somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ইসরায়েলের ঘৃণ্য পরিকল্পনা, হামাসের হামলা আর অদ্ভুত ধর্মবিশ্বাসের অকল্পনীয় উপাখ্যান:

০৬ ই নভেম্বর, ২০২৩ বিকাল ৫:১৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


নিজেদের অপ্রতুল সক্ষমতা, অপূরণীয় ক্ষয়ক্ষতির পরিণাম জেনেও হামাস কেন ইসরায়েলে হামলা করল? কেন তারা জেনেশুনে নিজেদের ও নিজেদের পরিবারের সদস্যদের নিশ্চিত ধ্বংসের মুখে ঠেলে দিল? কেন তাদের আবাসভূমিকে ধ্বংসস্তুপে পরিণত করার সুযোগ ইসরায়েলকে দিল? এ ব্যাপারে আলোকপাত করার আগে একটি কাহিনি পড়ে আসি চলুন। কথা দিচ্ছি, পোস্টটি পড়ে নিরাশ হবেন না বা পড়তে গিয়ে বিরক্তির কারণ ঘটবে না। বরং পড়ার পর এক আশ্চর্য কাহিনির ভেতর থেকে বের করে আনতে পারবেন ঘৃণ্য ইহুদি ষড়যন্ত্রের এক অভাবনীয় ইতিহাস।

চলুন ফ্ল্যাশব্যাক-এ যাওয়া যাক।

১৯.. সাল। প্রায় আড়াই বিলিয়ন ডলার খরচ করে মেডুসা নামক একটি স্যাটেলাইট তৈরী করল মার্কিন ডিফেন্স ডিপার্টমেন্ট।

মেডুসার মত ব্যয়বহুল স্যাটেলাইট তৈরীর লক্ষ্য: মাটি-পাথর ভেদ করে সমস্ত কিছুর ছবি তুলতে পারবে মেডুসা। ফাঁস করে দিতে পারবে চীন আর রাশিয়ার সমস্ত আণ্ডারগ্রাউণ্ড বাঙ্কার আর সাইলোর অবস্থান।
মহাকাশে লঞ্চ করার আগে ভার্চুয়াল টেস্টে কংক্রিট আর স্টিলের তৈরী বাঙ্কার ডিটেক্ট করতে সক্ষম হয়েছে ওটা। ভেতরে কী ধরনের ক্ষেপণাস্ত্র লুকানো আছে সেটা বলতে পেরেছে; এমনকি মিসাইলের কমাণ্ড বাঙ্কার, সাপোর্ট টানেল, পাওয়ার ক্যাবল এবং কমিউনিকেশন লাইনও চিহ্নিত করতে পেরেছে স্পষ্টভাবে। বিজ্ঞানীদের ধারণা যদি সঠিক হয়, তাহলে মহাশূন্য থেকে সাগরে লুকিয়ে থাকা সাবমেরিন ডিটেক্ট করতে পারবে মেডুসা, মাইনফিল্ডের ম্যাপ তৈরী করতে পারবে, করতে পারবে আরও অনেক কিছু।

মেডুসা মহাকাশে লঞ্চ করার পরপরই একটি অনাকাঙ্ক্ষিত দুর্ঘটনা ঘটে গেল। পুরনো একটা ম্যাগনেটিক-টর্ক রেঞ্চ, পঁচিশ বছর আগে একটা স্পেস-ওয়াকের সময় একজন নভোচারীর হাত থেকে খসে পড়েছিল ওটা। স্রেফ একটা জঞ্জাল.. এমন অসংখ্য প্রাকৃতিক ও মনুষ্যসৃষ্ট জঞ্জালে ভরে আছে মহাশুন্য। কিন্তু সামান্য জঞ্জালই যা ঘটাল তা অবিশ্বাস্য! রেঞ্চটা সরাসরি আঘাত হানল মেডুসাতে। স্যাটেলাইটটাকে মহাকাশ থেকে পৃথিবীর দিকে রওনা করিয়ে দিল সেটা।

