১.
আজিজ সুপার মার্কেটে অনেকদিন আড্ডা দেয়া হয়না। নিজেদের ডিজাইন করা টিশার্ট গুলো হেঁটে হেঁটে বেচে
বেড়িয়েছি আজিজ থেকে ছবির হাট,টিএসসি আবার আজিজ। স্যান্ডেলের শুকতলা ক্ষয়ে ফেলেছিলাম বড় হবার জন্য!
একদিন হুটকরে ১২টা টিশার্ট বিক্রি করে ফেললাম আমরা। সবই আমাদের হাতে আঁকা টিশার্ট। আমাদের কি আনন্দ ! এরপর নিত্য উপহার , ফোর ডাইমেনশনে গিয়ে সময় কাটাতাম।মাঝে মাঝে নোভা কম্পিউটারের সামনে, ঐখানে নাকি কবি রফিক
আজাদ আসতেন, আমরা অপেক্ষায় থাকতাম।
পেনসিল ,রং তুলি, আর্টপেপার,ওয়াটার কালার কিংবা ক্রিমসন লেকের দিন গুলো ভালোয় ছিলো। ভুল গুলোকে তুলি আর রংয়ের ছোঁয়ায় কত সহজেই বদলে ফেলা যেতো! একটার পর একটা ওয়াশ। আহ্ ! ওয়াটার কালারের মজাই ছিল আলাদা।
টিশার্টের নিজের লেখা কবিতার ডিজাইন নজর কেড়ে ছিল খুব।
আলিয়ঁস ফ্রঁসেজে একদিন শাহরুখ শহীদ স্যারের সাথে দেখা। আমরা ঠিক করেছিলাম উনার মত আমরাও শাড়িতে আঁকবো। ঐদিনই শেষ দেখা। এর কিছুদিন পর তিনি মারা যান। আমরা বিষন্ন হয়েছিলাম খুব।
রাত জেগে টি শার্ট, ঈদের আগে পাঞ্জাবীর ডিজাইন। কফি আর আমার সস্তা কবিতা, ওয়াটার কালারে হাজার হাজার স্বপ্নের শেড, দেয়াল লিখন, অংকন... আবছা
হয়ে আসা ঝাপসা স্মৃতি!
তুইতো তাও লাইনে আছিস। শৈল্পিক থেকে জংঙ্গী হাউজ তারপর নবরুপা , তারপর এখন কোথায় জানি না। শুনেছি মাঝে মাঝে ফ্যাশন নাইট, মিডিয়া। দুইয়ে দুইয়ে পাঁচ মেলাতে পারিস্ ।
কি বিস্ময়কর! আমার এখন দুইয়ে দুইয়ে চার মেলাতে হয়! আমার সামনে নিরেট আবেগহীন কম্পিউটার। যেটা হিসেব ছাড়া কিছুই বোঝে না।
২.
ক্রিমসন লেক
_______________
বাক্সটা ক্রমশ ছোট হচ্ছে
চার দেয়ালের জ্যামিতিক আঁকিবুকি
বিন্দু থেকে বিন্দুর সমান্তরাল মিলন
সহজ উপপাদ্য গুলো সরল থেকে জটিলের দিকে ধাবমান।
ক্রিমসন লেক'এ লাল সূর্য
লেমন ইয়োলোর হাত ধরে একফালি সজীবতা
জল রঙে কৃষ্ণচূড়া
আর অসাবধানতায় দূরের ধূসর পাহাড়।
সবই ঠিক ছিল
অসংলগ্ন পেন্সিলের অযাচিত দাগ মুছে দিতো
নন ডাস্ট ইরেজার!
লেখার পাতায় ফাঁকা গুলো বেঁচে নেই।
হাজারো কাটাকাটি , লেখার উপর লেখা
আর অস্পষ্ট অক্ষরগুলো
জীবনকে সন্দিহান করে তোলে ইদানিং।
সর্বশেষ এডিট : ০৯ ই জুন, ২০২২ রাত ১২:১৫