।
মেঘের গুরু গুরু ছিল না। শ্রাবণের দম বন্ধ করা গরমে নিশ্চল প্রকৃতি। কালো মেঘে ঢাকা আকাশ। সকালে ওঠেই দেখেছি । তারপর একটা হালকা ঘুম দিয়ে নাস্তা সারলাম । বেলা গড়িয়ে যায়। বৃষ্টির দেখা নেই। তারপর সে আসলো। সমস্ত প্রকৃতিকে ছুঁয়ে - বাড়ি, রাস্তা ভিজিয়ে আমার ছোট্ট বারান্দায়। বারান্দার লোহার গ্রিলের ভিতর দিয়ে মোবাইলে কিছু ছবি তুলি। কিন্তু বৃষ্টির ধারাপতন, শব্দ তো ছবিতে নেই - আছে আমার হৃদয়ে। সেই হৃদয়ে কাছে গিয়ে দেখি, সে ফিরে গেছে একটা ছোট্ট মাঠে। যেখানে বৃষ্টি হলেই কলোনীর ছোট্টবেলার বন্ধুরা নেমে পড়তাম ফুটবল নিয়ে। ঘড়ির কাঁটা তখন থেমে যেত। স্লাইডিং করে বল দখলের সেই মজার খেলার কথা আজ শুধুই স্মৃতি। ইচ্ছে করে ফিরে যাই সেই পানি থই থই মাঠে। খেলার সাথীদের নিয়ে ভিজি ঝুম বৃষ্টিতে।
.
মন চাইলেও সবাই আর এখন একত্র হতে পারবো না। মামুন- রতন ভাই বিদেশে, খোকন ঢাকার বাইরে, ফরিয়াদ-মুর্শেদ সাভারে, বল্টু মিরপুরে, কচি-সজল কলাবাগানে, অংশু উত্তরায়, অলিভ বিদেশে, সবার প্রিয় খুশু ভাই সাভারে। সবাইকে একত্র করে বৃষ্টিতে ভেজা, সত্যি খুব কঠিন । আর ফরহাদি-টিটু ভাইকে তো কোন দিন আর ডেকেও পাব না। এমন দূরদেশে ওরা দুজন পাড়ি জমিয়েছে, কোন দিনও আর ফিরবে না। ফরহাদির সাথে কত স্মৃতি। টিটু ভাইয়ের চারিদিকে গোল হয়ে আমরা বসতাম। দস্যু বনহুর, দস্যু বাহরামের রোমাঞ্চকর সব গল্প গোগ্রাসে গিলতাম। তখনও ওইসব বই বাসায় পড়ার অনুমতি ছিল না। হলে গিয়ে সিনেমা দেখাও তখন স্বপ্নের। বিভিন্ন ইংরেজী একশনধর্মী ছবি টিটু ভাই হলে দেখে এসে আমাদের শোনাতো।
.
দিন চলে যায়। স্মৃতিরা যায় না। আরো বেশী করে মনে ভর করে। বিশেষ করে বৃষ্টিমুখর এইসব বাদলা দিনে। বাইরে বৃষ্টির শব্দ, হৃদয়ে চাপা কান্নার শব্দ।
.
মো. শামছুল ইসলাম
৪ আগস্ট ২০২০
সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা আগস্ট, ২০২০ বিকাল ৫:২৫