somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

সাখাওয়াত হোসেন  বাবন
ব্লগিং শুরু করি প্রথম আলো ব্লগে "আমার কবিতা নামে" আমি ব্লগিং করি মূলত নিজের ভেতরে জেগে উঠা ব্যর্থতা গুলোকে ঢেকে রাখার জন্য । দুনীতিবাজ, হারামখোর ও ধর্ম ব্যবসায়িদের অপছন্দ করি ।

অপহরণ - সাখাওয়াত বাবনে'র কল্পকাহিনী

০৪ ঠা জুলাই, ২০২২ দুপুর ১:১৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



এক

রৌদ্রকরোজ্জ্বল ঝলমলে একটি দিন ।

দিন বলা ঠিক হলো কিনা বুঝতে পারছি না । কেননা এই মুহূর্তে দিন,ক্ষণ,মাস,বছর,সময় নির্ণয়ের কোন যন্ত্র নেই আমার কাছে। যতবার ঘুম ভেঙ্গেছে ততবার চারপাশে একই রকম পরিবেশ দেখছি । আজ ঘুম ভাঙ্গার পর থেকে নিজের কাছে নিজেকে খুব হালকা লাগছে । শরীরের অঙ্গ প্রত্যঙ্গগুলোর কোন ওজন অনুভব করছি না । মনে হচ্ছে, পাখির পালকের মতো হালকা হয়ে গিয়েছে শরীর । চাইলেই ভেসে বেড়াতে পারবো । উড়ে যেতে পারবো । বিষয়টা প্রথম টের পেয়েছি, ঘুম থেকে উঠার পর বিছানা থেকে জানালার কাছে যাবার সময় । মেঝেতে পা ফেলতেই মনে হলো ভেসে পৌঁছে গেলাম জানালার কাছে । বিষয়টা সত্যিই খুব অদ্ভুত ঠেকেছে আমার কাছে ।

যতদূর দৃষ্টি যায়,সোনা রোদের আলোয় ঝলমল করছে সবকিছু । তবে,মাঝে মাঝে রোদের উজ্জ্বলতা কমতে কমতে একেবারে ঘুটঘুটে অন্ধকার হয়ে যাচ্ছে । পর মুহূর্তেই আবার সেটা বাড়তে বাড়তে পূর্বের ন্যায় আলোকিত করে তুলছে সব । দেখে মনে হচ্ছে, কোন দুষ্ট বালক খেলার ছলে টর্চ লাইটের মতো সূর্যের বোতাম টিপে আলোটাকে একবার বাড়াচ্ছে আবার কমাচ্ছে । গভীর মনোযোগ দিয়ে একটা জিনিস খেয়াল করলাম, দৃষ্টিসীমার মধ্যে ভাসতে থাকা অনেক বস্তুর উপর আলোর কোন প্রতিবিম্ব হচ্ছে না । সেগুলোর উপর আলো পরা মাত্রই সেটা স্পঞ্জের মতো শুষে নিচ্ছে । আবার কোন বস্তুর উপর আলোর প্রতিবিম্ব এতোটাই বেশি যে তাকানো যাচ্ছে না সেগুলোর দিকে ।

আট ফুট বাই চার ফুট রুমের মধ্যে এই নিয়ে তৃতীয় বারের মতো ঘুম থেকে জেগে উঠলাম। বাথটাব সাইজের ক্যাপসুল আকৃতির একটি বিছানা আর ওই জানালাটি ছাড়া কিছুই নেই রুমের ভেতর। জমাট বাধা ইস্পাতের তৈরি সাদা রং এর প্রলেপ দেওয়া দেয়ালে বের হবার দরজা পর্যন্ত নেই । মনে হচ্ছে,আমাকে ভেতরে রেখে উপর,নিচে, চারপাশ থেকে প্রাচীর তুলে দিয়েছে আটকে ফেলা হয়েছে । আমৃত্যু আমাকে এখানেই থাকতে হবে । মরার পর এটাই হবে আমার সমাধি ক্ষেত্র। প্রতিটি অংশ তন্নতন্ন করে পরীক্ষা করেও দরজার কোন অস্তিত্ব খুঁজে পাইনি। সব কিছু এতো নিখুঁত যে অবাক না হয়ে পারা যায় না ।

