somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সাংবাদিক প্রবীর সিকদার খুন হলে আপনি কি লিখবেন? (ফেসবুকে নিজের ক্ষোভ প্রকাশ)

২১ শে জুলাই, ২০১৫ রাত ১০:৫৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

সাংবাদিক প্রবীর সিকদার খুন হলে আপনি কি লিখবেন ?

ধরুন আপনি প্রিন্ট বা ইলেকট্রনিক বা অনলাইন মিডিয়ার সংবাদ কর্মী। আবার এমনও হতে পারে আপনি ফেসবুক বা টুইটার বা ব্লগে নিয়মিত লিখে যাচ্ছেন। এরই মধ্যে খবর পেলেন, একাত্তরের অপকর্ম ফাঁস করে দেওয়ার অপরাধে দুর্ধর্ষ রাজাকার নুলা মুসা ওরফে প্রিন্স ড. মুসা বিন শমসেরের ভাড়াটে সন্ত্রাসীরা সাংবাদিক প্রবীর সিকদারকে খুন করেছে। হটাত এই খবরটি পেয়ে কি লিখবেন আপনি ? আপনি তো আর অখ্যাত প্রবীর সিকদারকে চিনেন না, এমনকি জানেনও না ! আপনার লেখার সুবিধার কথা বিবেচনা করেই আমি নিজেই কিছু তথ্য দিয়ে রাখছি। যত্ন করে কাছেই রাখবেন; কাজে লাগতে পারে যেকোনো সময় :

একাত্তরে রাজাকাররা ধরে নিয়ে গেছে তার বাবাকে। বাবার লাশও পাওয়া যায়নি। মুক্তিযুদ্ধে বাবা কাকা দাদুসহ পরিবারের অনেককেই হারান তিনি। বাবার লাশ খুঁজতে খুঁজতে পুরো বাংলাদেশটিই হয়ে গেছে তার বাবার কবরস্থান। একাত্তরে ঘরবাড়ি হারিয়েছেন, আজো তিনি উদ্বাস্তু। এখন তিনি এক জেলা থেকে আরেক জেলায় ছুটছেন মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় আধুনিক গণতান্ত্রিক অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়ার মাধ্যমে তার বাবাসহ ৩০ লাখ শহীদের কবরস্থানের মর্যাদা রক্ষার প্রত্যয়ে। তিনি সাংবাদিক প্রবীর সিকদার। রাজাকার নুলা মুসা ওরফে ড. মুসা বিন শমসের, ফাঁসির দণ্ডাদেশ প্রাপ্ত পলাতক আসামী বাচ্চু রাজাকার ওরফে মাওলানা আবুল কালাম আজাদসহ দুর্ধর্ষ কয়েক রাজাকারের একাত্তরের ইতিবৃত্ত দৈনিক জনকণ্ঠে লেখার অপরাধে ২০০১ সালের ২০ এপ্রিল বোমা-গুলিতে উড়ে গেছে তার একটি পা, চাপাতির কোপে স্বাভাবিক কর্মক্ষমতা নষ্ট হয়েছে একটি হাতের। শরীরে বয়ে বেড়ান বোমার অসংখ্য স্প্লিনটার, যা তাকে প্রতি মুহূর্তে যন্ত্রণা দেয়।
প্রবীর সিকদারের জন্ম ফরিদপুরের ঐতিহ্যবাহী কানাইপুর সিকদার বাড়িতে ১৯৬২ সালের ১৫ মার্চ। পিতা শহীদ পরেশ চন্দ্র সিকদার, মাতা স্বর্গীয় দুর্গা রানী সিকদার। স্ত্রী অনিতা সিকদার, দুই ছেলে সুপ্রিয় ও পুলক। তার দুই ভাই সুবীর সিকদার, পীযূষ সিকদার আর দুই বোন দেবী ও দীপ্তি। প্রবীর সিকদার কর্মজীবন শুরু করেছিলেন তার পরিবারের প্রতিষ্ঠা করা কানাইপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা দিয়ে। তিনি কানাইপুরের বেগম রোকেয়া কিশলয় বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, কিশলয় বিদ্যানিকেতন ও শহীদ দীনেশ সিকদার বিদ্যাপীঠের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রথম প্রধান শিক্ষক। ফরিদপুরে সাপ্তাহিক জাগরণ, আল-মোয়াজ্জিন ও দৈনিক ঠিকানায় তার সাংবাদিকতার হাতেখড়ি। যশোরের দৈনিক কল্যাণ, ঢাকার দৈনিক ভোর ও আজকের কাগজের ফরিদপুর প্রতিনিধি ছিলেন প্রবীর। একসময় তিনি দৈনিক জনকণ্ঠের স্টাফ রিপোর্টার ও সাপ্তাহিক জয় জনতার জয়ের সম্পাদক-প্রকাশক ছিলেন। প্রবীর সিকদার দৈনিক সমকালের সিনিয়র সাব এডিটর ও দৈনিক কালের কণ্ঠের প্রতিষ্ঠাকালীন মফস্বল সম্পাদক ছিলেন। ২০১৩ সালের ১৭ মার্চ থেকে তিনি ঢাকা থেকে প্রকাশিত দৈনিক বাংলা ৭১ ও অনলাইন নিউজ পোর্টাল উত্তরাধিকার ৭১ নিউজের সম্পাদক-প্রকাশক। তার আগে থেকেই প্রবীর সিকদার মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক ত্রৈমাসিক উত্তরাধিকার ৭১-এর সম্পাদক-প্রকাশক। তিনি সারাদেশের মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় শানিত সাংবাদিকদের নিয়ে একটি মিডিয়া হাউস গড়ে তুলতে আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।
প্রবীর সিকদার ছড়াও লেখেন। তার সাড়া জাগানো ছড়াগ্রন্থ ‘বর্ণমালায় বাংলাদেশ’ ও 'আমি শালা রাজাকার'। এছাড়া তার দুটি নিবন্ধের বই রয়েছে। বই দুটির নাম 'আমার বোন শেখ হাসিনা' ও ‘বাংলাদেশ, শুধুই আমার বাবার কবরস্থান’।

