এমনিতেই কমে গেছে । নির্বাচন হয়ে পরেছে এক মুখী । জনগণ না আছে নির্বাচনে না আছে সরকারে না আছে আন্দোলনে । ফলে যা হবার তাই হয়েছে - ক্ষমতা চলে গেছে প্রশাসনের কাছে । তারা যেমন নাচায় না চাইলেও এখন সব তেমনি নাচে ।
তাই তো দু'দিন পর পর এমপি সাহেবদের হায় হুতাশ করতে দেখা যায় । বিষয়টা নিয়ে হাস্য রস তৈরি হলেও ক্ষতিটা কিন্তু যা হবার তা জনগণের ই হয়েছে । দেশের জনগণ নিজেদের দাবিদাওয়া আদায়ে নীরব থাকায় একের পর এ বেড়ে চলেছে দ্রব্য মূল্যের দাম । আঙুল ফুলে কলাগাছ হচ্ছে, সরকারের কিছু প্রতিষ্ঠান, কিছু কর্মকর্তা আর জনপ্রতিনিধি নামধারী কিছু ব্যবসায়ী যারা রাজনীতিকে শুধুই নিজেদের স্বার্থে ব্যবহার করছে ।
এ কারণেই কানাডার বেগম পাড়ায় বাড়ছে বাংলাদেশী দুর্নীতিবাজদের বাড়ি । পাচার হচ্ছে, হাজার হাজার কোটি টাকা । অথচ এদের ধরা কিন্তু খুব একটা বড় ব্যাপার নয় । যেখান দেশের সাধারণ একজন মানুষের ১ লাখ টাকা ব্যাংকে জমলেই করের নামে কেটে নেওয়া হচ্ছে, ৫০০ টাকা সেখানে হাজার হাজার কোটি টাকা পাচার হয় কি করে সেটা একটা রহস্য ।
গণতান্ত্রিক সরকার যদি জনগণের না হয় তা হলে তো দেশের দ্রব্য মূল্যের লাগাম কিছুতেই টেনে ধরা যাবে না । বাংলাদেশের মতো একটি দরিদ্র দেশের জনগণ যখন ইউরোপ আমেরিকার চেয়েও বেশি মূল্য দিয়ে খাবার কিনে খেতে বাধ্য হয় , তখন শত সহস্র উন্নয়নের গল্পও ফিকে হয়ে আসে । শুধু উন্নয়নে ধুয়ে তো আর পানি খাওয়া যায় না । উন্নয়নের পাশাপাশি দুনীর্তিবাজগুলোকেও ধরতে হবে । সিস্টেমের ভেতর লুকিয়ে থাকা আমলাগুলোকে খুজে খুজে বের করতে হবে । তবেই না উন্নয়ন অর্থবহ হবে । নয়তো উন্নয়নের নামে , বিশ্বের সব চেয়ে বেশি ব্যয়ে রাস্তাঘাট, ব্রীজ কালভাট বানালেও বাহাবা পাওয়া যাবে না । সাফস্য চুরি করে নিয়ে যাবে দুর্নীতিবাজেরা । জনগণও তখন নিরাপদ দুরত্বে দাড়িয়ে থাকবে তামাশা দেখার জন্যে । তাই জনগনের সরকারের উচিত জনগনের কথা চিন্তা করে দ্রব্য মূল্যের লাগাম টেনে ধরা। যদি জনগনের জন্য রাজনীতি হয়, তাহলে জনগনের স্বার্থ ই সবার উপড়ে থাকা উচিত ।
পরিশেষে বলবো, সংসদে প্রকৃত জনপ্রতিনিধিদের জায়গা করে দিন । এটা পরিস্কার যে, টাকার জোড়ে যেসব ব্যবসায়ী রাজনীতির আশ্রয়ে সংসদে ঢুকে পরেছে তাদের সাথে সুসর্স্পক গড়ে উঠবে শুধু বেগম পাড়ার অর্থ পাচার করা আমলাদের সাথেই জনগণের সাথে নয় ।
যারা বঙ্গবন্ধু বা জাতীয় নেতাদের প্রতি অতি ভক্তি দেখাবে মনে রাখবেন , সেটা ভাল লক্ষণ না । বঙ্গবন্ধু সোচ্চার ছিলেন আমলাদের দুনীতির বিরুদ্ধে এ সংক্রান্ত তার বক্তব্যগুলো শুনলে এখনো শরীরের রক্ত গরম হয়ে উঠে । সেই দুর্নীতিবাজ আমলারাই আবার খামচে ধরেছে বাংলাদেশের পতাকা তাই সহজে মুক্তি নেই নূর হোসেন । চোরা না শুনে ধর্মের কাহিনী ......।
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে জানুয়ারি, ২০২২ দুপুর ১২:৪৫

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