পৃথিবীর দিকে পাক খেতে খেতে নেমে যেতে থাকল মেডুসা। নর্দার্ন আফ্রিকার ওপর দিয়ে দক্ষিণ-পুবে যেতে যেতে মরার আগে উত্তর আফ্রিকার ওপর দিয়ে চাদ, সুদান, ইথিওপিয়া, জিবুতি ও সোমালিয়াসহ পুরো দুহাজার বর্গমাইল এলাকার ছবি তুলল সে।

১৯.. সাল। ইসরাইলে তখন প্রতিরক্ষামন্ত্রী হিসেবে আছে রাবাক। সুকৌশলে ইহুদিদের কাছে নিজের কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে সে ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে। তার ইচ্ছা, জেরুসালেমে মুসলিমদের 'ডোম অভ রক' ভেঙে দিয়ে সলোমনের তৃতীয় মহামন্দির স্থাপন করবে। তার পরিকল্পনায় মধ্যপন্থী সংখ্যাগরিষ্ঠরা তার দিকে ঝুঁকে গেছে। প্রায় নিশ্চিতভাবে ধরা যায় পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী হতে যাচ্ছে সে। গোপনে সে তার নিজস্ব অর্থায়ন ও প্রভাবে একটি ধর্মীয় সন্ত্রাসী বাহিনী গড়ে তুলেছে। সেই বাহিনীর কাজ তার গোপন এজেণ্ডাগুলো বাস্তবায়ন করা। ফ্যানাটিক এই বাহিনীর নিবেদিতপ্রাণ সদস্যদেরকে নিজে বেছে বেছে বিভিন্ন সংস্থা থেকে জোগাড় করেছে সে। বাহিনীর সবাই ধর্মীয় উন্মাদনায় নিজ মাতৃভূমি ইসরায়েলের জন্য আত্মোৎসর্গের শপথ নিয়েছে।

রাবাক মোসাদের একজন চর-এর মাধ্যমে জেনে ফেলল, আফ্রিকা বিষয়ক মার্কিন উপ-সচিব সংশ্লিষ্ট সংস্থার একজন অফিসিয়ালের কাছ থেকে ঘুষের মাধ্যমে মেডুসা স্যাটেলাইটের ছবি জোগাড় করে নিয়েছেন। সেই ছবিতে কী কী আছে সেটাও রাবাক জেনে গেছে সেই চর-এর মাধ্যমে। ছবিতে কী আছে সে ব্যাপারে জানার পর সে এক উচ্চাভিলাষী পরিকল্পনা প্রণয়নের শপথ নিয়েছে। যে পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে পারলে সে হয়ে উঠবে দুনিয়ার এক অজেয় শক্তি। সমস্ত মধ্যপ্রাচ্যের মাথার ওপর ছড়ি ঘোরাবে সে।

এদিকে মার্কিন আন্ডারসেক্রেটারি মেডুসা স্যাটেলাইটের তোলা কিছু ছবি নিয়ে দেখা করলেন একজন বিখ্যাত আর্কিওলজিস্টের সাথে। উদ্দেশ্য, উত্তর ইরিত্রিয়ার পাহাড়ি অঞ্চলে হীরার খনি খুঁজে বের করা। স্যাটেলাইটের ছবির মাধ্যমে যেটা দেখা গেছে সদ্য স্বাধীন হওয়া হতদরিদ্র দেশ ইরিত্রিয়ায়। বিভিন্ন অযোগ্যতার কারণে অনেকদিন ধরেই উপ-সচিবের ওপর অসন্তুষ্ট মার্কিন প্রশাসন। তাই মেডুসার ফটোগ্রাফগুলোর সাহায্যে তিনি নিজের হারানো ইমেজকে রক্ষার সংকল্প করলেন। খনি খুঁজে বের করে সেখান থেকে হীরা উদ্ধার করে দিতে পারলে ইরিত্রিয়ার হতদরিদ্র জনগণের বিশাল উপকার হবে- এতে তার বিরুদ্ধে ওঠা অযোগ্যতার অভিযোগকে তিনি ঢেকে দিতে পারবেন আর তার চেয়ারও রক্ষা পাবে।

