কিছুদিন আগে ঘটে যাওয়া একটা ঘটনা।বড়ই আশ্চর্য হলাম।তাই এটা নিয়েই লিখতে বসে গেলাম।
সেদিন এক্সামের দিন ছিল।আমার সামনে একজন মেয়ে ছিল সেদিন।মেয়েটার রোল আমার আগেই তাই তার সিট আমার আগেই পড়েছিল।প্রথম এক্সাম ছিল বাংলা।মেয়েটা সেদিন কলেজে কলেজ ড্রেসের উপরে বোরকা আর হিজাব পড়ে এসেছিল।স্যার ক্লাসে ঢুকেই মেয়েটাকে বললেন দাঁড়াতে।মেয়েটা চুপচাপ দাড়িঁয়ে গেল কোন কথা না বলে।স্যার আচমকা প্রশ্ন করলেন – “তোমার কলেজ ড্রেস কই? বোরকা পরে কলেজে এসেছো তার পারমিশন নিয়েছো প্রিন্সিপালের কাছ থেকে?”
মেয়েটা কোন উত্তর দিতে পারেনা।চুপচাপ দাড়িঁয়ে থাকে।আসে পাশের ছাত্র-ছাত্রীরা মেয়েটার দিকে তাকিয়ে কর্কট কন্ঠে হাসতে থাকে।স্যার বলতেছেঃ- “পড়াশুনা করতে আসছে তাও আবার ধং করে ড্রেস পরে এসেছে।যত্তসব আজাইরা বুদ্ধি”।
আসলে স্যার হিন্দু ধর্মের ছিলেন কিনা তাই!স্যার কোন ধর্মের ছিলেন এটা ব্যাপার না।ব্যাপারটা হচ্ছে মেয়েটা তার ধর্ম মেনে ড্রেস পরে এসেছে।এটাতে ধং এর কিছু আছে বলে আমি মনে করি না।ইসলাম ধর্মের রীতি-নিতী অনুসারে মেয়েদের পর্দা করা ফরজ।তাই সে নিজের ধর্ম মেনে বোরকা-হিজাব পরে এসেছে।এতে তাকে ক্লাসের সবার সামনে এভাবে অপমান করার কোন মানে আছে বলে আমি মনে করি না!আসলে আমাদের সমাজে ঐ স্যারের মত মানুষিকতাসম্পন্ন এমন অনেক মানুষ আছেন যারা নিজেদের ধর্ম ছাড়া কিছুই বুঝে না।নিজেদের ধর্ম ছাড়া অন্য কোন ধর্মের কিছুই তারা মেনে নিতে পারেনা।এক প্রকার তাদের সারা শরীর জ্বলে এসব অন্য ধর্মের কাউকে দেখলে।তাই সরাসরি কিছু না বলে সবার সামনে তাদের ছোট করতে ভুল করে না।তারা নিজেদেরকে খুব বড় মনে করে নাকি নিজেদের ধর্মকে খুব বড় মনে করে এটা বোঝা দায়।
আসলে আমাদের মন মানুষিকতাকে পরিবর্তন করতে হবে।নয়ত অন্য কিছুর বেড়াজালে আমাদের নিজেদেরকেই হারিয়ে ফেলতে হবে।যার যার ধর্ম সে সে পালন করবে এটাতে বাধা দেয়ার অধিকার কারো নাই।আর যদি কেউ সত্যিই এমন করতে পারে তাহলে সে যে কতটা নিম্ন পর্যায়ের মানুষ সেটা বুঝতে আর কিছুই বাকি থাকবে না।কোন কলেজে পড়ার জন্য যদি নিজেদের ধর্মকে অবহেলা করতে হয় তবে হয়ত কলেজের পাসের সার্টিফিকেটটা পাওয়া যাবে কিন্তু পরকালে পাস করবার মত কোন সার্টিফিকেট পাওয়া যাবে কি?এটাই প্রশ্ন!!!
সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে নভেম্বর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:৫৫