প্রতিভা দেখেছ তুমি? আমি অসংখ্য প্রতিভা দেখেছি; সেগুলোর আবার ঝড়ে পড়তেও দেখেছি। আমি দেখেছি তারা কীভাবে নিজেদের গড়েছিল। আমি আবার দেখেছি কীভাবে তারা ভেঙ্গে পড়েছিল। আমি দেখেছি একটি ছেলের রাত ভড়া পরিশ্রম। তাকেই দেখেছি সিগারেটের ভিতরে নিজেকে ডুবিয়ে রাখতে কিছুদিন পর। যে ছেলে একদিন বিশ্ব জয় করবে ভেবেছিল, আজ সে তিনদিনের ঘামে ভেজা টি-শার্ট, ছেড়া জিন্স আর এলোমেলো চুল নিয়ে রাস্তায় একা একা হাটে আর ভাবে পৃথিবী তাঁর জন্য না! সে কেন চায় এ মুক্তি? কখনো ভেবেছ কি? যে ছেলে সবাইকে নিয়ে হাসি মাখা মুখে কথা বলত, সবাইকে কাছে নিয়ে জীবন সুন্দর করে কাটানোর চিন্তা করত আজ কেন সেই পরিবারের লোকজনের সাথেই ঠিকমত কথা বলেনা? কেন কথা বলার সময় রাগারাগি করে? ছেলে নষ্ট হয়ে গেছে তাইতো? না! ওকে তুমিই নষ্ট করেছ! কেউ কখনো নষ্ট হতে চায়না। কেউ চায়না তাকে কেউ খারাপ বলুক। সবাই যার যার অবস্থান থেকে ভালো থাকতে চায়; শান্তিতে থাকতে চায়। তুমি তাকে কখনো মূল্যায়ন করেছ? তুমি তাঁর হাতে সিগারেট দেখে গালি দিয়েছ-বকা দিয়েছ! কখনো জিজ্ঞেস করেছ, “বাবা, তোর কি হয়েছে আমার সাথে শেয়ার কর?” তাঁর মনের অনুভূতি জানতে চেয়েছ? যে ছেলে চেয়েছে অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটিতে পড়ার সপ্ন দেখত সে আজ ঢাকা ভার্সিটিতে চান্স না পাওয়ায় তাকে যাচ্ছেতাই কথা শুনতে হয়েছে! তাকে কি তখন বলা হয়েছিল, “ভাই আজ পারিসনি তো কি হয়েছে? টমাস আলভা এডিসনের কথা জানিসনা? সে তো প্রাইমারী ও পাস করতে পারেনি! তুই তাঁর থেকে ভালো কিছু করবি দেখিস!” না! এসব কথা আপনারা জানেন না। আপনারা বলতে পারবেন অমুকের ছেলে বুয়েটে পাইছে, তমুকের ছেলে ঢামেক- এ পাইছে, তুমি কি ঘোড়ার ডিম পাইছো? আপনারা আপনাদের ক্রেডিট ধরে রাখেন(!)। তাহলে আজকের এই নষ্ট ছেলের জন্য তাকে দায়ী করছেন কোন সাহসে? যাকে স্বপ্ন দেখিয়ে স্বপ্ন ভাঙ্গার ক্রান্তিলগ্নে ছুড়ে ফেলেছিলেন তাকে নষ্ট বলার অধিকার অন্তত আপনার আর নেই। আপনি গর্ব করতে থাকুন অমুক আর তমুকের ছেলে মেয়েকে নিয়ে। মেধাবীরা সব সময়ই মেধাবী! পারেন তো আজকের আপনার সেই নষ্ট ছেলেকে আবার উৎসাহ দিন। তাকে বুঝুন সে কি চায়! শুধু পড়ালেখার নাম জীবন না, আর পড়ালেখা করলেই সফল হয়না মানুষ! একটি সুন্দর চিন্তাই তাকে সফল করতে পারে। তাঁর চিন্তা শুনুন, তাঁর পড়ার মন-মানষিকতা আর না থাকলে অন্তত জোর করবেননা! একটা ক্যারিয়ার হাতে ধরিয়ে দিন, সে সফল হবেই। আপনার হাত ধরেই সুপ্ত প্রতিভাটি আবার জাগ্রত হবে।
সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:১৩