somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আমার আত্মহত্যার গল্প

২০ শে ডিসেম্বর, ২০১২ ভোর ৬:০২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আচ্ছা মানুষ আত্মহত্যা কেন করে?

দাঁড়িয়ে ছিলাম বনানী রেল ক্রসিং এ। সামনে দিয়ে একটা ট্রেন যাচ্ছিল জন্য গাড়ি গুলো সব দাঁড়িয়ে আছে। ট্রেনটা চলে গেলেই রাস্তা পার হয়ে ভার্সিটি যাব। এমন ই সময় হঠাৎ করেই প্রশ্নটা মাথায় আসলো।

এই যে পেপার খুললে কিছুদিন পর পর ই যে একেকজনের আত্মহত্যার খবর পাওয়া যায়, ঠিক কি কারণে তারা একেকজন এই পৃথিবী ছেড়ে যেতে চায়? অনেক সময় শুনি যে চাকরী না পেয়ে অথবা ইভিটিজিং এর স্বীকার হয়ে বা রিলেশন ব্রেকআপ হওয়ার পরেও অনেকেই।

কিন্তু শুধুই কৌতুহলের বশবর্তী হয়ে কি কেউ ই আত্মহত্যা করেছে আজ পর্যন্ত? এর পিছনে আদৌ কোন যুক্তি কি আছে?

তাহলে আমার কেন হঠাৎ করেই এইরকম অদ্ভূত ইচ্ছা হচ্ছে? ইচ্ছা করছে সামনে দিয়ে চলে যেতে থাকা ট্রেনের নিচে লাফ দিতে? মারা গেলে আসলে কি হয় তা জানতে খুব কৌতুহল হচ্ছে।

এমন তো না যে আমার জীবনে কখনো কোন কষ্ট আসে নি। অনেক কষ্টই তো পেয়েছি এই জীবনে।

সেই ১৬বছর বয়সে বাবাকে হারিয়ে যখন দিশেহারা অবস্থা অথবা তিথির সাথে ৩বছরের রিলেশনটা যখন ভেঙ্গে গেল। সেই সময় গুলোই তো আমার জীবনের সবচাইতে দুঃখের সময় ছিল বলে মনে হয়। কই, তখন ও তো অন্তত এইরকম ইচ্ছা করে নি। তখন তো মনের যতটুক ইচ্ছা, অনুপ্রেরণা ছিল সব নিয়েই ঝাপিয়ে পড়েছিলাম সেই সময় গুলো যাতে কাটিয়ে ওঠা যায় সেই চেষ্টায়।

কেউ আত্মহত্যা করে মারা যাওয়ার খবর পেলে সেই মানুষটার জন্য কেমন যেন একটা করুণা অনুভব করতাম সবসময়ই। ভাবতাম যে যত কষ্টই পাক না কেন মারা কেন যেতে চাবে একটা মানুষ। সবসময়ই আত্মহত্যার বিরুদ্ধেই কথা বলে এসেছি আমি সবজায়গাতেই। আর নিজের যত কষ্টই আসুক না কেন আত্মহত্যার কথা তো কোনদিন মাথাতেও আসে নি আমার।

তাহলে এখন কেন এইরকম ইচ্ছা হচ্ছে?

অন্তত এখন তো কোন কারণে দুঃখ কষ্টের মধ্যে আছি বা মন খারাপ এমন তো না। ভার্সিটির পড়াশুনার পাট চুকতে এখন ও আরো ১বছরের মত বাকি কিন্তু এর মধ্যেই ৩জায়গা থেকে চাকরীর অফার পেয়ে বসে আছি, আঁখির সাথে সম্পর্কটাও আজ প্রায় দেড় বছর হতে চলল। ঝগড়া যে করি না তা না, কিন্তু খুব সিরিয়াস ধরণের কোন কিছু তো হয় নি এর মধ্যে। তাহলে কেন হঠাৎ করেই এরকম ইচ্ছা করছে? কেমন যেন এক ধরণের কৌতুহল অনুভব করছি ভেতরে ভেতরে।

খুব বেশি কৌতূহল হচ্ছে আসলে। জানতে ইচ্ছা করছে যে মারা গেলে আসলে কি হয়। সেখানেই কি আসলে সব কিছু শেষ? এই যে পৃথিবীতে আমরা এতদিন থাকলাম, এত কিছু করলাম সব কিছুই? একটা মানুষ এরকম ভাবে চিরদিনের জন্য হারিয়ে যায় কিভাবে?

