কখনও অদ্ভুত কিছু ঘটনা ঘটে যায়।তিনদিন আগে তেমনি একটি ঘটনা হঠাৎ করে সামনে এসে গেলো।
কাজে পৌঁছাতে রাস্তায় প্রায় আধ ঘন্টা বেশি লেগে গেলো পথের জ্যামের জন্য । ইচ্ছায় দেরি নয় কিন্তু উপায়হীন আটকে থাকলাম।
একটু পরপর তিন চারটা দূর্ঘটনার জন্য।
ফোন দিয়ে জানিয়ে ছিলাম যে সময়, তাও অনেকক্ষণ পেরিয়ে গেছে। ভীড় কেটে বেড়িয়ে যাওয়ার পথ ছিল না কোথাও তাই দেরি মেনেই চলতে হলো,গতির সাথে। ডাউনটাউন মানেই ব্যাস্ততা এবং পার্কিং হাইপ্রাইজ বিশেষ করে কাজের দিনগুলোতে।
পার্কিং করে দ্রুত কাজের জায়গায় হাঁটছিলাম। তখন হঠাৎ একটি মেয়ে পাশে এসে বলল, তোমাকে একটা প্রশ্ন করতে চাই।
আমি বললাম, দেখো আমার সময় নাই এখন তোমার সাথে কথা বলার।
মেয়েটি উল্টো দিকে যাচ্ছিল কিন্তু ও আমার সাথে আবার যেদিক থেকে এসেছে সেদিকে হাঁটছে। নাছোড়বান্দা আমাকে প্রশ্ন করবেই।
বলল তোমার বেশি সময় লাগবে না, তুমি শুধু হ্যাঁ বা না বলো।
কিসের ব্যাপারে তোমার প্রশ্ন?
আমার লাইফের বিষয়ে।
দেখো তোমার লাইফ তোমার। যা কিছু সিদ্ধান্ত নিবে তুমি নিজে নিবে।
আমি রেন্ডম পার্সনকে জিজ্ঞেস করছি, তাদের মতামত নিচ্ছি। আমার সিদ্ধান্ত নেয়ার জন্য।
ওর সাথে কথা বলে হাঁটার জন্য আমার আর আরো বেশি সময় লেগে যাচ্ছে।
বললাম, তোমার প্রশ্নটা বলো।
সে সময় নিচ্ছে। আমার অস্থিরতা বাড়ছে, আমাকে যেতে হবে।
তুমি প্রশ্ন করবে?
মেয়েটি বলল, আমি কি বেঁচে থাকব নাকি থাকব না?
এমন কঠিন প্রশ্ন শুনে আমি থমকে গেলাম।
পথে অনেক সময় আজব মানুষের দেখা পাওয়া যায়। কেউ ধর্ম কথা বলে, কেউ পন্যের বিজ্ঞাপন কেউ বা চায় ডোনেশন।
কিন্তু এ একেবারে জীবন মরন সমস্যা।
আমি মেয়েটিকে বললাম, মরে যাওয়া কোন সমস্যার সমাধান নয়। তোমাকে বেঁচে থাকতে হবে। যত কষ্ট হোক, দুঃখ হোক এক সময় দুঃসময় কেটে গিয়ে সুন্দর জীবন তুমি পাবে। হতাসা নয় দৃঢ়তা নিয়ে চলো।
ওর মুখে হাসি দেখতে ভালো লাগল।
মেয়েটাকে ওর নাম জিজ্ঞেস করলাম।
জ্যাকলিন ওর নাম। বললাম আমার সাথে একটা ছবি তুলবে? রাজি হলো। দ্রুত একটা ছবি তুলে বললাম, ভালো থেকো। কাজের জায়গায় পৌছে গেছি, আমি ভিতরে ঢুকে পরলাম।
একটু স্থির হয়ে বসার পর থেকে মেয়েটার কথা খুব মনে পরছে।
আশা করছি জ্যাকলিন আর যত রেন্ডম মানুষকে তার প্রশ্ন করবে সবাই বেঁচে থাকার আশা ওকে দিবে।
এমন তাড়াহুড়োর সময়ে দেখা না হয়ে অবসর সময়ে দেখা হলে ওকে আরও ভালো ভাবে সময় দিতে পারতাম। সমস্যা শুনে গাইড করতে পারতাম।
মানুষ দেখে কোন ধারনা করা যায় না তাদের সম্পর্কে। কত যে নিভৃত কান্না মানুষের মনে।
সর্বশেষ এডিট : ০২ রা আগস্ট, ২০২২ ভোর ৫:২০