দান,খয়রাত,ছদগা,জাকাত,মানত,ভিক্ষা এসব ধর্মীয় আচার বা কর্ম। যার ফলে,আত্মীক সন্তুষ্টি বা তৃপ্তি মিলে৷ সেই সাথে পরকালে মুক্তির সম্ভাবনা জাগে। তাই দানের সাথে ধর্মের সম্পর্ক অত্যন্ত গভীর।
বিশ্বের প্রতিটি ধর্মই দানের ব্যাপারে বিশেষ ভাবে উৎসাহ দিয়েছে। দানের মূল উদ্দেশ্য স্রষ্টার সন্তুষ্টি অর্জন ও কৃতকর্মের জন্য অনুতপ্ত হয়ে ক্ষমা প্রার্থনা পথকে সহজ করা। কিন্তু ঈশ্বর বা স্রষ্টার সন্তুষ্টির আশায় দান করতে গিয়ে পাপ করে ফেলছি কিনা সেই হুশ থাকতে হবে৷ কেননা বেহুশ বা পাতালের জন্য দানের প্রশ্ন নেই।
মুসলিমদের জন্য "দান করা ও ইবাদত কবুলের সর্ব প্রথম শর্ত হচ্ছে,"হালার আয় ও রুজি।" অর্থাত হালাল আয় না হলে দান ও ইবাদত কবুল হয় না। তাই তওবা ব্যতিরেকে হারামখোরদের দান কিংবা ইবাদতে কোন ফায়দা নেই। পবিত্র কুরআনে দানের কথা উল্লেখ করা হয়েছে ৮২ বার। যাকাতের কথা এসেছে ৩২ বার। কোন কোন খাতে কাকে দান করা যাবে তা কুরআনে আল্লাহ পরিস্কার ভাবে উল্লেখ করেছেন৷
রাসুল স: বলেছেন,"তোমরা এমন ভাবে দান করো যেনো এক হাতের খবর অন্য হাত না জানে৷"এর অর্থ হচ্ছে,গোপনে দান করা উত্তম। তিনি দানের জন্য উৎসাহ দেবার জন্য আরো বলেছে,"উপরের হাত নীচের হাত অপেক্ষা উত্তম। "
কিন্তু এর অর্থ এই নয় যে, গোপন দান করতে গিয়ে এমন কোন প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তির হাতে অন্যের হক তুলে দিবেন যারা যথাযথ ভাবে সেটা পৌছে দিবে না। মনে রাখবেন দাতার দানের অর্থ বিতরণে মধ্য সত্ব ভোগীরা যদি দানের অর্থ থেকে নিজেদের বেতন, ভাতা নেয় সেটা হবে হারাম। এবং আপনি হবেন সেই পাপের অংশিদার।
দানের ২য় শর্ত হচ্ছে,"কোথায় দান করলেন, সেটা কিভাবে খরচ করা হবে তার পূর্ণ তদারকি করা।" অর্থাৎ নিজে দাঁড়িয়ে থেকে গ্রহিতার হাতে দানের অর্থ তুলে দেওয়া হচ্ছে সর্ব উত্তম কাজ।
আপনি বিল গেইটস না যে, দানের পর সেটা কই যাচ্ছে, কত ভুতে ভাগ বসাচ্ছে, সেই খোজ নেওয়া সময় আপনার নাই। যদি একান্তই নিজে খোজ নিতে না পারেন তাহলে লোক দিয়ে খোজ নিতে হবে।
যদিও দানের উদ্দেশ্যে আল্লাহর সন্তুটি কিন্তু অপাত্রে দানের পরিনাম ভয়াবহ। উদাহরণ স্বরুপ বলি, আপনি যদি বেশ্যা পল্লির উন্নয়নে দান করেন তবে সেটা হবে পাপ কিন্তু আপনি যদি বেশ্যা পল্লিতে বেড়ে উঠা সুবিধা বঞ্চিত,অবহেলিত, অসহায় শিশুদের কল্যাণে তাদের সেই অবস্থা থেকে মুক্তির উদ্দেশ্যে তাদের লেখা পড়া,খাওয়া দাওয়ার সুযোগ করে দেওয়ার জন্য দান করেন সেটা হবে পূণ্য। এজন্য যদি আপনাকে বেশ্যাপল্লিতেও যেতে হয় যে জন্য পাপ হবে না৷ বর্তমানে দান গ্রহনের নামে চলছে প্রতারণা, বাটপারি। কারো দানের টাকায় জায়গা জমি কেনা যাবে না। মধ্যস্বত্ব ভোগী কেউ কিনলে দানের টাকায় জায়গা জমি কিনলে তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া যাবে।
আমার লেখাগুলো অর্থ সহযে সবার মস্তিষ্কে ঢুকবে না। অন্তরে আলো থাকলেই কেবল বুঝতে পারবেন। তাই এসব লেখা সবার জন্য নয়৷ না বুঝলে এড়িয়ে যাওয়া উত্তম।
সর্বশেষ এডিট : ২০ শে এপ্রিল, ২০২৩ রাত ১২:১১