প্রথম বার ঘুম ভাঙ্গার পর বেশ উত্তেজিত হয়ে উঠেছিলাম । প্রচণ্ড চিৎকার, চেঁচামেচি করেছি । হাত দিয়ে দেয়ালে আঘাত করেছি , বিছানা তুলে আছাড় দিতে চেয়েছি । যদিও সেটি করতে পারিনি কারণ বিছানাটি এতো মজবুদ ও ভারী যে আমার মতো একশ লোক ও সেটা নড়াতে পারবে কিনা সন্দেহ আছে । আমার শত চিৎকার, হাউকাউ, চেঁচামেচিতেও কেউ এগিয়ে আসেনি কিংবা আমার কোন প্রশ্নের জবাব দেয়নি । চারপাশের পরিবেশ একই রকম নি:শব্দ,নিঝুম । জানালা দিয়ে দৃষ্টিতে পরা বস্তুগুলো ছাড়া কোথাও প্রাণের কোন অস্তিত্ব নেই। দৃশ্যপট সব একই রকম ।স্থির, নিশ্চল ও প্রাণহীন। কোন পরিবর্তন নেই ।

মানুষ হচ্ছে অভ্যাসের দাস । আমিও এর ব্যতিক্রম নই । তাই বাধ্য হয়েই ধীরে ধীরে মেনে নিয়েছি বিষয়টা । খাপ খাইয়ে নিতে চেষ্টা করেছি পরিবেশ ও পরিস্থিতির সাথে । নিজেকে বুঝতে চেষ্টা করেছি যে কোন কারণেই হোক একটি নিশ্চিত পরিণতির দিকে এগিয়ে যাচ্ছি । ধৈর্যের সাথে তার জন্য অপেক্ষা করা ছাড়া আমার আর কিছুই করার নেই। সময় হলে সব প্রশ্নের জবার এমনিতেই সামনে চলে আসবে । এ ক'দিনে অবশ্য সেই ধৈর্যটা তৈরি হয়েছে । এখন আর আগের মতো অস্থির লাগছে না । ঠাণ্ডা মাথায় চিন্তা করতে পারছি । সব কিছুর যেমন শেষ আছে , ঠিক তেমনি এ অবস্থাটিরও এক সময় পরিসমাপ্তি ঘটবে । শুধু প্রয়োজন ধৈর্য আর মাথা ঠাণ্ডা রাখা ।

জানালা দিয়ে যতদূর দৃষ্টি যায় চারপাশে ছোট বড় নানা আকৃতির অসংখ্য পাথর ভেসে বেড়াচ্ছে । কোন কোন'টা একেবারে জানালার গা ছুঁয়ে যাচ্ছে । একবার সংঘর্ষ হলে যে কোন সময় ভয়াবহ কিছু একটা ঘটে যেতে পারে । দূরে, বহুদূরে নিকষ কালো অন্ধকারগুলোকে কৃষ্ণগহ্বর বলে মনে হচ্ছে । ওগুলোর পাশ দিয়ে যাবার সময় ষ্টিফেন হকিং এর কথা মনে হচ্ছে । হুইল চেয়ারে বসে বসে ভদ্রলোক পৃথিবীতে থেকে লাখ লাখ মাইল দূরে এই বস্তুগুলোকে নিয়ে কতো কিছুই না বলে গেছেন । আমার মতো সাধারণ মানুষ সে সবের আগা মাথা কিছু না বুঝলেও বৈজ্ঞানিক মহলে যে খুব হইচই ফেলে দিয়েছিলো সেটা পত্রপত্রিকার মাধ্যমে সারা বিশ্বের মানুষ জেনে গিয়েছিলো । সে ব্ল্যাক হোল বা কৃষ্ণগহ্বর আমার দৃষ্টি সীমার মধ্যে । এটা ভাবা যায় ? বেশ কয়েকবার মনে হয়েছে এটা স্বপ্ন নয় তো ? যতবার এ কথা মনে এসেছে ইস্পাতের দেয়ালে আঘাত করে বিছানায় বসে নিশ্চিত হয়েছি না , এটা স্বপ্ন নয় বাস্তব ।

