## পত্রিকায় কি খুঁজছেন?
রাশিফল?রাশিফলে কি খুঁজছেন? হঠাৎ কোন শনির দসা ভর করল কি না? এমন শান্ত শিষ্ট বউটা যে ঘরে ঢুকতেই কেমন ব্যতিব্যস্ত হয়ে যেত, কি বানিয়ে দেবে, কি গুছিয়ে দেবে,সারাদিনের খবরাখবর নিতো, মিষ্টি একখানা হাসি দিয়ে আপনার সারাদিনের ক্লান্তি ভুলিয়ে দিতো, কি চমৎকার এক কাপ চা বানিয়ে দিতো, তার দিন কে দিন একি অধোপতন! চা তো দূরে থাক একটু মুচকি হসিও দেয় না! সারাদিনের এত এত জমা কথা, শোনার মানুষ নাই। গাল ফুলিয়ে থাকে। নিশ্চয়ই শনি বৃহস্পতির কারসাজি।
সমস্যা গুরুতর। কিন্তু এতে শনি, বৃহস্পতি, রাহু, কেতুর কোন হাত নেই।
হাত আপনার। শুধু হাত না আপাদমস্তক আপনিই দায়ী। কিভাবে?
পত্রিকাখান হাত থেকে নামান। বলছি।
ঐ যে কি যেন বলছিলাম, অফিস থেকে আসলে, এটা সেটা আরও কত কী? তাইতো? তা সোনা চাঁদ আপনি যেন কি করেন,
অফিস থেকে এসে? সারাদিনের কাজের হিসাব নেন, ঘরের কোন কাজে কোন ত্রুটি আছে বের করেন, আত্মীয় স্বজনের সাথে সারা বছর তো দূরে থাক ঈদে চাঁদেও দেখা করতে দেন না।
না চাকরি করতে দেন, না হাত খরচ দেন। আপনার মা কে যে মেয়ে রাত দিন সেবা দিয়ে যাচ্ছে, সে মেয়ে বাপের বাড়িতে দুই দিনের জায়গায় তিন দিন থাকলে আপনি একদম রেগে মেগে অগ্নিশর্মা হয়ে যান। আপনি পরিবারের বড় ছেলে আপনার কাঁধে অনেক দায়িত্ব।খুব ভালো কথা। শপিং এ গেলে ভাগিনা ভাগিনি থেকে শুরু করে সবার জন্যে দেধারছে কেনেন। শুধু বউটার বেলায় আপনার পকেট ফুরিয়ে যায়।
আপনি এইসব ছেঁচরামি গুলি করে যান, কারণ দুইটা। আপনার বাপ দাদারা এইসব ছেঁচরামি করে গেছেন। আপনি একটা ভালো শিক্ষিত পরিবার থেকে আসেন নি যেখানে স্ত্রীকে তার মর্যাদা দেয়া হয়। আপনার অবচেতন মনে আপনার বাপ দাদারা একটা ভুল তথ্য রেখে গেছেন, যে এমন ছেঁচরামি করলে বউ কন্ট্রোলে থাকে। আরও বেশি বেশি সেবা দেয়।
কিন্তু দেখেন হচ্ছে তার বিপরীত।
মেয়েটার কোথাও কোন দূর্বলতা আছে।তা না হলে আপনার মতো বদহজমের বড়ি কে হজম করতে যায় কোন দুঃখে?
দূর্বলতা হোক আর যে করণেই হোক এখন এই যে অফিস থেকে এসে হাল্কা হাল্কা ডোজ পড়ছে। পরে যখন বউ তার নিজের দূর্বলতা বা যে কোন কারণে আপনার এইসব ছেঁচরামি সহ্য করছে তা যদি কাটিয়ে উঠতে পারে। একবার যদি স্বাবলম্বি হয়( দোয়া করি যাতে হয়) তখন কিন্তু কড়া ডোজ চলবে। অতএব, সময় থাকতে সাধু সাবধান।
## কি দেখছেন? শিউলি ফুলটা ফুটতে আর কয়দিন? ফুটলে কি করবেন? বসে বসে ঘ্রাণ নিবেন? নাকি ফুল তুলে পাশের বাড়ির ভাবিকে, ঐ যে দুই ঘর পরে যে থাকে, মোতালেব চাচাকে আরও নাম না জানা অমানুষদের দিবেন উপহার হিসেবে? যাদের কথার ভয়ে মেয়েকে বাড়ি ফিরিয়ে আনেন নি। দিনের পর দিন আপনার মেয়ে আপনাকে ফোন করে কেঁদেছে। বাবা আমাকে ফিরিয়ে নিয়ে যাও। ও অনেক মারে বলে কত হাজার বার কেঁদেছে। আপনি নির্বিকার থেকেছেন। মেয়েকে ীটমানিয়ে চলার পরামর্শ দিয়েছেন। ভয় পেতেন, মেয়ে ফেরত আসলে এলাকায় মুখ দেখাতে পারবেন না। অমুকে কি বলবে তমুকে কি বলবে ভেবে ভেবে মেয়েটাকে ঐ পাশানের হাত থেকে বাঁচান নি।
যাক বাবা মেয়েটা শেষমেশ মরলো। নিজেও বাঁচলো। আপনাকেও বাঁচিয়ে দিয়ে গেলো।আপনার তো খুশি হওয়ার কথা। খুশি না হয়ে এখন কাঁদছেন?কবরে শিউলি গাছ লাগিয়েছেন। কার জন্যে? মেয়ে শিউলি ফুল ভালোবাসতো বলে? মেয়ে তো জীবনটাকেও ভালোবাসতো। সুন্দর করে বাঁচতে চাইতো। কই তাকে তো তার জীবনটা উপহার দিলেন না?
অথচ আপনি চাইলেই মেয়েটার পাশে দাঁড়াতে পারতেন। বুক ফুলিয়ে বলতে পারতেন আর কেউ থাক না থাক, যে যা বলার বলুক আমি তোর পাশে আছি। এমন অমানুষের সাথে থাকার তোর কোন দরকার নেই। তাকে জানোয়ারটার হাত থেকে বাঁচিয়ে এনে একটা নতুন জীবন উপহার দিতে পারতেন। তা যখন করেন নি এমন ন্যাকা কান্নার এখন আর কি মানে? এখন বরং বাসায় গিয়ে নাকে তেল দিয়ে ঘুমান।