somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

লেখালেখির বয়স,রবীন্দ্রনাথ ও আমার ডায়েরির পাতা...!

১৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ রাত ১০:১৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


অনাবিষ্কৃত আবেগের রঙে মনের আকাশটা বড্ড ফ্যাকাশে সেদিন। কি করবো অথবা কি করা উচিৎ বুঝতে না পেরে শেষে পুরনো ডায়েরির পাতায়-পাতায় সুখস্মৃতি খুঁজতে লাগলাম! কিন্তু সেখানেও গোলাপি রঙের সুখ, কমলা রঙ উচ্ছ্বাস আর সবুজ স্বপ্নের পাশাপাশি জমে আছে নীল রঙের বেদনা,মৃত্তিকা রঙ হতাশা এবং মৃত স্বপ্নের বিবর্ণ লিপিকা।

ডায়েরির পৃষ্ঠা বদল করতে করতেই চোখ আঁটকে গেল বেঞ্জামিন ফ্রাঙ্কলিনের একটা কথায়। তিনি বলেছেন; “মৃত্যুর সঙ্গে সঙ্গেই যদি মানুষের মন থেকে মুছে যেতে না চাও,তবে এমন কিছু লিখে যাও,যা বারবার পড়বার মতো এবং এমন কিছু করে যাও,যা লেখার মতো

বিক্ষিপ্ত মনকে প্রশ্ন করলাম,জীবনে কি এমন করেছ তুমি যা সমাজ ও সভ্যতার জন্য লেখনীয় কিংবা লিখেছ এমন কি যা বারবার পঠনীয়? অপ্রস্তুত মন দিশেহারা হয়ে খাবি খেতে লাগলো, যাপিত জীবনের সাতরঙ খতিয়ানে।

পৃষ্ঠা উল্টিয়ে যাচ্ছিলাম,একটা পাতায় দুঃখের নানান প্রতিশব্দ লেখাঃ
1. Sorrow
2. Grief
3. Distress
4. Unhappiness
5. Misery
6. Woe
7. Tribulation
8. Pain
9. Inflammation
10. Pity
11. Remorse
12. Affliction

দুঃখ নয়,হাসি পেল এই ভেবে যে বার মাসের জন্য বার পদের দুঃখ লেখা রয়েছে আমার ডায়রিতে! হা হা হা...

রবীন্দ্রনাথকে পাওয়া গেল,তিনি বলে গেছেনঃ “পঁচিশ বৎসর পর্যন্ত কোনো লোককে জানা যায় না-তার যে কি হবে,কি হতে পারে কিছুই বলা যায় না; কিন্তু সাতাশ বৎসরে মানুষকে একরকম ঠাহর করা যায়-বোঝা যায় তার যা হবার তো একরকম হয়েছে,এখন থেকে প্রায় এইরকমই বরাবরই চলবে, এ লোকের জীবনে হঠাৎ আশ্চর্য হবার আর কোনো কারণ রইল না

নিজের লেখা বিদগ্ধ কবিতার কিছু লাইনঃ

মৃত্যুকে আমার,
আকুল আরাধ্যকে
ললাটের উঠোন হতে
অদৃষ্টের অভিশাপ হতে
হাতের মুঠোয় নেবো!

এই যে আমোদ আর প্রমোদে
হফনারীয় জীবনের স্বাদে
ফুরোলো অক্সিজেন-সভ্যতার
শিকড়ে। আনাচারের কিউমুলেটিভ
কার্বনে ভারী আকাশ।

আর নয় ফুল-পাখি,কবিতা-গান,
রাষ্ট্রের সতীত্ব যখন ক্রন্দসী
সমাজের বিবেক যখন
অনুভূতিহীন ভগাঙ্কুর তখন
শ্বাপদের শ্বাস হবো।



ডায়েরিতে আছে দেশের প্রথম নারী প্রশিক্ষক বৈমানিক ফারিয়া লারার কথা। একরাশ গুমোট অভিমান নিয়ে অজানা আকাশে হারিয়ে গেছে যে, (১৬ই এপ্রিল ১৯৭০-২৭ সেপ্টেম্বর ১৯৯৮ ইং) । অরুণ কুমারের এই কবিতাটি খুব প্রিয় ছিল তারঃ

