
লন্ডনে এখন দিনের বেলা তাপমাত্রা ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস আর রাতের বেলা প্রায় ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস । সকালের দিকেও ৪-৫ এর মাঝামাঝি থাকে। খুব ঠাণ্ডার ভেতর লেপ মুড়ি দিয়ে ঘুমানোর আনন্দ আলাদা। এরকম আনন্দ আল্লাহ আমাদের ফ্রি-তে উপভোগ করার সুযোগ করে দিয়েছে্ন। কিন্তু আমরা কয়জন এই সুযোগের সঠিক ব্যবহার করি? আমি এই নিয়ামত যথাসাধ্য উপভোগ করার চেষ্টা করি। কিন্তু সমস্যা হয় সোমবার আর বুধবার। এই দুইদিন আমার সকাল ৯ টায় ক্লাস থাকে। আমি ঘুম থেকে উঠে অ্যালার্ম অফ করে আবার ঘুমিয়ে শুয়ে পড়ি লেপের ভেতর। অ্যালার্ম অফ করে ভাবি আর ৫ মিনিট ঘুমাব। কিন্তু দেখা যায়, ৪০ মিনিট ঘুমিয়ে ফেলেছি। তারপর কোনমতে তাড়াহুড়া করে ক্লাসে যেতে হয়। আমার অবস্থা দেখে জার্মানির এক বন্ধু মনে করেছে আমার অ্যালার্ম ঘড়ি নেই। সে আমাকে বুদ্ধি দিল, মোবাইল ফোন ভাইব্রেশন মুড এ অ্যালার্ম দিয়ে একটা প্লেটের ওপর রাখতে আর সেই প্লেটেই একটা স্টিলের চামচ রাখতে। আমি কাজটি করেছি একদিন। প্লেট-চামচ এমনভাবে শব্দ করে কেঁপে উঠে যে রীতিমত হার্ট-অ্যাটাক করার মত অবস্থা সৃষ্টি হয়। ক্লাস করার জন্য হার্ট অ্যাটাক করে মরার কোন মানে হয়না। এই আইডিয়া বাদ দিলাম। জার্মানদের ভেতর শিল্প নেই, খুবই যান্ত্রিক। আমি আরও হিউম্যানিস্ট অ্যাপ্রোচ নিলাম। চাইনিজ ফ্ল্যাটমেট ইউলিন খুবই লক্ষ্মী টাইপের মেয়ে। সকাল বেলা উঠে নাস্তা বানায়, রান্না করে। তারপর ক্লাসে যায়। সোমবার তারও সকালে ৯ টায় ক্লাস থাকে। তাকে বললাম দরজায় নক করে আমাকে যেন ঘুম থেকে উঠায়। সে খুব দায়িত্ব নিয়েই দরজায় জোরে জোরে বাড়ি মারে। আবার আমার ইটালিয়ান এক বন্ধু যে কিনা ৬ তলায় থাকে তাকে বলেছি বুধবার ক্লাসে যাওয়ার ৩০ মিনিট আগে আমাকে আমাকে ফোন দিতে। সে ফোন দিয়ে আমাকে তাড়া দেয়। আর আমার বাংলাদেশী স্ত্রী ত আছেই ক্রমাগত ফোন দিয়ে ঘুম থেকে জাগানোর জন্য। আমাকে ঘুম থেকে উঠানোর জন্য যে আন্তঃদেশীয় সহযোগিতার সৃষ্টি হচ্ছে তা ভবিষ্যতে বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠায় বড় ভূমিকা রাখবে বলে আশা করি। আসলে আমি অনেক কারণেই নোবেল পাই, তারা আমাকে দেয় না।
আগের পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক করুন
Writer's ID
সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই এপ্রিল, ২০২২ সন্ধ্যা ৭:২৫

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




