somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

রোকসানা লেইস
স্রোতের অজানা টানে সমুদ্র বালিয়াড়ি বেয়ে বোহেমিয়ান- গৃহকোন, জীবন যাপন ফেলে চলে যায়। তুমি দুহাত বাড়িয়ে আলিঙ্গনে বাঁধতে চাও জোছনা গলে হারিয়ে যায় সুখ । আছড়ে পরা ঘূর্ণিজল মনে বাজায় অচেনা সবুজ দিগন্ত ..

ফুলের হাসি মন ভালো করে দেয়

০৭ ই এপ্রিল, ২০২২ রাত ১:১৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



এ বসন্তের প্রথম ফুল ফুটেছে, ফুলের হাসি মন ভালো করে দেয়। প্রকৃতি আপনমনে সেজে উঠছে। কাল বেশ বাতাস ছিল। অনেক ঠাণ্ডাও তবু অনেকক্ষণ বাগানে কাজ করলাম। ঝরাপাতায় ঢেকে থাকা মাটি সরিয়ে দিলাম। পাতার নিচে চাপা পড়ে থাকা প্রতিবছরে নিজে নিজে জেগে উঠা গাছগুলো এখন দেখলে মনে হবে মরে গেছে। অথচ এরাই নতুন ফুলে পাতায় জেগে উঠবে আর কিছু দিনের মধ্যে।
দু সপ্তাহ আগে বেশ ভালো উত্তাপ ছিল তারপর আবার প্রতিদিন বরফের দেখা পেলাম। পুকুরের গলে যাওয়া বরফ আবার জমাট বেঁধে গেল। গাছগুলো প্রতি সকালে সাদা কম্বল মুড়ি দিয়ে জেগে উঠত। আর কখনো গাছের গায়ে লেগে যেত বরফ আরেকটা পরত হয়ে। উত্তাপের ছোঁয়া পেলে ধীরে ধীরে গলে পরত। বরফের জামার ভাড়ে গাছগুলো নুয়ে পরত। ছোট ছোট ডাল থেকে বড়সর ডালও অনেক সময় ভেঙ্গে পরত। আর ছাদের বরফ গড়িয়ে ঝুলে থাকত সুন্দর বরফের ক্রিস্টাল লাইটের মতন ছাদের চারপাশ ঘিরে।
প্রতিদিন যেন এক নতুন রূপ কখনো ছুটে চলা বরফ জলের নদী তো কখনো স্কেইটিং মাঠ, পা দিলেই কড়মড় করে ভেঙ্গে যায়। কখনো তুমুল বৃষ্টি আবার পরদিন ঝলমলে রােদ। তুমুল হাওয়া। উড়িয়ে নেবে যেন ঘরবাড়ি। দুদিন এমন ভিজে থকথকে ঘরের সমনে পা ডুবে যাচ্ছে যেন নদীর শুকিয়ে যাওয়া জলের মাঝে পা দিয়েছি। সবার গাড়ি আটকে যেতে থাকল। ঠেলাঠেলি করে উঠাতে হলো কাদায় দেবে যাওয়া চাকা। কাদা ছিটকে মাখামাখি সব জায়গায়। হাসাহাসি আর ঝামেলার জন্য সিমেন্ট, পাথর ঢালার পরিকল্পনা। তবে থাকে না কিছু শীত শেষে আবার সাজাতে হয় প্রতি বছর। বরফ সাফ করতে করতে উঠে যায় সব। রাস্তা গুলো যেমন এখন গর্ত ভরা।
তার মাঝে গত সপ্তায় হুট করে বেরিয়ে পরলাম পরিবারের সবাই মিলে ঘুরতে। উদ্দেশ্য বিহীন ঠিকানা বিহীন পথ চলায় এক সময় হাজির হলাম এক পাহাড়ি শহরে। ওখানে বরফের ছড়াছড়ি আরো বেশি কারণ সেখানে তো শীতকালে বরফের খেলাগুলো হয়। এলাকাটার পরিবেশই বেশি বরফ পরার আর ঘন হয়ে জমে থাকার। দিনটা বেশ উষ্ণ ছিল কিন্তু বেশ শীত পরে গেল আমরা যেতে যেতে। গোধূলির আলো ম্লান হয়ে ঝুপ করে নিবে গেল পাহাড়ের আড়ালে। রির্সোট শহর বেশ জমজমাট পর্যটকের ভীড়ে। খাবার দাবার বিভিন্ন দেশের রেস্টুরেন্ট চারপাশে। জমাট গান বাজছে। টুনি লাইটের রঙিন আলোয় সজ্জিত । ভালোলাগল অনেক দিন পর বেরিয়ে পরে। ম্যাক্সিকান ফুডের আনন্দ নিলাম আমরা।