মাঝে মাঝে উল্কাপিণ্ড আর ছায়াপথের ভেতর দিয়ে যাচ্ছি । রোদের আলোয় সেগুলোর ভেতরে থাকা বস্তুগুলো হীরে,জহরতের মতো চকচক করছে । সে এক অপূর্ব দৃশ্য । এতো বাহারি রং আগে কখনো দেখিনি । সৃষ্টির এক অপার বিস্ময় । এমন দৃশ্য শুধু সিনেমাতেই দেখেছি । কিন্তু বাস্তব্যে এমন ঘটনা যে, আমার সাথে ঘটবে তা কস্মিনকালেও ভাবিনি।

এখন আর বুঝতে বাকি নেই, আমি কোন স্পেস শিপ বা নভোযানে বন্ধী হয়ে আছি ।
ব্যক্তি জীবনে আমি কোন এস্ট্রোনট বা নভোচারী নই যে, স্পেস শিপে করে মহাশূন্যে মিশনে যাবো । ছাপোষা, নিরীহ গোবেচারা টাইপের একজন ইনস্যুরেন্স কর্মী আমি। নিজের জীবনের নানান বিষয় নিয়ে এমনতেই যন্ত্রণায় জর্জরিত । মাস শেষে যা বেতন পাই তা দিয়ে কোন রকম জীবন টেনে নিয়ে যাচ্ছি। সেই আমার এমন একটি স্পেস শিপে বন্ধী হয়ে অজানার উদ্দেশ্যে যাত্রা বিষয়টা যে খুব স্বাভাবিক নয় সেটা পাগলেও বুঝতে পারবে । বন্ধী শব্দটা ব্যবহার করাও ঠিক হচ্ছে কিনা সেটা ও বলতে পারবো না, কেননা, বন্দী কিংবা মুক্ত নিজের প্রকৃত অবস্থা সম্পর্কে এখনো আমি কিছুই জানি না ।

কোথায় যাচ্ছি, কেন যাচ্ছি সেটাও জানা নেই। যারা আমাকে নিয়ে যাচ্ছে তাদের উদ্দেশ্যে ই বা কি সেটাও অজানা। যতদূর মনে পরে, বিকেল বেলা বাড়ির ছাদে গাছে পানি দেবার জন্য উঠেছিলাম । হঠাৎ তীব্র একটা আলো এসে চোখ ধাঁধিয়ে দিলো । ব্যস ! এরপর আর কিছু মনে নেই । জ্ঞান ফেরার পরে নিজেকে এ ঘরটাতে আবিষ্কার করেছি । সেই থেকে একা । খুব মৃদু নভোযান বা স্পেস শিপের ইঞ্জিনের শব্দ ছাড়া জীবনের আর কোন অনুভূতি নেই । এ শব্দটা শুনতে পাচ্ছি বলেই মনে হচ্ছে, এখনো বেঁচে আছি।

নিজেকে বন্ধী ভাবার অবশ্য কারণ আছে, ব্যাপারটা বিশ্লেষণ করলে সহজেই নিজেকে বন্দী বলে ভাবা যায় । এক নাম্বার কারণটা হচ্ছে, আমি রুম থেকে বের হতে পারছি না । বা আমাকে রুম হতে বের হতে দেওয়া হচ্ছে না । অবশ্য সেটির পক্ষেও যথেষ্ট যুক্তি আছে । হয়তো নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে আমাকে বের হতে দেওয়া হচ্ছে না । কিন্তু কাউকে বন্ধী রাখা হলে কেন তাকে বন্ধী রাখা হয়ে সে বিষটা বন্দী থাকা ব্যক্তির জানার অধিকার রয়েছে । সেটা আমাকে জানানো হলে এতো আকাশ পাতাল ভাবনার সাগরে হাবুডুবু খেতে হতো না । শিপের ক্যাপেন্টের সাথে দেখা হলে বিষটা তাকে জানাবো । আবার এমনও হতে পারে আমি কোন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি নই বলে, শিপের ক্যাপ্টেন বিষয়টা আমাকে জানানোর প্রয়োজন মনে করছে না।

