এই ছবিটা অন্যরকম একটা আঁকার চেষ্টা ছিল।
ছবিটা এঁকেছিলাম ছয় মার্চ। সূর্যমুখি ফুল ইউক্রেনের জাতীয় ফুল। সূর্যমুখি আঁকার চেষ্টা করে ছিলাম বরফের উপর। ইউক্রেনের যুদ্ধ বিদ্ধস্ত অবস্থার স্মরণে।
কিন্তু সেদিন প্রচণ্ড বাতাসে তেমন কিছু করতে পারলাম না। ঠাণ্ডা আর বাতাসে আঙ্গুল ফ্রোজেন হয়ে যাচ্ছিল আর যে দিকে রঙ দেই, চলে যায় অন্য দিকে বাতাসের টানে। বরফের উপর, ছবি আঁকার চেষ্টা করলাম এই প্রথম। আঁকার টেকনিকটাও ব্রাস দিয়ে না ভিন্ন ভাববে করতে হচ্ছিল। আগের দিন ছিল সুন্দর বরফের স্তুপ। বরফ ছিল স্থিতিশীল, ঠাণ্ডার জন্য। কিন্তু ছবি আঁকার সিদ্ধান্ত নিলাম সেদিন আশি নব্বই কিলোমিটার দমকা হাওয়ার ঝাপটা। হঠাৎ মনে হলো কাজটা করি এত বাতাস আর ঠাণ্ডার মধ্যেও চেষ্টা নিয়ে ছিলাম কারণ পরদিন বরফ গলে যাওয়ার সম্ভাবনা ছিল।
একে কখনো বরফে আগে আঁকিনি আর দ্বিতীয় বাতাস আর ঠাণ্ডা মিলে আমার পিছু লেগে ছিল যেন কিছু করতে না পারি।
প্রচণ্ড ঠাণ্ডা মায়নাস তেরো ছিল সেদিন। আর পর দিন এক লাফে প্লাস সতের। গলে যাচ্ছিল বরফ, গলে যাচ্ছিল আমার ছবি। শুকনো পাতা ঘাস ভেসে উঠছে শুভ্র ক্যানভাসের ভিতর আর কাদা কাদা মাটিও। যেন ন্যাচারেল ধ্বংস স্তুপ, যেন যুদ্ধ বিদ্ধস্ত সূর্যমুখির মাঝে ফুটে উঠেছে পুড়ে যাওয়া ধ্বংস প্রাপ্ত ইউক্রেনের ছাই, উল্টে পরা ভাঙ্গা গাছ। লম্বা সবুজ ডালগুলো এবং হলুদ ফুলগুলো হয়ে গেল অন্য রকম বিদ্ধস্ত। তখন ছড়িয়ে দিলাম কিছু লাল রঙ সেখানে এলোমেলো। রক্ত ঝরছে।
আগের দিন রঙ ঢালার পর আর ছবি তুলার সুযোগ হয়নি। ছবি তুললাম পর দিন যখন এলোমেলো হয়ে গেল।
প্রতিদিন এক এক রকম নতুন রূপের আবহাওয়া । দুদিন পর এত্ত বরফ পরল। ছবি ডুবে গেল বরফের নিচে। তারপর আবার বরফ গলল। আর বরফ চাপা অবস্থা থেকে বেরিয়ে এলো রঙ। মজার বিষয় হলো এখনও বেশ রঙ লেগে আছে এক স্তুপ বরফের উপর।
এখন আর বরফ পাওয়া যাবে না সুন্দর পরিপাটি । আগামীতে যদি কিছু করা যায় যখন চারপাশ থাকবে ধবধবে সাদা হয়ে তখন চেষ্টা করব।
এটা এমন কিছু হয়নি আঁকা তবে চেষ্টা করেছিলাম অন্যরকম কিছু সেটাই জানালাম।
বিশেষ করে সহব্লগার ডাঃ এম এ আলী ছবি নিয়ে পোষ্ট দেয়ার কথা একটা পোষ্টে মন্তব্য দেয়ার পর মনে হলো এই ছবিটা পোষ্ট করি।
সর্বশেষ এডিট : ২২ শে মার্চ, ২০২২ দুপুর ১:০৪