কিন্তু কিছু ব্যক্তিগত সমস্যা আর হীরার খনি ওখানে আদৌ আছে কি না এমন সন্দেহের কারণে আর্কিওলজিস্ট উপ-সচিবের প্রস্তাবে খনি খুঁজতে আফ্রিকায় যাওয়ার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করল। এ কাজের জন্য অন্য লোক খুঁজতে বলে উপ-সচিবকে হতাশ করে তার প্রস্তাব বাতিল করে দিল।

এদিকে রাবাক তার সন্ত্রাসী বাহিনীকে পাঠিয়েছিল মার্কিন আন্ডারসেক্রেটারির ওপর নজর রাখার জন্য। তারা উপ-সচিবকে সব জায়গায় অনুসরণ করছিল। ফলস্বরূপ গোপন মাইক্রোফোনের সাহায্যে উপ-সচিব আর আর্কিওলজিস্টের পুরো আলোচনাটা শুনে ফেলল তারা।

আর্কিওলজিস্ট খনি খুঁজতে যেতে রাজী নয়। এদিকে রাবাকের গোপন উদ্দেশ্য পূরণ করতে হলে খনি খুঁজে বের করা ছাড়া উপায় নেই। তাই পরিকল্পনা করে আর্কিওলজিস্টের একজন প্রাণপ্রিয় ঘনিষ্ঠ বন্ধুকে কিডন্যাপ করল রাবাকের বাহিনী। তারপর বাধ্য করল তাকে আফ্রিকায় গিয়ে খনি খুঁজে বের করতে।

আফ্রিকার ইরিত্রিয়ায় গিয়ে অনেক প্রতিকূল বাধা অতিক্রম করে আর্কিওলজিস্ট সেই খনি খুঁজে বের করতে সক্ষম হলো। কিন্তু সেখানে অনেক আগেই কেউ খনি খুঁড়ে হীরা খোঁজাখুঁজি করেছে। খনিটা এখন পরিত্যক্ত। তারপর অনেক হিসাব-নিকাশ করে কিছুটা দূরে আরেকটা খনি খুঁজে পেল সে। প্রায় তিন হাজার বছর আগে সেই খনিটা খনন করা হয়েছিল। সেই প্রাচীন খনির ব্যাপারে তার সামনে এলো একটি চমকপ্রদ কাহিনি। কাহিনিটি সে জানতে পারল ছদ্মপরিচয়ে তার সাথে যোগ দেওয়া ইসরায়েলের এক মোসাদ এজেন্টের কাছে। জানতে পারল প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাবাকের আসল উদ্দেশ্য খনিটাতে হীরা অনুসন্ধান নয় বরং অন্য কিছু। সেই অন্য উদ্দেশ্যের ব্যাপারে বিস্তারিত শুনে বিস্ময়ে চমকে উঠলো আর্কিওলজিস্ট!

কী সেই উদ্দেশ্য?

ইয়োরাম রাবাকের আসল উদ্দেশ্য বলতে শুরু করল মোসাদ এজেন্ট।

বাইবেলের ওল্ড টেস্টামেন্টে যে গল্প বলা হয়েছে তার চেয়ে এটা একেবারেই আলাদা। রাজা সলোমন (হযরত সুলাইমান আলাইহিস সালাম) ও রানী শেবা (রানী বিলকিস) থেকে কাহিনির শুরু।

