somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

সাখাওয়াত হোসেন  বাবন
ব্লগিং শুরু করি প্রথম আলো ব্লগে "আমার কবিতা নামে" আমি ব্লগিং করি মূলত নিজের ভেতরে জেগে উঠা ব্যর্থতা গুলোকে ঢেকে রাখার জন্য । দুনীতিবাজ, হারামখোর ও ধর্ম ব্যবসায়িদের অপছন্দ করি ।

বুয়েট ছাত্র ফারদিনকে হত্যা করলো কারা ?

২০ শে নভেম্বর, ২০২২ বিকাল ৩:০০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ছাত্র ফারদিন হত্যাকাণ্ডের বেশ কিছু দিন পার হয়ে গেছে । কিন্তু এখন পর্যন্ত হত্যাকাণ্ডের জট খুলতে পারেনি আইন শৃঙ্খলা বাহিনী । তবে দুই সংস্থা যে তাদের সাধ্যমতো চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে সেটা মিডিয়ার কল্যাণে ইতি মধ্যে আমরা জানতে পারছি । দুটো সংস্থাই তাদের তদন্তের সর্ব শেষ অগ্রগতি খয়,খবর,ভিডিও ফুটেজ প্রকাশ করে আমাদের সব কিছু জানবার সুযোগ করে দিয়েছে ।

ফারদিন হত্যাকাণ্ডের ভিডিও ফুটেজ দেখে , খবরগুলো বিশ্লেষণ করে আমার একটি নিজস্ব একটি অবজারেভেশন জন্মেছে । সেটাই সকলের সঙ্গে শেয়ার করার জন্য এই ব্লগটা লিখতে ইচ্ছে হলো ।

দুই প্রশ্ন মাথায় নিয়ে আমরা ফারদিন হত্যাকান্ড রহস্যের জটের পেছনে ছুটতে পারি -

"প্রথম প্রশ্ন হচ্ছে, ফারদিন কে হত্যা করলো কারা ?
দ্বিতীয় প্রশ্ন হচ্ছে, ফারদিন কে কেন হত্যা করা হলো ? "

এ দুটি হচ্ছে যে কোন হত্যাকাণ্ডের প্রধান জিজ্ঞাসা । প্রশ্ন দুটির উত্তর পাওয়া গেলে । কোন হত্যাকাণ্ড সম্পর্কেই আর কোন প্রশ্ন থাকে না । সকল অংকের হিসের মিলে যায় পানির মতো ।

আমরা জানি আরেক মেধাবী ছাত্র আবরার হত্যাকাণ্ডের পর বুয়েটে ছাত্র রাজনীতি এক প্রকার বন্ধ হয়ে গেছে । তাই এ হত্যাকাণ্ডটি যে ছাত্র রাজনৈতিক কারণে সংঘঠিত হয়েছে , সেটা খুব জোর দিয়ে বলা যাচ্ছে না । তবে একেবারে উড়িয়ে ও দেওয়া যাচ্ছে না । শুধু শুধু কোন কারণে ছাড়া তো আর একটি ছেলেকে হত্যা করা হবে না । যদি সাধারণ হত্যাকাণ্ড হতো তাহলে খুনিরা এতোদিনে ধরা পরে যেতো । কিন্তু খুনের ধরণ , নিরাপদে লাশ নদীতে নিয়ে গিয়ে ফেলে দেওয়া দেখে মনে হচ্ছে, এর পেছনে এমন কোন চক্র রয়েছে তারা শুধু শক্তি শালী নয় ক্ষমতাবান ও । এবং চাইলে তারা যে কাউকে, যখন তখন খুন করে লাশ গায়েব করে দিতে পারে ।

র‍্যাবের ভাষ্য থেকে আমরা জেনেছি, ফারদিন ওইদিন সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত তার বান্ধবির সাথে ধানমন্ডি,টিএসসি, রামপুরা,জনসন রোড, কেরানীগঞ্জ , গুলিস্তান , জুরাইন, যাত্রাবাড়ী হয়ে নারায়ণগঞ্জের চাঁনপারা পর্যন্ত গিয়ে মাদক ব্যবসায়ীদের হাতে হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন ।

মোবাইলের ট্যাকিং সফটওয়ার ব্যবহার করে ফারদিনের মুভমেন্ট এর তথ্য জানা হয়েছে , তাই ফারদিন এ'র মুভমেন্ট সর্ম্পকে কারো মনে প্রশ্ন জাগার কথা নয় । তবে কেউ যদি, ফারদিনের মোবাইল সেটটি নিয়ে এসব জায়গায় ঘুরাঘুরি করে তাহলে সেটা ভিডিও বা সিসি ক্যামেরার ফুটেজ ছাড়া নিশ্চিত হওয়া যাবে না ।

