একটা সময় ছিলো, যখন ভিডিও ক্যাসেটের দোকানে খয়রি রঙের প্যাকেটে ব্লু ফিল্ম বা নীল ছবির ক্যাসেট পুরে, অতি গোপনে দরজা জানালা সব বন্ধ করে, কোন একজনের বাসায় বুভুক্ষের মতো রগরগে দৃশ্য গুলো গিলতো একদল তথাকথিত মানুষ। সময়ের আবর্তে এখন আর দল বেঁধে খুঁঝতে হয় না কার বাসায় ভিডিও প্লেয়ার আছে, কারণ এখন আঙ্গুলের খোঁচাতেই পাওয়া যায় সেই সব দৃশ্য। এর বিস্তৃতি কত জানেন? কিছু ঘটনা বলি…….
পাসের বস্তিতে থাকা আক্কাস আলী, শহরে আসার পর টুক টাক কিছু কাজ করতো, কিন্তু এখন তার মাত্র তিনটি কাজ, খাওয়া, ঘুম আর মানুষের বাড়িতে ছুটা কাজ করা স্ত্রীর কামাইয়ের টাকায় মেমোরি কার্ডে ভুঁড়ি ভুঁড়ি পর্ণ ভিডিও ঠেসে চিত্ত উত্তেজিত করা। দেখা তো হলো, এখন উত্তেজনার ফল মিটানো চাই!!!! বউ কে তো প্রতিদিনই ঘাঁটা হয়, তাও আবার পর্ণ ভিডিও গুলোর মতোই অদ্ভুত অদ্ভুত উপায়ে। এক জিনিষ ঘাঁটতে আর কয় দিন ভাল লাগে!!! তাছাড়া বউ এখন বাড়িতে নাই, আক্কাস আলী এখন উত্তেজনার শীর্ষে, হাতের কাছে কাউকে চাই!!!! পাসের ঘরে উঠতি বয়সের একটা কিশোরী মেয়ে আছে একা, কাজটা তাহলে তার সাথেই সারা যাক………
আক্কাস আলীর মতো, বাস ড্রাইভার চুন্নু মিয়াঁরও নখের ডগায় থাকে পর্ণ ভিডিও, তাই তিনিও হেল্পারের সাথে গলা গলি বেঁধে তক্কে তক্কে থাকেন, একা কোন মেয়েকে বাসে পেলেই কেল্লা ফতে!!!!
এই পাড়ার মধ্যবিত্ত ঘরের ছেলে রুবেল, মেমোরি কার্ডের কল্যাণে, সেও শিখে গেছে সময় অসময় চিত্ত উত্তেজিত করা। প্রথম প্রথম, রাতে ম্যাসেঞ্জার এর টিং টিং শব্দে বন্ধুদের পাঠানো ভিডিও গুলিতেই চলতো, কিন্তু ধীরে ধীরে নেশাটা বাড়লো। তাই একদিন রুবেলের এই উত্তেজনার বলি হতে হলো, ছয় বছরের ছোট্ট তৃষা কে………
অর্ণব, কোটিপতি বাবার এক মাত্র ছেলে। জীবনের কোন ফুর্তি সে বাদ রাখেনি। দামী দামী কল গার্লদের সাথে রাত কাটানো তো ওয়ান টু-র ব্যাপার, সেই সাথে অসংখ্য মেয়ে বন্ধু তো আছেই। উগ্র চিন্তা গুলোকে আরও বেশী বিক্রিত করার প্রতিদিনকার ফুয়েল হচ্ছে, নামি দামী পর্ণ স্টারদের পর্ণ ভিডিও। এবার তার সখ জাগল, পাঁচ বন্ধু একসাথে মিলে, তার কোন এক মেয়ে বন্ধুর উপড়ে এক সাথে ঝাল মিটাবে। তো যেমন ইচ্ছা তেমন কাজ………
৬০ ছুঁই ছুঁই মিস্টার কবির চৌধুরী, এই বয়সে কি এই সব মানায় ভেবে, জিভ কেটে কেটেও কীভাবে কীভাবে যেন ঐ সমস্ত দেখা হয়ে যায়……… ফলশ্রুতি হলো কিছুদিন পর…… নারী অফিস কর্মীর শ্লীলতাহানী।
এই আক্কাস আলী, রুবেল, অর্ণব ও মিস্টার কবির চৌধুরী-দের বিস্তৃতি এখন, হাটে ঘাঁটে, পথে মাঠে এবং দিন দিন জ্যামিতিক হাড়ে বাড়ছে। তাই খবরের কাগজ খুল্লেই দেখা যায়, “১৫ দিনে ধর্ষণের শিকার ৩৯ শিশু”, “ধর্ষণে নজিরবিহীন রেকর্ড- ১০০ দিনেই শিকার ৩৯৬ নারী ও শিশু……”। আর পর্ণ স্টাররা এখন এতই সম্মানিত ব্যক্তি, যে তাদের নামে এখন নবম শ্রেণীর প্রশ্ন পত্রও তৈরি হয়!!!
চলবে……
সর্বশেষ এডিট : ২২ শে এপ্রিল, ২০১৯ রাত ৩:০৪