somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

শেখ এম উদ্‌দীন
আমার ব্লগ আমার বাসার ড্রয়িং রুমের মত, আমি এখানে যেকোনো কিছু দিয়ে সাজাতে পারি আপনার পছন্দ না হলে বলতে পারেন আমার কোন আসবাবটির অবস্থান বা ডিজাইন আপনার পছন্দ হয় নি এবং কেন হয় নি। তবে তা অবশ্যই ভদ্র ভাষাতে। ভাষার ব্যবহার করতে জানা অনেক বড় একটি গুন

আরেকটি ১৯৭১ প্রজন্মের অপেক্ষাতে রয়েছি

১৮ ই মার্চ, ২০১৬ দুপুর ১:৪১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



পারিপার্শ্বিক প্রতিক্রিয়া দেখে এখন এ কথা বলাই যায় যে যদি স্বয়ং বঙ্গবন্ধু এসেও আরেকটি যুদ্ধের ডাক দেন, যে যুদ্ধ হবে দুর্নীতির বিরুদ্ধে, স্বেচ্ছাচারের বিরুদ্ধে, বৈষম্যের বিরুদ্ধে উনি ওনার পিছনে খুব বেশি সংখ্যক বাংলাদেশী পাবেন না।

১৯৭১ এর প্রজন্মের মধ্যে একটি প্যাশন ছিল। তাঁরা সকলে বঙ্গবন্ধুর মত অবদান রাখতে চেয়েছিলেন। তাঁরা সকলে বীর শ্রেষ্ঠদের মত বুলেটের মুখে বুকের ছাতি পেতে প্রতিরোধ করতে বদ্ধ পরিকর ছিলেন। তাঁরা সকলেই দেশের জন্য এক আত্মা এক প্রান (বঙ্গবন্ধু সহ) ছিলেন। যার ফলেই কেবল সীমিত অস্ত্রের যোগান থাকা সত্ত্বেও মাত্র নয় মাসে আমরা পেয়েছিলাম স্বাধীন বাংলাদেশ।

রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ আজ তাঁদের বক্তব্য শোনানোর কিংবা নিজেদের জনপ্রিয়তা বুঝানোর জন্য টাকা দিয়ে মানুষ ভাড়া করে সমাবেশ করে। একবার ভেবেছেন যদি একই কাজ বঙ্গবন্ধুকে ৭ই মার্চ ১৯৭১ করতে হত তাহলে তিনি এত টাকা কোথায় পেতেন? আমার বাবা ঐদিন মঞ্চের কাছা কাছি থাকার জন্য অফিস ফাঁকি দিয়ে সকালে ভোঁরে রেসকোর্সে চলে গিয়েছিলেন। কেন ২০০-১০০০ টাকার লোভে? না ঐ দিন কেউ টাকার জন্য যায় নি। ঐ দিন তাঁরা গিয়েছিলেন এক স্বপ্নের কারিগরের স্বপ্নে ভাগ বসাতে। বঙ্গবন্ধু যে স্বপ্ন দেখেছেন সেই স্বপ্ন যদি টাকার বিনিময়ে ভাড়া খাটা মানুষ দিয়ে বাস্তবায়ন করতে হত তাহলে আজো বাংলাদেশ পূর্ব পাকিস্তানই থাকত।
মেজর জিয়াউর রহমান, ক্যাপ্টেন রফিকুল ইসলাম, মেজর খালেদ মসাররফ, মেজর এটিএম হায়দার, মেজর কে এম সফিউল্লাহ, ক্যাপ্টেন নুরুজ্জামান, মেজর সি আর দত্ত, ক্যাপ্টেন রব, মেজর মির শওকত আলী, উইং কমান্ডার এম খাদেমুল বাশার, মেজর নুরুল হক, মেজর কাজী নুরুজ্জামান, মেজর আবু ওসমান, মেজর আবুল মঞ্জুর, মেজর এম এ জলিল, মেজর এম এ মঞ্জুর, মেজর জয়নাল আবেদিন, মেজর আবুতাহের, স্কোয়ারডন লিডার হামিদুল্লাহ খান প্রমুখ ব্যাক্তি বর্গ যদি ঘুণাক্ষরেও একবার চিন্তা করত দেশ স্বাধীন না করতে পারলে তাঁদের কি শাস্তি হবে তাহলে কি তাঁরা এভাবে লড়তে পারতেন? তাঁদের মনে বিশ্বাস ছিল যে আমরা সকলেই একটি স্বাধীন দেশ না পাওয়া পর্যন্ত নিজেদের দেহের এক বিন্দু রক্ত কনা নিয়ে ঘরে ফিরব না। এই একই বিশ্বাস ছড়িয়ে পরেছিল সকল মুক্তি যোদ্ধাদের মনে। অথচ আজ আমরা সেই একই বাংলাদেশী কিন্তু আমাদের ইচ্ছা গুলো কেমন যেন নেতিয়ে পড়েছে। অন্যায়কে আজ আমরা প্রশ্রয় দিতেই ভালো বাসী। অন্যায় কে অন্যায় বলাও যেন আমরা ভুলে গেছি।