"এখন আমার প্রশ্ন হচ্ছে,ফারদিনের মোবাইল ট্রাকিং করা গেলে ওই সময় ফারদিনের মোবাইলের
আশেপাশে থাকা মোবাইল গুলি কি ট্রাকিং করা যায় নাই? গেলে ই তো খুনিদের ধরা পরে যাবার কথা। "


কিন্তু সি সি ক্যামেরার ফুটেছে আমরা শুধু ফারদিনকে রামপুরা ও য়াত্রবাড়িতে হাটতে দেখেছি । এর মধ্যে রামপুরার ফুটেছে রিকশায় বসা ফারদিনকে চেনা গেলেও যাত্রবাড়ীর ফুটেজে শারীরিক গঠন দেখে বুঝা গেছে ওটা ফারদিন হতে পারে । তাহলে প্রশ্ন হচ্ছে, অন্য জায়গার ফুটেজগুলো নেই কেন ? র‍্যাবের তদন্ত আবার ডিবি পুলিশ ডিনাই করেছে , তাদের ভাষ্য ফারদিন চানপাড়ায় নিহত হয় নাই । কারণ তাকে যখন যাত্রাবাড়ীতে দেখা গেছে সেখান থেকে হত্যাকান্ড পর্যন্ত চানপাড়ায় পৌছানো সম্ভব নয় ।

আমার অবজারভেশন হচ্ছে, যে ছেলেটির আগামীকাল পরীক্ষা সে নিশ্চয় সারারাত ধরে অজানা,অচেনা জায়গায় অকারণে ঘুরাঘুরি করবে না । বান্ধবি'কে রামপুরা নামিয়ে দিয়ে আসার পর পর তার হলে চলে আসার কথা , কিন্তু তা না করে উনি গেলেন শহরের আরেক মাথা কেরানিগন্জে । যা ফারদিনের চরিত্রের সাথে একেবারে যায় না ।

আমার কাছে মনে হচ্ছে, "ফারদিনকে রামপুরা থেকেই কিডনাপ করা হয়ে ছিলো । এবং তারা তাকে হত্যা করে লাশ গুম করার জন্যই এখানে ওখানে ঘুরে বেড়িয়েছে, গাড়িতেই মারধর করেছে । এবং পরিশেষে খুন করার সুযোগ না পেয়ে অথবা ফারদিন তাদের সাথে যে কোন বিষয়ে এক মত হবার করণে তাকে জুরাইন হয়ে যাত্রাবাড়ি নিয়ে গিয়ে ছেড়ে দিয়েছে । সে কারণেই ফারদিন'কে সিসি টিভি ফুটেজে রাত দুটোর সময় যাত্রাবাড়ীতে হাটতে দেখা গেছে ।

ফারদিন'কে ছেড়ে দেবার পর খুনিদের মনে সন্কা জাগে ফারদিন হয়তো ফিরে গিয়ে তাদের পরিচয় ফাঁস করে দিবে । সেই ভয়ে তাকে আবার গাড়িতে তুলে নিয়ে হত্যা করে নিবিঘ্নে লাশ নদীতে ।ফেলে দিয়েছে । এখান প্রশ্ন জাগে এরা কারা ? কারা ফারদিনকে তুলে নিয়ে গেলো ? তুলে নিয়েছে এটা আমার অনুমান । আর অনুমানটি করেছি , সেই কারণে, এখানে একটু ভাবার বিষয় আছে , "সাধারণ কোন ছাত্রের পক্ষে গভীর রাত্রিরে এভাবে শহর ময় ঘুরঘুর করা সম্ভব নয় । "

নিশ্চয় যারা তাকে ধরে নিয়ে গিয়েছিল তারা সকলের সন্দেহের উর্ধ্বে এবং শহরময় তারা ঘুরে বেড়ালেও তাদের কেই গ্রেফতার করবে না । প্রশ্ন হচ্ছে , এরা কারা ? এক আইনশৃঙ্‌খলা বাহিনী আর রাজনৈতিক ক্ষমতা ছাড়া অন্য কারো এমন ক্ষমতা নেই।

হয়তো বা আইনশৃঙ্‌খলা বাহিনীর পোষাক ব্যবহার করে অন্যকেউ এমন কাজ করেছে । এমনটা তো ঢাকা শহরে অহরহ ঘটছে । তেমনটা না হলে বাকি রইলো রাজনৈতিক অপ শক্তি ?