আরো অনেকটা সময় আমরা ঘোরা ফেরা করতে চাইলাম। কিন্তু খুব ছোট একটি মানুষ আমাদের সাথে ওর এত ঠাণ্ডা বাতাস সহ্য হচ্ছে না ওর যদিও বড় বড় চোখ মেলে খুব উপভোগ করছে সে চারপশের নতুন পরিবেশ। তাই তাড়াতাড়ি ফিরার পথ ধরলাম।
অন্ধকার তখন বেশ গাড়। গ্রামীন পথগুলো ডুবে আছে নির্জনতায় বাতিহীন প্রকৃতির সমারোহে। আকাশ জুড়ে অসংখ্য তারা জেগেছে। দূরে দূরে বনভূমির সারি। দিনের বেলা গেলাম এক রকম দেখতে দেখতে, রাতের বেলা ফিরলাম একই পরিবেশের ভিন্ন রূপ উপভোগ করতে করতে।
আজ আকাশটা পাখি আকাশ হয়ে আছে। অসংখ্য পাখি ডানা মেলে উড়ছে ঢেউয়ের মতন। বাড়ির উপর পাখির ছাদ যেন।
বাগানে মুখ তুলেছে নার্সিসাস, টিউলিপ, ভুঁইচাপা, হার্বগুলো আপনমনে। ম্যাগনেলিয়া, চেরি ফার্টিসার ডালগুলো কলিতে ভরে উঠছে । ঘরে থাকা সবজিরা আপন মনে গজিয়ে যাচ্ছে। সময়টা প্রজননের। পাখিরা যেমন আনন্দে নাচছে। ঘুমিয়ে থাকা কীট পতঙ্গ বেরিয়ে আসছে গর্ত থেকে। দেশ থেকে নিয়ে আসা শাপলার প্যাকেট খুলে পেলাম গজিয়েছে লাল শাপলার লতা শিকড় থেকে। আহা যদি বাঁচে। পুকুর ভর্তি লাল শাপলা ফোটে কিযে ভালো লাগবে আমার। সাদা শাপলার পাশাপাশি দেশের লাল শাপলা ভিন্ন পরিবেশে।



আমার ইচ্ছে করছে এখনই গার্ডেন টেবিল চেয়ার সাজিয়ে বাইরে বসে থাকি। কিন্তু অপেক্ষা করতে হবে আরো কয়েকটা দিন। এপ্রিল শাওয়ার ব্রিং মে ফ্লাওয়ার। এপ্রিলের বৃষ্টি শেষ হওয়া পর্যন্ত তাই কখনো বাইরে গিয়ে হাঁটাহাটিঁ করে কাটাতে হবে। বাগান পরিচর্চা করে গাছগুলোকে ঠিক মতন বেড়ে উঠার সুযোগ করে দিতে হবে। মে মাস সব ব্লুম রাঙিয়ে দিবে চারপাশ তার আয়োজন চলছে প্রকৃতির মাঝে।

সর্বশেষ এডিট : ০৭ ই এপ্রিল, ২০২২ রাত ১:২১
৫টি মন্তব্য ৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

অপরূপের সাথে হলো দেখা

লিখেছেন রোকসানা লেইস, ১৪ ই মে, ২০২৪ রাত ১:৩৫



আট এপ্রিলের পর দশ মে আরো একটা প্রাকৃতিক আইকন বিষয় ঘটে গেলো আমার জীবনে এবছর। এমন দারুণ একটা বিষয়ের সাক্ষী হয়ে যাবো ঘরে বসে থেকে ভেবেছি অনেকবার। কিন্তু স্বপ্ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমরা কেন এমন হলাম না!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৪ ই মে, ২০২৪ সকাল ৯:৪১


জাপানের আইচি প্রদেশের নাগোইয়া শহর থেকে ফিরছি৷ গন্তব্য হোক্কাইদো প্রদেশের সাপ্পোরো৷ সাপ্পোরো থেকেই নাগোইয়া এসেছিলাম৷ দুইটা কারণে নাগোইয়া ভালো লেগেছিল৷ সাপ্পোরোতে তখন বিশ ফুটের বেশি পুরু বরফের ম্তুপ৷ পৃথিবীর... ...বাকিটুকু পড়ুন

অভিমানের দেয়াল

লিখেছেন মোঃ মাইদুল সরকার, ১৪ ই মে, ২০২৪ সকাল ১১:২৪




অভিমানের পাহাড় জমেছে তোমার বুকে, বলোনিতো আগে
হাসিমুখ দিয়ে যতনে লুকিয়ে রেখেছো সব বিষাদ, বুঝিনি তা
একবার যদি জানতাম তোমার অন্তরটাকে ভুল দূর হতো চোখের পলকে
দিলেনা সুযোগ, জ্বলে পুড়ে বুক, জড়িয়ে ধরেছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের গ্রামে মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতি

লিখেছেন প্রামানিক, ১৪ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৩১



২৬শে মার্চের পরে গাইবান্ধা কলেজ মাঠে মুক্তিযুদ্ধের উপর ট্রেনিং শুরু হয়। আমার বড় ভাই তখন ওই কলেজের বিএসসি সেকেন্ড ইয়ারের ছাত্র ছিলেন। কলেজে থাকা অবস্থায় তিনি রোভার স্কাউটে নাম... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিকেল বেলা লাস ভেগাস – ছবি ব্লগ ১

লিখেছেন শোভন শামস, ১৪ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৪৫


তিনটার সময় হোটেল সার্কাস সার্কাসের রিসিপশনে আসলাম, ১৬ তালায় আমাদের হোটেল রুম। বিকেলে গাড়িতে করে শহর দেখতে রওয়ানা হলাম, এম জি এম হোটেলের পার্কিং এ গাড়ি রেখে হেঁটে শহরটা ঘুরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×