নিজেকে বন্দী ভাবার, দুই নাম্বার কারণটি হচ্ছে, আমি স্পেসের এমন অনেক মিশনের গল্প শুনেছি, সেগুলোতে নিরীহ মানুষদেরকে শুধুমাত্র গিনিপিগের মতো ব্যবহার করার জন্য ধরে নিয়ে যাওয়া হতো । শুরুতে এ কাজের জন্য কেবলমাত্র ভবঘুরেদের ব্যবহার করা হতো । ভবঘুরেদের জন্য কোন আইনি জটিলতায় পরতে হতো না । ৬০০ কোটি মানুষের মধ্যে সহায় সম্বলহীন, ঘরবাড়ি ছাড়া, আত্মীয় স্বজন বন্ধু বিহীন দু' একজন মানুষে হারিয়ে গেলে কে ই বা তার খোজ করবে । কিন্তু অতিরিক্ত মাদক ব্যবহারের ফলে তাদের ফুসফুস, ল্যাং ক্ষতিগ্রস্ত থাকায় এ তালিকা থেকে বাদ তাদের দেওয়া হয়েছে । অবশ্য এমনটাও শোনা যায় যে, অন্যে গ্রহে বসবাস করা এলিয়েন'রাও নাকি পৃথিবী থেকে মানুষ অপহরণ করে নিয়ে যায় তাদের উপর গবেষণা করার জন্য ।

এমন সম্ভাবনার কথাও আপাতত উড়িয়ে দিতে পারছি না । হতে পারে অন্যকোন গ্রহের এলিয়েন'রাই আমাকে অপহরণ করে নিয়ে যাচ্ছে । কেটে, চিড়ে, পরীক্ষা- নিরীক্ষা শেষে আবার সেলাই টেলাই করে ফিরিয়ে দিয়ে যাবে পৃথিবীতে । চোখে সিসি ক্যামেরার মতো লেন্স লাগিয়ে দেবে। হয়তো আমার চোখে তারা পৃথিবীর উপর নজরদারী করবে ।


চলবে ...........
সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই জুলাই, ২০২২ রাত ১২:১৩
৭টি মন্তব্য ৭টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আপনি কি পথখাবার খান? তাহলে এই লেখাটি আপনার জন্য

লিখেছেন মিশু মিলন, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১০:৩৪

আগে যখন মাঝে মাঝে বিকেল-সন্ধ্যায় বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দিতাম, তখন খাবার নিয়ে আমার জন্য ওরা বেশ বিড়ম্বনায় পড়ত। আমি পথখাবার খাই না। ফলে সোরওয়ার্দী উদ্যানে আড্ডা দিতে দিতে ক্ষিধে পেলে... ...বাকিটুকু পড়ুন

কষ্ট থেকে আত্মরক্ষা করতে চাই

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৯



দেহটা মনের সাথে দৌড়ে পারে না
মন উড়ে চলে যায় বহু দূর স্থানে
ক্লান্ত দেহ পড়ে থাকে বিশ্রামে
একরাশ হতাশায় মন দেহে ফিরে।

সময়ের চাকা ঘুরতে থাকে অবিরত
কি অর্জন হলো হিসাব... ...বাকিটুকু পড়ুন

রম্য : মদ্যপান !

লিখেছেন গেছো দাদা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৫৩

প্রখ্যাত শায়র মীর্জা গালিব একদিন তাঁর বোতল নিয়ে মসজিদে বসে মদ্যপান করছিলেন। বেশ মৌতাতে রয়েছেন তিনি। এদিকে মুসল্লিদের নজরে পড়েছে এই ঘটনা। তখন মুসল্লীরা রে রে করে এসে তাকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

= নিরস জীবনের প্রতিচ্ছবি=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৪১



এখন সময় নেই আর ভালোবাসার
ব্যস্ততার ঘাড়ে পা ঝুলিয়ে নিথর বসেছি,
চাইলেও ফেরত আসা যাবে না এখানে
সময় অল্প, গুছাতে হবে জমে যাওয়া কাজ।

বাতাসে সময় কুঁড়িয়েছি মুঠো ভরে
অবসরের বুকে শুয়ে বসে... ...বাকিটুকু পড়ুন

Instrumentation & Control (INC) সাবজেক্ট বাংলাদেশে নেই

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৫




শিক্ষা ব্যবস্থার মান যে বাংলাদেশে এক্কেবারেই খারাপ তা বলার কোনো সুযোগ নেই। সারাদিন শিক্ষার মান নিয়ে চেঁচামেচি করলেও বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরাই বিশ্বের অনেক উন্নত দেশে সার্ভিস দিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×