কিন্তু ইডেন, বুয়েটের ঘটনায় তারা তো চাপে আছে , অহেতুক শূণ্য থেকে কোন খুন, খারাবির মধ্যে গিয়ে কেউ ই অহেতুক বির্তকিত হতে চাইবে না । তাহলে কি এমন কোন তৃতীয় পক্ষ রয়েছে যারা ফারদিনকে হত্যা করে নিবিঘ্নে লাশ নদীতে নিয়ে ফেলে দেবার মতো সাহস রাখে ? যদি তাই হয় তাহলে ধরে নিতে হবে, তাদের সকল ধরনের ক্ষমতাই রয়েছে ।

ফারদিন হত্যাকাণ্ডের পেছনে যারাই রয়েছে, তারা যতো শক্তিশালী হোক না কেন, আশা করি তারা একদিন ধরা পরবে । কেউ আইনের উর্ধ্বধে নয় । এভাবে মেধাবী ছাত্রদের হত্যা করে জাতীকে মেধা শূন্য করে কেউ পার পেয়ে যেতে পারে না । ফারদিনের পিতা, মাতা ও শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানাবার ভাষা আমার নেই । তবে বিশ্বাস করি সকল হত্যাকাণ্ডের বিচার একদিন হবে ।
সর্বশেষ এডিট : ২০ শে নভেম্বর, ২০২২ রাত ৯:৩৫
৮টি মন্তব্য ৭টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আগুন যখন প্রশ্নকে পোড়াতে আসে

লিখেছেন এস.এম. আজাদ রহমান, ২২ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:৩২

আগুন যখন প্রশ্নকে পোড়াতে আসে[

স্বাধীন সাংবাদিকতার কণ্ঠরোধে রাষ্ট্রীয় ব্যর্থতা, মব-রাজনীতি ও এক ভয়ংকর নীরবতার ইতিহাস
চরম স্বৈরশাসন বা ফ্যাসিবাদী রাষ্ট্রেও সাধারণত সংবাদমাধ্যমের কার্যালয়ে আগুন দেওয়ার সাহস কেউ করে না। কারণ ক্ষমতা... ...বাকিটুকু পড়ুন

=হিংসা যে পুষো মনে=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২২ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:৫৮


হাদী হাদী করে সবাই- ভালোবাসে হাদীরে,
হিংসায় পুড়ো - কোন গাধা গাধিরে,
জ্বলে পুড়ে ছাই হও, বল হাদী কেডা রে,
হাদী ছিল যোদ্ধা, সাহসী বেডা রে।

কত কও বদনাম, হাদী নাকি জঙ্গি,
ভেংচিয়ে রাগ মুখে,... ...বাকিটুকু পড়ুন

গণমাধ্যম আক্রমণ: হাটে হাঁড়ি ভেঙে দিলেন নূরুল কবীর ও নাহিদ ইসলাম !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ২৩ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:০৫


জুলাই গণঅভ্যুত্থানের রক্তস্নাত পথ পেরিয়ে আমরা যে নতুন বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখেছিলাম, সাম্প্রতিক মব ভায়োলেন্স এবং গণমাধ্যমের ওপর আক্রমণ সেই স্বপ্নকে এক গভীর সংকটের মুখে দাঁড় করিয়ে দিয়েছে। নিউ এজ... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিএনপিকেই নির্ধারণ করতে হবে তারা কোন পথে হাটবে?

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ২৩ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:০৫




অতি সাম্প্রতিক সময়ে তারেক রহমানের বক্তব্য ও বিএনপির অন্যান্য নেতাদের বক্তব্যের মধ্যে ইদানীং আওয়ামীসুরের অনুরণন পরিলক্ষিত হচ্ছে। বিএনপি এখন জামাতের মধ্যে ৭১ এর অপকর্ম খুঁজে পাচ্ছে! বিএনপি যখন জোট... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতীয় আগ্রাসনবিরোধী বিপ্লবীর মৃত্যু নেই

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ২৩ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:৩৭



শরিফ ওসমান হাদি। তার হাদির অবশ্য মৃত্যুভয় ছিল না। তিনি বিভিন্ন সভা-সমাবেশ, আলোচনা ও সাক্ষাৎকারে বক্তব্য দিতে গিয়ে তিনি অনেকবার তার অস্বাভাবিক মৃত্যুর কথা বলেছেন। আওয়ামী ফ্যাসিবাদ ও ভারতবিরোধী... ...বাকিটুকু পড়ুন

×