আজ আমরা অনেক চালাক হয়ে গেছি, আজ আর আমরা দেশের কল্যাণে জিবন দিতে রাজি নই। আর হবেই বা কেন গত ৪৫ বছর যাবত আমাদের পই পই করে বুঝিয়ে দেয়া হয়েছে দেশের কল্যানে যারা জিবন দেয় তাঁদের একটি নির্দিষ্ট অংশ ছাড়া আর কারো কথা জাতি মনে রাখে না। তাঁদের ইচ্ছা গুলোর অপব্যাবহার করতেই যেন আমাদের প্যাশন। শহিদ আসাদ থেকে শুরু করে কত আসাদ যে এই জন্ম ভুমির জন্য জিবন দিল তাঁদের কোন হিসাব আছে কিনা সন্দেহ।
যে ব্যক্তিটি দেশের ভালোর জন্য বলবে তা আমার স্বার্থের বিরোধী হলেই আমি তা প্রত্যাখ্যান করে তাঁকে কীভাবে বিপদে ফেলা কিংবা গুম করা যায় তা নিয়ে উঠে পরে লাগব। এই তো আমাদের দেশ প্রেমের নমুনা। হাজার হাজার কোটি টাকা গায়েব হয়ে গেল যা দিয়ে ১১ টি পদ্মাসেতু করা যেত অথচ এ নিয়ে আমাদের কোন অনুভূতি নেই। আমাদের অনুভূতি আছে পদ্মাসেতুর জন্য টাকা জমা দেয়াতে, আফ্রিদি সাকিবের জুতা এগিয়ে দিয়েছে, তামিম ইকাবাল কে ধনী কি বলেছে, জন্টি রডস সরকার কে নিয়ে কি টুইট করেছে এগুলো নিয়ে। অথচ এগুলো হল একজন নাগরিকের জীবনের ঐচ্ছিক কিছু অনুভূতি। আমরা আমাদের অবশ্য পালনীয় অনুভূতি গুলো এমন হাজারো ঐচ্ছিক অনুভূতি দিয়ে পরিবর্তন করে নাকে তেল দিয়ে ঘুমাচ্ছি। ঘুমাই ঘুমাতে ঘুমাতে যদি কোন তৃতীয় শক্তির দেশের অঙ্গরাজ্য হওয়া যায় তাতেই হয়ত আমাদের মনের আশা পূরণ হবে। অথচ লাখো সন্তানের জিবন অকাতরে বিলিয়েই এই স্বাধীন বাংলার সৃষ্টি। যা আজ অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক, বিনোদন সহ অনেক ক্ষেত্রেই পরাধীন হয়ে গেছে।