ছোট্ট একটা কৌশল খাটিয়ে রানী শেবা-কে বিছানায় নেন সলোমন। একসঙ্গে রাত কাটাতে বাধ্য করেন। এর ফলে গর্ভবতী হয়ে পড়েন শেবা। রানী যখন ইথিওপিয়ায় ফিরে আসেন তখন তার কোলে সদ্যজাত এক সন্তান, মেনেলিক... সলোমনের উত্তরাধিকারী। বাইশ বছর বয়সে ঘটনা জানতে পেরে সেই সন্তান ছুটে যায় জেরুসালেমে, বাবা সলোমনের সাথে দেখা করতে। সেখানে এক উচ্চপদস্থ পুরোহিতের সাথে পরিচয় হয় তার। পুরোহিত তাকে জানায়- ঈশ্বর চান মেনেলিক তাঁর বাণীকে ইথিওপিয়ায় নিয়ে যাক, যাতে ওদের ধর্মের ভিত্তিপ্রস্তর ইসরায়েলের পরিবর্তে আফ্রিকায় প্রতিষ্ঠিত হয়। তারপর জেরুসালেমের মহামন্দির থেকে আর্ক অভ দ্য কাভানেন্ট চুরি করে মেনেলিক, ওটাকে নিয়ে আসে ইথিওপিয়ায় নিজের সাম্রাজ্যে।

আর্ক অভ দ্য কাভানেন্ট হচ্ছে স্বর্ণের তৈরি একটা বাক্স বা চেস্ট, ইহুদিরা যেটায় টেন কমান্ডমেন্টস রাখতো। আর টেন কমান্ডমেন্টস হচ্ছে মানুষের জন্য সরাসরি ঈশ্বরের কাছ থেকে জারি হওয়া দশটি নির্দেশনা। দুটো শিলালিপি বা স্টোন ট্যাবলেটে খোদাই করা অবস্থায় পাঠানো হয়েছিল ওগুলো। ট্যাবলেট দুটো সিনাই পাহাড় থেকে নামিয়ে আনেন হযরত মূসা (আঃ)। কথিত আছে ইহুদিদের অধঃপতন দেখে ওগুলো তিনি ভেঙে টুকরো করে ফেলেন। তিনি যখন পাহাড়ে উঠে আল্লাহর সঙ্গে কথা বলছেন, মানুষের জন্য আল্লাহর বিধি-বিধান বুঝে নিচ্ছেন, ওই সময় ইহুদীরা পাপাচারে ব্যস্ত ছিল, ব্যস্ত ছিল মূর্তি বানানোর কাজে। তাই রেগে গিয়ে ট্যাবলেটগুলো ভেঙে ফেলেন তিনি। এরপর ট্যাবলেটের ওই ভাঙা টুকরোগুলো একটা আধার বা আর্ক-এ ভরে নেয় ইহুদীরা। যেখানেই গেছে ওরা, সঙ্গে করে নিয়ে গেছে ওটাকে। তারপর যখন থিতু হলো কানান-এ, আর্কটা রাখল সলোমনের মন্দিরে। বহুকাল ওখানেই ছিল ওটা। তারপর কখন কীভাবে হারিয়ে গেল, তা সঠিকভাবে বলতে পারে না কেউ।

রাবাকের বিশ্বাস, আর্কটা ওই খনিতে আছে। কৌশলে সেটা হাসিল করতে চায় সে।

আর্কটা রাবাকের হাতে পড়লে সর্বনাশ হবে। জেরুসালেমে মুসলমানদের প্রথম কেবলা ভেঙে দেওয়ার অজুহাত পাবে সে। ওখানে সলোমনের তৃতীয় মহা-মন্দির গড়ে তুলবে প্রাচীন আমলের অনুকরণে। ওখানে রাখবে আর্কটা। মুসলমানদের মক্কা শরীফের মত ইহুদীদের সবচেয়ে বড় তীর্থপীঠ হবে ওটা। লক্ষ লক্ষ মানুষ জড়ো হবে দুনিয়ার সব প্রান্ত থেকে। ওদের সাহায্য নিয়ে ভয়ঙ্কর একটা শক্তিতে পরিণত হবে রাবাক। ধর্মীয় প্রতীককে সামনে রেখে সমস্ত ইহুদীদের প্রতিনিধি বনে যাবে সে। মধ্যপ্রাচ্যে একচ্ছত্র আধিপত্য হবে তার। ইহুদিদেরকে ধর্মের নেশায় বুঁদ করে যা খুশি তাই করে নিতে পারবে। মধ্যপ্রাচ্য হয়ে উঠবে উত্তপ্ত একটি আগ্নেয়গিরি। মুসলমানদের সাথে যুদ্ধ-বিগ্রহ চলতেই থাকবে, মুসলমানদেরকে ইসরায়েলের মাটি থেকে উৎখাত করা হবে, পুরো ইসরায়েলে ফিলিস্তিনের অস্তিত্বই রাখবে না সে।