‘যদি মরে যাই
ফুল হয়ে যেন ঝরে যাই
যে ফুলের নেই কোন ফল
যে ফুলের গন্ধই সম্বল
যে গন্ধের আয়ু একদিন
উতরোল রাত্রিতে বিলীন
যেই রাত্রি তোমারই দখলে
আমার সর্বস্ব নিয়ে জ্বলে
আমার সত্ত্বাকে করে ছাই
ফুল হয়ে যেন ঝরে যাই’


মনটা ভিজে জবজবে,লারার স্থানে নিজেকে ভাবতে ভাবতে আমিও পাখি হয়ে গেলাম। ডানার ভাঁজে, পালকে-পালকে জমা অভিমান নিয়ে আমিও একদিন হয়তো উড়ে যাবো আমার আরাধ্য আকাশে।

আর এগুতে পারলাম না। প্রিয় ডায়েরির পাতারা ভিজে যাচ্ছে। মনের আকাশে ভাসছে ফ্রাঙ্কলিন,রবীন্দ্রনাথ আর বৈমানিক লারার রেখে যাওয়া অভিমানী ফুলের সম্মোহন_সুবাস...!


১৩/০২/২০১৫ ইং (রাতঃ ১০.৩০)
সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ সকাল ১০:২০
২৮টি মন্তব্য ২৭টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

পেচ্ছাপ করি আপনাদের মূর্খ চেতনায়

লিখেছেন সত্যপথিক শাইয়্যান, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১১:৩৮

আপনারা হাদি হতে চেয়েছিলেন, অথচ হয়ে গেলেন নিরীহ হিন্দু গার্মেন্টস কর্মীর হত্যাকারী।
আপনারা আবাবিল হয়ে অন্যায়ের বিরুদ্ধে দাড়াতে চেয়েছিলেন, অথচ রাক্ষস হয়ে বিএনপি নেতার ফুটফুটে মেয়েটাকে পুড়িয়ে মারলেন!
আপনারা ভারতীয় আধিপত্যের বিরুদ্ধে... ...বাকিটুকু পড়ুন

নজরুল পরিবারের প্রশ্ন: উগ্রবাদী হাদির কবর নজরুলের পাশে কেন?

লিখেছেন মাথা পাগলা, ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৩:০১



প্রায় অর্ধশতাব্দী আগে কাজী নজরুল ইসলামের দেহ সমাধিস্থ করা হয়েছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মসজিদের পাশে। শনিবার বাংলাদেশের স্থানীয় সময় বিকেল ৪টে নাগাদ সেখানেই দাফন করা হল ভারতবিদ্বেষী বলে পরিচিত ইনকিলাব মঞ্চের... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদির আসল হত্যাকারি জামাত শিবির কেন আলোচনার বাহিরে?

লিখেছেন এ আর ১৫, ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:৫৪


গত মাসের শেষের দিকে জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পারওয়ারের ছেলে সালমান, উসমান হাদির সঙ্গে খু*নি ফয়সালের পরিচয় করিয়ে দেন। সেই সময় হাদিকে আশ্বস্ত করা হয়—নির্বাচন পরিচালনা ও ক্যাম্পেইনে তারা... ...বাকিটুকু পড়ুন

দিপুকে হত্যা ও পোড়ানো বনাম তৌহিদী জনতা!

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:০৫


পাইওনিয়ার নিটওয়্যারস বিডি লিমিটেড (Pioneer Knitwears (BD) Ltd.) হলো বাদশা গ্রুপের (Badsha Group) একটি অঙ্গ প্রতিষ্ঠান। বাদশা গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান কর্ণধার হলেন জনাব বাদশা মিয়া, যিনি একইসাথে এই... ...বাকিটুকু পড়ুন

সাজানো ভোটে বিএনপিকে সেনাবাহিনী আর আমলারা ক্ষমতায় আনতেছে। ভোট তো কেবল লোক দেখানো আনুষ্ঠানিকতা মাত্র।

লিখেছেন তানভির জুমার, ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৮:২২



১০০% নিশ্চিত বিএনপি ক্ষমতায় আসছে, এবং আওয়ামী স্টাইলে ক্ষমতা চালাবে। সন্ত্রাসী লীগকে এই বিএনপিই আবার ফিরিয়ে আনবে।সেনাবাহিনী আর আমলাদের সাথে ডিল কমপ্লিট। সহসাই এই দেশে ন্যায়-ইনসাফ ফিরবে না। লুটপাট... ...বাকিটুকু পড়ুন

×