জানি না আর কত দেশ প্রেমিক কিংবা সৎ মানুষের বলীর পরে কুম্ভকর্ণের মত ঘুমিয়ে থাকা আমাদে বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদ, দেশ প্রেম জেগে উঠবে। জানি না আর কত নাটক হলে আমরা ক্রিকেট মাঠের ২২ গজের চেয়ে দেশের হাজার কোটি টাকা লোপাট কে অধিক গুরুত্ব দিব। অপেক্ষাতে থাকি আবার এক একাত্তর প্রজন্ম এবং তাঁদের নেতৃত্ব দেয়ার মত যোগ্য এক নেতার। আসবে সেইদিন আসবে হয়ত আমি থাকব না কিন্তু আমার দৃঢ় বিশ্বাস এমন এক প্রজন্ম আসবেই আসবে। যারা বিগত বছর গুলোর হরিলুট থেকে শুরু করে সকল ছোট খাট অপরাধের জন্য বর্তমান প্রজন্মকে বিচারের কাঠগড়াতে দার করাবে। অপেক্ষাতে থাকলাম সেই প্রজন্মের। যদি আমি মারা যাই হয়ত আমার পরের প্রজন্ম দেখবে সেই প্রজন্মের তীব্র দেশপ্রেমের ঝঙ্কার।

যে ঝঙ্কারে খান খান হয়ে যাবে মেকী চেতনার দুর্গ, দুর্নীতির আখড়া দেশ ছেড়ে পালাবে, লুটেরারা লুটের অর্থ স্বেচ্ছায় ফিরিয়ে দিবে রাষ্ট্রীয় কোষাগারে। ঐ যুবক শ্রেণী গঠন করবে মুক্তিযোদ্ধাদের স্বপ্নের সত্যিকারের সাম্যের সুজলা সুফলা শস্য শ্যমলা বাংলাদেশ।
সর্বশেষ এডিট : ১৮ ই মার্চ, ২০১৬ দুপুর ১:৪২
২টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

অপরূপের সাথে হলো দেখা

লিখেছেন রোকসানা লেইস, ১৪ ই মে, ২০২৪ রাত ১:৩৫



আট এপ্রিলের পর দশ মে আরো একটা প্রাকৃতিক আইকন বিষয় ঘটে গেলো আমার জীবনে এবছর। এমন দারুণ একটা বিষয়ের সাক্ষী হয়ে যাবো ঘরে বসে থেকে ভেবেছি অনেকবার। কিন্তু স্বপ্ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমরা কেন এমন হলাম না!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৪ ই মে, ২০২৪ সকাল ৯:৪১


জাপানের আইচি প্রদেশের নাগোইয়া শহর থেকে ফিরছি৷ গন্তব্য হোক্কাইদো প্রদেশের সাপ্পোরো৷ সাপ্পোরো থেকেই নাগোইয়া এসেছিলাম৷ দুইটা কারণে নাগোইয়া ভালো লেগেছিল৷ সাপ্পোরোতে তখন বিশ ফুটের বেশি পুরু বরফের ম্তুপ৷ পৃথিবীর... ...বাকিটুকু পড়ুন

অভিমানের দেয়াল

লিখেছেন মোঃ মাইদুল সরকার, ১৪ ই মে, ২০২৪ সকাল ১১:২৪




অভিমানের পাহাড় জমেছে তোমার বুকে, বলোনিতো আগে
হাসিমুখ দিয়ে যতনে লুকিয়ে রেখেছো সব বিষাদ, বুঝিনি তা
একবার যদি জানতাম তোমার অন্তরটাকে ভুল দূর হতো চোখের পলকে
দিলেনা সুযোগ, জ্বলে পুড়ে বুক, জড়িয়ে ধরেছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের গ্রামে মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতি

লিখেছেন প্রামানিক, ১৪ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৩১



২৬শে মার্চের পরে গাইবান্ধা কলেজ মাঠে মুক্তিযুদ্ধের উপর ট্রেনিং শুরু হয়। আমার বড় ভাই তখন ওই কলেজের বিএসসি সেকেন্ড ইয়ারের ছাত্র ছিলেন। কলেজে থাকা অবস্থায় তিনি রোভার স্কাউটে নাম... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিকেল বেলা লাস ভেগাস – ছবি ব্লগ ১

লিখেছেন শোভন শামস, ১৪ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৪৫


তিনটার সময় হোটেল সার্কাস সার্কাসের রিসিপশনে আসলাম, ১৬ তালায় আমাদের হোটেল রুম। বিকেলে গাড়িতে করে শহর দেখতে রওয়ানা হলাম, এম জি এম হোটেলের পার্কিং এ গাড়ি রেখে হেঁটে শহরটা ঘুরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×