(উপরোক্ত কাহিনিটি একটি থ্রিলার বই থেকে নেওয়া, যেটি বেশ অনেক আগে লেখা হয়েছিল। বইটি হচ্ছে ফিলিপ মার্সার সিরিজের অ্যাকশন এডভেঞ্চার থ্রিলার 'দ্য মেডুসা স্টোন... লেখক, জ্যাক দু ব্রুল; যা সেবা থেকে মাসুদ রানা সিরিজে 'চাই ঐশ্বর্য' নামে প্রকাশিত হয়েছে। মূল কাহিনি ঠিক রেখে কিছু শব্দ ও বাক্য আমি সংযোজন ও বিয়োজন করেছি)


এবার আসি বর্তমান প্রেক্ষাপটে।

০৫ নভেম্বর ২০২৩, ১০:০৮ পিএম
অনলাইন সংস্করণ
যুগান্তর ডেস্ক।

যে কারণে এখনো জয়ের আশায় হামাস

আল-আকসা মসজিদের কাছে একটি পশু কুরবানি করতে চেয়েছিল ডানপন্থি ইহুদিরা। আল-আকসা মসজিদের কেন্দ্রে অবস্থিত একটি ইসলামিক মাজার ভেঙে ফেলে তৃতীয় মন্দির নির্মাণের জন্য ভিত্তি স্থাপন করতে চেয়েছিল তারা। মূলত আল-আকসা মসজিদে স্থায়ী ইহুদি উপস্থিতি স্থাপনের পরিকল্পনা করছিল ইসরাইল। আর এ কারণেই অভিযান পরিচালনা করেছে হামাস।

হামাসের গত ৭ অক্টোবরের অভিযানে একটি ভারী মূল্য পরিশোধ করছেন গাজাবাসী। হাজার হাজার নিহতসহ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন লাখ লাখ মানুষ। বর্তমানে পানি, খাদ্য, বিদ্যুৎ, জ্বালানিসহ প্রয়োজনীয় প্রায় সব মৌলিক সরবরাহ ছাড়াই দিন পার করছেন উপত্যকার প্রায় ২৩ লাখ বাসিন্দা। তবে এত বিপর্যয়ের পরও এখনো জয়ের আশা ছাড়েনি হামাস। চলমান যুদ্ধের চূড়ান্ত ফলাফল হবে 'ইসরাইলি প্রত্যাহার’ বলে মনে করেন হামাসঘনিষ্ঠ এক ফিলিস্তিনি সূত্র। তিনি বলেন, 'ইসরাইলকে পরাজিত ও ফিলিস্তিনকে দখলমুক্ত করার ক্ষমতা হামাসের রয়েছে।' আর হামাসের জন্য 'এখন একটি সত্য'। এপি।

হামাসকে পুরোপুরি নিশ্চিহ্ন করা সম্ভব কি না এ প্রশ্নের জবাবে ফিলিস্তিনি সূত্র বলেন, ইসরাইলের নেতারা দলটিকে নিশ্চিহ্ন করার প্রতিশ্রুতি প্রথমবারের মতো দেয়নি। এর আগে প্রতিটি যুদ্ধই শেষ হয়েছিল ইসরাইলি প্রত্যাহারের মাধ্যমে। তবে প্রতিবারের যুদ্ধে ধ্বংসের মাত্রা ভিন্ন, তা স্বীকার করেছেন হামাস নেতারা। সূত্রের মতে, 'ইসরাইল হয়তো গাজার অর্ধেক ধ্বংস করতে পারে। কিন্তু আমি মনে করি শেষ পর্যন্ত ফলাফল একই হবে। বরং ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর জন্য সমস্যা হবে কীভাবে অন্যের কাছে একটি ভালো ভাবমূর্তি তৈরি করে যুদ্ধ শেষ করবেন।' গাজায় হামাস নেতাদের নির্মূলের যুদ্ধে নেতানিয়াহু সফল হলেও ৭ অক্টোবরের হামলায় জন্য তিনি তার দায়িত্ব নিয়ে প্রশ্নের মুখোমুখি হবেন বলে উল্লেখ করেন তিনি।

