গত ০১ লা নভেম্বর, ২০২২ সালে ব্লগ লিখে ছিলাম , যার হেড লাইল ছিলো , মূল্য বাড়িয়ে অর্থ পাচার করা হয় আবার কর ফাকি দিতে মূল্য কমিয়ে আমদানি করা হয়! সবই চলে উন্নয়ন বাবার আমলে !
এর ও আগে লিখেছিলাম, মানুষ এখন আর ব্যাংকে টাকা রাখবে না, বাধ্য হয়ে খরচ করে ফেলবে, নয়তো মাটির ব্যাংকে জমা করবে
যারা পড়েন নাই , ইচ্ছে হলে পড়তে পারেন । লেখাগুলোর মূল উদ্দেশ্য ছিলো , বাংলাদেশের অর্থনীতি ও ব্যাংকিং সেক্টর নিয়ে যারা ছিনিমিনি খেলছে তাদের শিরদাঁড়ায় আঘাত করা । সরকারকে ম্যাসেজ দেওয়া যে, আমাদের অর্থনীতি ভুল পথে হাঁটছে । একজন সচেতন নাগরিক ও ব্লগার হিসাবে এর বেশি কিছু করার অধিকার বা ক্ষেমতা আমাদের নেই ।
উক্ত ব্লগে - উপদেশ হিসেবে লিখেছিলাম "এখনো সময় আছে , ব্যাংকিং খাতে সুদের মাত্রা পুন:নির্ধারণ করা হোক । সঞ্চয়পত্র বিনা শর্তে বিক্রি করা হোক । সঞ্চয়পত্র ক্রয়ের টাকা বৈধ ঘোষুন করা হোক । তাহলে দেখবেন, টাকা উপচে পরছে । অর্থ পাচার কমে আসবে। ঋণের গ্রহণের মতো আইএমএফ ও বেশি ভালো না । ঋণ গ্রহণ করলে তা পরিশোধ করতে হবে । রিজার্ভ থেকে ৭.২ মিলিয়ন গায়েবের কথা তারাই প্রকাশ করেছিলো । সময় থাকতে সঠিক সিদ্ধান্ত নিন । তা না হলে . আইএমএফ এর শর্তের চাপে দেশের জনগণ ভর্তা হয়ে যাবে।"
গতকাল বাংলাদেশ ব্যাংক একই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে । অর্থাৎ বেধে দেওয়া সুদের হার থেকে বের হয়ে আসতে বাধ্য হয়েছে । আবারো বলি , "যে কোন দেশের উন্নয়ন নির্ভর করে , সে দেশের জনগণের সঞ্চয় প্রবণতার উপর । " অথচ গত ১০ বছর পরিকল্পিত ভাবে, ভুল নীতি চাপিয়ে দিয়ে জনগণের সঞ্চয় প্রবনতাকে ভেঙ্গে ফেলা হয়েছে । ফলে পঙ্গু হয়ে গেছে দেশের অর্থনীতি । প্রবাসীদের পাঠানো রেমিটেন্সের উপর ভর করে অক্সিজেন মাস্ক লাগিয়ে কোন রকম লাইফ সাপোর্টে টিকে আছে দেশের বর্তমান অর্থনীতি । দেশের বর্তমান প্রকৃত রিজাভের পরিমাণ আসলেই কতো তা কেউ জানে না । তবে, ব্যাংকিং সেক্টরে নতুন সিদ্ধান্তের ফলে, অবস্থার উন্নতি হবে বলে আশা করি । সিদ্ধান্তটি দেরিতে হলে ও ফলদায়ক হবে ।
অর্থনীতি না বুঝে ও অর্থনৈতিক বোদ্ধা সেজে যারা নিজেদের স্বার্থে ইচ্ছে মতো দেশের ব্যাংকিং সেক্টরের ১২ টা বাজিয়ে দিয়ে দেশ ও জনগণকে পথে বসিয়ে দিয়েছে । তাদের মুখোশ খুলে দেওয়ার প্রয়োজন নেই এরা সবাই পরিচিত মুখ । সবাই তারা সবাই সুবিধা ভোগী । অর্থনীতি না বুঝে ও সরকারকে ভুলে বুঝিয়ে ভুল নীতি গ্রহণ করার ফলে সব চেয়ে বেশি ক্ষতি গ্রস্ত হয়েছে দেশের জনগণ ও দেশের অর্থনীতি । অন্যদিকে পাচার হওয়া অর্থ দিয়ে কানাডা , ইউরোপ,যুক্তরাজ্যে , দুবাইয়ে বাড়ি গাড়ি কিনে আয়েসি জীবন সাজিয়ে নিয়েছে একটা শ্রেনী।
অন্যদিকে দেশে মুদ্রাস্ফীতি বৃদ্ধির সাথে সাথে দেশের জনগণ নেমে গেছেন দরিদ্র সীমার শেষ পর্যায়ে । এ দায় কাদের ? এ দায় কারা নিবে ? "বলাৎকারের পর বিয়ে কোন শাস্তি নয় বরং পুরস্কার " যাদের ভুল সিদ্ধান্তের ফলে দেশের হাজার হাজার কোটি টাকা পাচার হয়ে গেলো , তারা কি শাস্তির আওতায় আসবে না ? নাকি পলিসি মেকারেরা সব কিছুর উর্ধ্বে ? আমরা অর্থনীতিবিদ না হয়েও যদি , রাষ্ট্রের অর্থনৈতিক উন্নয়নের সূত্রটা বুঝতে পারি তাহলে প্রশ্ন হচ্ছে, তারা কেন বুঝেন নাই ? আজ ১০ বছর পর কেন দেশের ব্যাংকিং সুদ নীতি পরিবর্তন করতে হলো ?