সর্বশেষ এডিট : ২১ শে জুলাই, ২০১৫ রাত ১০:৫৯
১টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

রাফসানের মা হিজাব করেন নি। এই বেপর্দা নারীকে গাড়ি গিফট করার চেয়ে হিজাব গিফট করা উত্তম।

লিখেছেন লেখার খাতা, ১১ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৩


ছবি - সংগৃহীত।


ইফতেখার রাফসান। যিনি রাফসান দ্যা ছোট ভাই নামে পরিচিত। বয়স ২৬ বছর মাত্র। এই ২৬ বছর বয়সী যুবক মা-বাবাকে বিলাসবহুল গাড়ি কিনে দিয়েছে। আমরা যারা... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছাঁদ কুঠরির কাব্যঃ এঁটেল মাটি

লিখেছেন রানার ব্লগ, ১২ ই মে, ২০২৪ রাত ১:৫৬




শাহাবাগের মোড়ে দাঁড়িয়ে চা খাচ্ছিলাম, মাত্র একটা টিউশানি শেষ করে যেন হাপ ছেড়ে বাঁচলাম । ছাত্র পড়ানো বিশাল এক খাটুনির কাজ । এখন বুঝতে পারি প্রোফেসরদের এতো তাড়াতাড়ি বয়স... ...বাকিটুকু পড়ুন

আসুন সমবায়ের মাধ্যমে দারিদ্র বিমোচন করি : প্রধানমন্ত্রী

লিখেছেন স্বপ্নের শঙ্খচিল, ১২ ই মে, ২০২৪ ভোর ৪:১০



বিগত শুক্রবার প্রধানমন্ত্রী নিজ সংসদীয় এলাকায় সর্বসাধারনের মাঝে বক্তব্য প্রদান কালে উক্ত আহব্বান করেন ।
আমি নিজেও বিশ্বাস করি এই ব্যাপারে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী খুবই আন্তরিক ।
তিনি প্রত্যন্ত অন্চলের দাড়িয়ারকুল গ্রামের... ...বাকিটুকু পড়ুন

পাইলট ফিস না কী পয়জনাস শ্রিম্প?

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১২ ই মে, ২০২৪ সকাল ৭:৪০

ছবি সূত্র: গুগল

বড় এবং শক্তিশালী প্রতিবেশী রাষ্ট্রের পাশে ছোট ও দূর্বল প্রতিবেশী রাষ্ট্র কী আচরণ করবে ? এ নিয়ে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক অধিক্ষেত্রে দুইটা তত্ত্ব আছে৷৷ ছোট প্রতিবেশি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছেলেবেলার অকৃত্রিম বন্ধু

লিখেছেন ঢাবিয়ান, ১২ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৯

খুব ছোটবেলার এক বন্ধুর গল্প বলি আজ। শৈশবে তার সাথে আছে দুর্দান্ত সব স্মৃতি। বন্ধু খুবই ডানপিটে ধরনের ছিল। মফস্বল শহরে থাকতো। বাবার চাকুরির সুবাদে সেই শহরে ছিলাম... ...বাকিটুকু পড়ুন

×