ইসরাইলের মূল লক্ষ্য অর্জনের সম্ভাবনাকে উড়িয়ে দিয়েছেন ফিলিস্তিনি এই সূত্র। বলেছেন, গাজায় এই সংগঠনের আকার আর তার ওপর নির্ভরশীলদের কারণে হামাসকে শেষ করা শারীরিকভাবে অসম্ভব। সমাজের প্রতিটি রন্ধ্রে রন্ধ্রে হামাসের অবস্থান। 'আপনি যোদ্ধা এবং তাদের পরিবার আছে, আপনি দাতব্য সংস্থা এবং তাদের পরিবার আছে. আপনি সরকারি কর্মী এবং তাদের পরিবার আছে, সবাই একসঙ্গে সমাজের একটি বড় অংশ দখল করে আছে।'

হামাসের গত ৭ অক্টোবরের অভিযানের কারণ সম্পর্কে এই সূত্র বলেন, সে সময় আল-আকসা মসজিদের কাছে একটি পশু কুরবানি করতে চেয়েছিল ডানপন্থি ইহুদিরা। আল-আকসা মসজিদের কেন্দ্রে অবস্থিত একটি ইসলামিক মাজার ভেঙে ফেলে তৃতীয় মন্দির নির্মাণের জন্য ভিত্তি স্থাপন করতে চেয়েছিল তারা। মূলত আল-আকসা মসজিদে স্থায়ী ইহুদি উপস্থিতি স্থাপনের পরিকল্পনা করছিল ইসরাইল। আর এ কারণেই অভিযান পরিচালনা করেছে হামাস।

০৭ নভেম্বর ২০২৩, ০৮:৫১ এ অন্য একটি পত্রিকার অনলাইন সংস্করণের খবর:
হামাসের এই হামলার সবচেয়ে বড় কারণ ছিল অতি উগ্র ইহুদিরা আল-আকসা মসজিদ কমপ্লেক্সে পশু বলি দিতে চেয়েছিল। এর মাধ্যমে তারা ডোম অব দি রক (কুব্বাতুল সাকরা) গুঁড়িয়ে দিয়ে তাদের থার্ড টেম্পল নির্মাণের কাজ শুরু করার পরিকল্পনা করেছিল। তারা বলির জন্য বিশেষ লাল গরু যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানিও করেছিল।
ইসলামের তৃতীয় পবিত্র স্থানের এ ধরনের অবমাননা ঠেকানোর সংকল্প ব্যক্ত করে হামাস।

তাছাড়া ইসরাইলের কারাগারগুলোতে থাকা প্রায় ছয় হাজার বন্দীকে মুক্ত করার দায়দায়িত্বও হামাসকে কঠিন অবস্থায় রেখেছিল।

প্রথম আলো'র একটি নিবন্ধে বলা হয়েছে- গত শতকের আশির দশকে ‘জিউস আন্ডারগ্রাউন্ড’ নামে একটি কট্টরপন্থী ইহুদি গোষ্ঠী ডোম অব দ্য রক ভেঙে ফেলার চক্রান্ত করে। এরপর নব্বইয়ের দশকে আল-আকসা প্রাঙ্গণে একটি বিক্ষোভ চলাকালে ইসরায়েলি বাহিনীর গুলিতে ১৭ ফিলিস্তিনি নিহত ও ১৫০ জন আহত হন। 'টেম্পল মাউন্ট ফেইথফুল' নামে কট্টরপন্থী একটি ইহুদি গোষ্ঠী আল-আকসা প্রাঙ্গণে একটি টেম্পল নির্মাণের জন্য ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের চেষ্টা করলে এর প্রতিবাদে ফিলিস্তিনিরা বিক্ষোভে নেমেছিলেন।
লেখা:
আল-জাজিরা, পূর্ব জেরুজালেম
প্রকাশ: ২১ এপ্রিল ২০২৩, ১৭: ০৫

