"অনন্যা "
......
"বিকেল ৩টায় কণক স্যারের কাছে
প্রাইভেটে যাব ।। প্রতিদিন ২ নম্বর
গেইট
থেকে টেম্পুতে করে যেতে হয় আজও
তার
ব্যাতিক্রম হয়নি । তবে আজ একটু দেরি
হয়ে গেছে এখন প্রায় ২.৪৫ বাজে ।
কি
আর করার খালি একটা টেম্পুতে বসে
পড়লাম । চোখের পলকেই টেম্পুর সব
সিট
বুকিং হয়ে গেল শুধু আমার পাশের
সিট
টাই খালি ছিল । টেম্পু Start দিবে এই
মুহূর্তেই কোথা থেকে একটি মেয়ে
এসে
আমার পাশে বসে গেল !!!! মনে মনে
ভাবলাম এ কি এটা কি হলো ???
মেয়েটা বসার আর কোন জায়গা
পেলনা
। শেষমেষ আমার পাশে একটা
মেয়ে !!!!
অবশ্য তারই বা কি দোষ জায়গা
খালি
থাকলে বসবেনা, সেও হয়ত আমার
পাশে
বসতে চায়নি, তারও হয়ত প্রাইভেটে
যেতে late হচ্ছিল । তবুও শরমে মুখ আমার
মুখ লাল হয়ে গেল । টেম্পু Start দেয়া
শুরু
করল । মাঝে মাঝে মেয়ের হাতের
কয়েকটা গুতা খাচ্ছিলাম । কখনো
কখনো
মেয়েটি গতির স্থিতিশীলতার সূত্র
মেনে আমার দিকে ঢলে পড়ছিল ।
নিজেকে খুব অস্বস্তি লাগছিল ।
মেয়ের
দিকে তখনো তাকাই নি । তবে বুজতে
পারছিলাম সে fb চালাতে ব্যাস্ত ।
সামনে বসা লোকগুলোর খেয়ে
দেয়ে আর
কাজ নেয়, সেই কখন থেকে আমার
পাশে
বসা মেয়েটির দিকে অপলক দৃষ্টিতে
তাকিয়েই আছে, চোখ আর নামায়ই
না ।
এইভাবে করতে করতে ১০ মিনিট পর
চকবাজার পৌছলাম, এতক্ষণ পর
নিজেকে
মুক্ত মনে হলো । মেয়েটার দিকে
এইবার
লক্ষ করলাম আর যা দেখলাম তা
দেখেই
আমি পুরা হতভম্ভ ! আরে এই তো সেই
মেয়ে যার নাম রোজ বন্ধুমহলে শুনি !!!
নাম "অনন্যা" !! রুপে যেমন অনন্যা,
চালচলনেও ঠিক তাই । চোখে চশমা ।
ছড়িয়ে দেয়া চুল, ওয়াও এত সুন্দর
মেয়ে
পৃথিবিতে আছে !! শত শত ছেলে ওর
উপর
ক্রাস তার মধ্যে আমিও একজন । শত শত
ছেলের কথা ভাবলে চলবেনা
নিজের
কথা আগে । মেয়েটাকে পটানোর
অনেক
চেষ্টা করেছি কিন্তু পারিনি । অথচ
আজ
সেই মেয়েই কিনা আমার পাশে এসে
ধরা দিল আর আমি আগলে রাখতে
পারলাম না !!! সুযোগতো আর বার বার
আসেনা । অবশ্য সুযোগ পেলেও কি ,
না
পেলেও কি ! মেয়েটি প্রেমের
ব্যাপারে মোটেই আগ্রহী না । এই
পর্যন্ত
না হলেও ৩০টা ছেলে তাকে
প্রপোজ
করেছে আর সেই মেয়ে সুন্দর করে
রিজেক্ট করে দিয়েছে । আমি করলে
আমার কপালও হয়ত এমন হবে । থাক বাদই
দিলাম লিস্ট থেকে । না জানি আরও
কত
অনন্যা দুনিয়াতে আছে ! এমন অনন্যা
খুজে পাব কিনা তাও জানিনা ।
তবে এই
অনন্যা তো আমার চোখটাকেই অনন্যা
বানিয়ে দিয়েছে । চোখ বুজলেই সে
আমার সামনে এসে ধরা দেয় । জানি
তাকে হয়ত পাবোনা তবুও পাওয়ার
স্বপ্ন
নিয়েই বেঁচে আছি । আগে যদি
জানতাম
টেম্পুতে বসে বসে এই মেয়ের হাতের
গুতা খাচ্ছি, তাহলেতো আমি তখনই
Gold
হয়ে যেতাম অনেকটা পরশ পাথরের মত
।
আহা, কি অনন্যাস্পর্শ "
.........."ঠিক এইভাবেই আমার
ডায়েরিতে
লেখা গল্পটা আমার বাবা জোড়ে
জোড়ে পড়ে মা,চাচা-চাচীকে
শুনাচ্ছিল আর হাসছিল । আর আমি মুখ
লাল করে উনাদের সামনে দাড়িয়ে
আছি, ইচ্ছা করছিল একটা বোরকা পরে
নিজেকে ঢেকে রাখতে । এত লজ্জা
জীবনে কখনো পাইনি !! আমি ভুল করে
ডায়েরিটা খুলে টিভি দেখতে চলে
গিয়েছিলাম । আর আমার বাবা সুন্দর
করে ডায়েরিটা খুলে "অনন্যা"
গল্পটা
শুনাচ্ছিল । বাবার থেকে অনেকবার
ডায়েরিটা কেড়ে নেয়ার চেষ্টা
করেছি কিন্তু পারিনি । মা-বাবার
সামনে এমন পরিস্থিতে পড়ব কখনই
ভাবিনি । এখন কিছু বলেও তো লাভ
নেয়
ডায়েরিতে লিখা সব গল্পইতো পড়ে
ফেলল । । আমি খুব হতাশ ! তখনই বাবা
বলে উঠল
-" তোর লিখাটা খুব অনন্যা-সাধারণ"
-বাবা,অনন্যা না । অনন্য-সাধারণ ।
- আরে না কি বলিস, অনন্যা-সাধারণ !!
.... বুজতে পারছি বাবাও কথায় কথায়
আমাকে বাশ দিচ্ছে । চাচা-চাচীর ও
ব্যতিক্রম নেয় কথায় কথায় " কিরে
অনন্যার কি খবর ? "
....হায়রে অনন্যা তুমি তো মোদের
পরিবারটাকেই করেছ " অনন্যা " "
......