ভালই তো কেটে যাচ্ছিল জিবনটা। খাচ্ছিলাম, দাচ্ছিলাম, ঘুরছিলাম। কেন হঠাৎ করেই এমন হল? মনে হল যেন সব কিছুই উল্টে গেল হঠাৎ করেই। আমার সামনের এই পরিচিত পৃথিবীটা হঠাৎ করেই যেন অপরিচিত মনে হতে লাগলো।
তাকে আমি প্রথম দেখেছিলাম এক বিকালে। সেই বিকালের সবকিছুই আজো আমার স্পষ্ট মনে আছে। আমাদের এক বান্ধবীর বিয়ে উপলক্ষে আমরা সব বন্ধু-বান্ধবীরা মিলে ঘুরছিলাম বসুন্ধরা সিটিতে। খুজছিলাম কি দেয়া যায় উপহার হিসেবে। আমি যথারীতি সবাইকে জ্বালিয়ে বেরাচ্ছিলাম। এমন ই সময় একটা দোকানে দেখলাম তাকে। মনে হল যেন আমার ই জন্য সেখানে সে অপেক্ষা করে আছে আজীবন ধরে। প্রথম দেখাতে তো দৃষ্টি সরাতে পারলাম না অনেকক্ষন। তার দিকে তাকিয়ে ছিলাম অপলক কতক্ষন ধরে আমি নিজেও জানি না। মনে হল যেন তার দিকে তাকিয়ে থাকার জন্যই আমার জন্ম। এভাবে কতক্ষন তাকিয়ে ছিলাম জানি না, কিন২ চাচ্ছিলাম যেন এই মূহুর্ত টা কখন ও শেষ না হয়। আজীবন তাকিয়ে থাকতে পারতাম তার দিকে আমি, কিন্তু হুশ ফিরলো কামরুলের ডাকে।
তারপর থেকে সময় পেলেই চলে যেতাম সেই দোকানের সামনে। তাকিয়ে থাকতাম অপলক। সে ও যেন আমার ই জন্য সেখানে অপেক্ষা করে থাকতো। প্রতিদিন ই।
ছাত্র ভাল আমি কোনকালেই ছিলাম না। তবে একেবারে যে খারাপ ছিলাম তা ও কেউ বলতে পারবে না। কিন্তু তাকে দেখার পর থেকে সব কিছু শিকেয় উঠলো। পড়াশুনা, খাওয়াদাওয়া, ঘুম সব। রেজাল্ট অনবরত খারাপ হতে লাগলো। মা-বাবার রক্তচক্ষু, বন্ধু-বান্ধবের জিজ্ঞাসা সব কিছ সামনেই পড়তে লাগলাম। কিন্তু এই সব বাধা পার করেও তাকে প্রতিদিন ই দেখতে যেতাম। তার দোকানের সামনে দাঁড়িয়ে থাকার মধ্যেই যেন ছিল জিবনের সার্থকতা আমার। সে ও যেন ধীরে ধীরে আমার দিকে চোখ তুলে তাকাতে লাগলো।
তারপর ধীরে ধীরে কথা হল তার সাথে। তার সাথে গল্প করে সারাটা দিন ই কাটিয়ে দিতে লাগলাম। পড়াশুনা সম্পূর্ণভাবে ছেড়ে দিলাম। এইভাবে পড়াশুনা করার কোন মানেও অবশ্য ছিল না। জানতাম এই রেজাল্ট নিয়ে কখনোই কিছু করতে পারবো না। তাই ঠিক করলাম তার হাত ধরে পালিয়ে যাবো। দিনতারিখ সবকিছুই ঠিক করলাম।
তারপর ও তার সাথে প্রতিদিন দেখা করা থেমে থাকলো না। প্রতিদিন ই তার সাথে সারাটা দিন কাটাতাম। কিন২ যখন বাসায় আসতাম তখন সময় যেন আর কাটতোই না। খালি সেই দিনের কথা ভাবতাম যেদিন তাকে নিয়ে চলে যাব আমি। সে হবে শুধুই আমার। সময় যেন যেত শামুকের পিঠে চড়ে। আস্তে ধীরে গড়িয়ে গড়িয়ে।
অবশেষে আগামীকাল সেইবিশেষ দিন। কাল তার সাথে চিরজীবনের জন্য সবকিছুই ছেড়ে চলে যাব না জানার দেশে। পড়ে থাকবে এই চেনা জগতের সবকিছু।
*ইহা সম্পূর্ণভাবেই একটা প্রেমের গল্প। এর সাথে আমার বাস্তব জীবনের কোন সম্পর্ক খুজতে গেলে নিজ দায়িত্বে খুজবেন। আমার কোন দায়িত্ব নাই আগেই বইলা দিলাম।
*২য় পর্ব সম্ভবত আগামীকাল দিব। কিন২ বিরাট আইলসা মানুষ তো তাই কোন গ্যারান্টি নাই।
*আমার ব্লগে লেখা এই প্রথম গল্পটা উৎসর্গ করলাম প্লাস-মাইনাসকে। আমার সাধের রাতুল ভাই। যাকে দেখে আমার এই ব্লগজগতে আগমন। আর চেয়ারম্যান ভাইকেও। আমার প্রিয় ব্লগার।