আশা করি ক্লিয়ার হয়েছে, হামাস কেন জেনেশুনে এই আত্মঘাতী(!) হামলা করতে গেল? ইহুদিদের এমন পরিকল্পনা আগে থেকেই ছিল। তারা শুধু বর্তমান ইসরায়েলের মানচিত্র নিয়েই ক্ষান্ত হবে না, বরং ধর্মীয় উন্মাদনা সৃষ্টি করে আরও বড় পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করবে। আর এই পরিকল্পনা তাদের আগে থেকে ছিল বলেই লেখক সম্ভবত সে সম্পর্কে অবগত হয়ে এ পটভূমিকায় এমন একটি থ্রিলার রচনা করেছেন।

পুরো পোস্টটি নিজের মত সাজিয়ে লেখার চেষ্টা করেছি। ভুল-ত্রুটি থাকতেই পারে। সাহায্য নেওয়া হয়েছে সেবা থেকে প্রকাশিত 'চাই ঐশ্বর্য' বই থেকে।

-সম্রাট






সর্বশেষ এডিট : ০৭ ই নভেম্বর, ২০২৩ বিকাল ৫:০২
২৩টি মন্তব্য ১৮টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমার অন্যরকম আমি এবং কিছু মুক্তকথা

লিখেছেন জানা, ১৫ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৬



২০১৯, ডিসেম্বরের একটি লেখা যা ড্রাফটে ছিল এতদিন। নানা কারণে যা পোস্ট করা হয়নি। আজ হঠাৎ চোখে পড়ায় প্রকাশ করতে ইচ্ছে হলো। আমার এই ভিডিওটাও ঐ বছরের মাঝামাঝি সময়ের।... ...বাকিটুকু পড়ুন

যেভাবে শরণার্থীরা একটি দেশের মালিক হয়ে গেলো!

লিখেছেন মাঈনউদ্দিন মইনুল, ১৫ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:২৬



এবার একটি সেমিনারে প্রথমবারের মতো একজন জর্ডানির সাথে পরিচয় হয়। রাসেম আল-গুল। ঘনকালো মাথার চুল, বলিষ্ট দেহ, উজ্জ্বল বর্ণ, দাড়ি-গোঁফ সবই আছে। না খাটো, না লম্বা। বন্ধুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব। প্রতিটি সেশন... ...বাকিটুকু পড়ুন

নিউ ইয়র্কের পথে.... ২

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০২


Almost at half distance, on flight CX830.

পূর্বের পর্ব এখানেঃ নিউ ইয়র্কের পথে.... ১

হংকং আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে প্লেন থেকে বোর্ডিং ব্রীজে নেমেই কানেক্টিং ফ্লাইট ধরার জন্য যাত্রীদের মাঝে নাভিশ্বাস উঠে গেল।... ...বাকিটুকু পড়ুন

সামুতে আপনার হিট কত?

লিখেছেন অপু তানভীর, ১৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০৩



প্রথমে মনে হল বর্তমান ব্লগাদের হিটের সংখ্যা নিয়ে একটা পোস্ট করা যাক । তারপর মনে পড়ল আমাদের ব্লগের পরিসংখ্যানবিদ ব্লগার আমি তুমি আমরা এমন পোস্ট আগেই দিয়ে দিয়েছেন ।... ...বাকিটুকু পড়ুন

ল অব অ্যাট্রাকশন

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৬ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:৪৫

জ্যাক ক্যান ফিল্ডের ঘটনা দিয়ে লেখাটা শুরু করছি। জ্যাক ক্যানফিল্ড একজন আমেরিকান লেখক ও মোটিভেশনাল স্পিকার। জীবনের প্রথম দিকে তিনি হতাশ হয়ে পড়েছিলেন। আয় রোজগার ছিলনা। ব্যাংক অ্যাকাউন্টে অর্থ ছিলনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×