এইসব ই উল্টাপাল্টা চিন্তার ভিতরে এতটাই হারিয়ে গেছিলাম যে ট্রেনটা যে কোনদিক দিয়ে চলে গেছে সেইটাও খেয়াল করি নাই। অদ্ভূত একটা ঘোরের ভিতরে চলে গেছিলাম।

ঘোর থেকে ফিরলাম আসিফের ডাকে। "ওই হালা। কিতারে, এইখানেই খাড়ায়া থাকবি নি এমনে? পরীক্ষা আছে আজকে সেই খেয়াল আছে? ভ্যাবদা মারলি ক্যা? হাটা দে। শুরু হইয়া যাইব পরীক্ষা।"

পরীক্ষার চিন্তা মাথায় ফেরত আসতেই এইসব হাবিজাবি চিন্তা মাথা থেকে একদম উধাও হয়ে গেল। আবার কোনদিন এই রেললাইনের পাড়ে দাড়িয়েই হয়তোবা ফিরে আসবে চিন্তাগুলো আবার। তখনের জন্যই তোলা থাক না হয়।


* কি যে আসলে লিখলাম এইটা নিজেই আসলে বুঝলাম না। :| তাই ভাল খারাপ কেমন হইছে জানাইলে খুশি হইতাম। :D
* ব্লগে লেখা আমার এই দ্বিতীয় গল্পটা উৎসর্গ করলাম ইমতি, রঙ্গু আর নিটোল কে। :) তোরা ৩টা না থাকলে এই পর্যন্ত জীবনটা কিভাবে যে পার করতাম আল্লাহ জানে।
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ রাত ১২:০৫
১০টি মন্তব্য ১০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

যুক্তরাষ্ট্রে ইসরাইল বিরোধী প্রতিবাদ বিক্ষোভ

লিখেছেন হাসান কালবৈশাখী, ০৩ রা মে, ২০২৪ সকাল ৮:০২

গাজায় হামাস উচ্ছেদ অতি সন্নিকটে হওয়ায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে নিউইয়র্ক ও লসএঞ্জেলসে কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পরেছিল। আস্তে আস্তে নিউ ইয়র্ক ও অন্যান্ন ইউনিভার্সিটিতে বিক্ষোভকারীরা রীতিমত তাঁবু টানিয়ে সেখানে অবস্থান নিয়েছিল।


... ...বাকিটুকু পড়ুন

৫০১–এর মুক্তিতে অনেকেই আলহামদুলিল্লাহ বলছে…

লিখেছেন বিচার মানি তালগাছ আমার, ০৩ রা মে, ২০২৪ বিকাল ৩:০০



১. মামুনুল হক কোন সময় ৫০১-এ ধরা পড়েছিলেন? যে সময় অনেক মাদ্রাসা ছাত্র রাজনৈতিক হত্যাকান্ডের শিকার হয়েছিল। দেশ তখন উত্তাল। ঐ সময় তার মত পরিচিত একজন লোকের কীভাবে মাথায় আসলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

মেহেদীর পরিবার সংক্রান্ত আপডেট

লিখেছেন ইফতেখার ভূইয়া, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ৮:৪৯


মার্চ মাস থেকেই বিষয়টি নিয়ে ভাবছিলাম। ক'দিন আগেও খুলনায় যাওয়ার ইচ্ছের কথা জানিয়েও আমার বিগত লিখায় কিছু তথ্য চেয়েছিলাম। অনেক ইচ্ছে থাকা সত্ত্বেও মেহেদীর পরিবারকে দেখতে আমার খুলনা যাওয়া হয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

'চুরি তো চুরি, আবার সিনাজুরি'

লিখেছেন এমজেডএফ, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৮


নীলসাধুকে চকলেট বিতরণের দায়িত্ব দিয়ে প্রবাসী ব্লগার সোহানীর যে তিক্ত অভিজ্ঞতা হয়েছিল তা বিলম্বে হলেও আমরা জেনেছি। যাদেরকে চকলেট দেওয়ার কথা ছিল তাদের একজনকেও তিনি চকলেট দেননি। এমতাবস্থায় প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বরাবর ব্লগ কর্তৃপক্ষ

লিখেছেন নীলসাধু, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১১:২২

আমি ব্লগে নিয়মিত নই।
মাঝে মাঝে আসি। নিজের লেখা পোষ্ট করি আবার চলে যাই।
মাঝেমাঝে সহ ব্লগারদের পোষ্টে মন্তব্য করি
তাদের লেখা পড়ি।
এই ব্লগের কয়েকজন ব্লগার নিজ নিক ও ফেইক... ...বাকিটুকু পড়ুন

×