somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

রোকসানা লেইস
স্রোতের অজানা টানে সমুদ্র বালিয়াড়ি বেয়ে বোহেমিয়ান- গৃহকোন, জীবন যাপন ফেলে চলে যায়। তুমি দুহাত বাড়িয়ে আলিঙ্গনে বাঁধতে চাও জোছনা গলে হারিয়ে যায় সুখ । আছড়ে পরা ঘূর্ণিজল মনে বাজায় অচেনা সবুজ দিগন্ত ..

বিচিত্র প্রকৃতি

০৫ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ২:১৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



কাল সারাদিনের বৃষ্টি বরফ হয়ে গেলো সন্ধ্যার পর থেকে। তাও ভালো সাদা সাদা বল গুলো উড়ছে আর ঢেকে দিচ্ছে, গাছ মাঠ বাড়ি ঘর।
গত দুদিনের প্রবল ঝড়ো বাতাসের চেয়ে ভালো এই সৌন্দর্যময় বরফপাত । এ বছর তো তেমন বরফের দেখাই পেলাম না। অনেক রাত পর্যন্ত দেখলাম এই মায়াবতী দৃশ্য।
স্ট্রমটা হচ্ছে দক্ষিণে তার প্রভাব বয়ে যাচ্ছে দুদিন পর আমাদের এদিকে।
আজ সকালে ফেসবুকে ঢুকেই একটা রিল চোখে পরল। এক মহিলা চিৎকার করছে । আর বয়ে যাওয়া পানির স্রোত দেখাচ্ছে। ওর বাড়ির ভিতরে পানি ঢুকেছে কিছুটা। মহিলার কথায় মনে হচ্ছিল কেউ যেন ইচ্ছা করে ওর বাড়ির ভিতরে পানি ঢেলে দিয়েছে।
প্রকৃতির সৌন্দর্য দেখার জন্য নদীর পাড়ে বাড়ি বানাবে কিন্তু প্রকৃতির রুদ্রোরোষে পরলে চেঁচাবে ঠিক কাকে সে দোষ দিচ্ছে, কেন বুঝলাম না। এতো বাংলাদেশ না যে টাকা দিয়ে অনুমতি নিয়েছে যথেচ্ছা বাড়ি বানানো যায়। বাড়ি করা হয় সম্পূর্ণ এলাকা ভিত্তিক উন্নয়ন করে অনেক রকম অনুমতি, পরীক্ষা নিরীক্ষার পর একটা এলাকায় আবাসিক বাড়ি বানানো হয় সার দিয়ে অনেকগুলো। সক্ষমতা অনুযায়ী মানুষ কিনে বাড়ি তখন। নিজে যে কোন জায়গায় ইচ্ছে হলেই বাড়ি বানিয়ে ফেলা যায় না।
প্রকৃতি বদলে যাচ্ছে নানা ভাবে কিছু বছর পর বিরূপ প্রতিক্রিয়া সেই এলাকায় পরলে অনুমতি দেয়া মানুষদের করার কিছু থাকে না। বরং ইন্সরেন্স করা থাকায় সব ক্ষতিই মোটামুটি ইন্সরেন্স থেকে পাওয়া যায়।
কয়েক বছর আগে এমন স্প্রিং সময়ে অন্টারিও প্রভিন্সের অনেক বাড়ি ডুবে গিয়েছিল। বাড়ির ভিতর থেকে মানুষ বের করে এনেছিল বোট নিয়ে উদ্ধার কর্মিরা।
বাড়ির এমন অবস্থা হয়েছিল মানুষ আর ফিরে যেতে পারেনি সেখানে। অনেক বাড়ি ভেসে গিয়েছিল জলে। তাও কাউকে এমন চিৎকার চ্যাঁচামেচি করতে দেখিনি।
প্রকৃতির উপর কিছু বলার আছে কি? কি জানি কেউ কেউ হয় তো ভাবে চিৎকার করাটা তাদের অধিকার। তাইপেতে ভূমিকম্পে বাড়ি হেলে গেছে।
তুরস্কর বিশাল এলাকা তছনছ হয়ে গেলো।
ক্যালিফোর্নিয়ার পাহাড়ের উপর সাজানো বাড়ি গুলো গড়িয়ে পরে নিমিশে নাই হয়ে গেলো।
সিঙ্ক হোলের ভিতর গাড়ি, বাড়ি যে ভাবে ডুবে যায়, এখন প্রায় সময় এই খবরগুলো বাস্তবে দেখি। কয়েক মাস আগে ফোর হান্ডেড রোড বন্ধ করে রাখা হলো সিঙ্কহোলের জন্য। এখন আর সেবা প্রকাশনীর বই পড়ে এক সময় যে মরীচিকা ধাঁধায় ডুবে যেতাম, কেমন করে হয় এমন অদ্ভুত কাণ্ড ভেবে। পেছনে কে আছে দানব তাদের কথা মনে হয় না। প্রকৃতি নিজস্ব নিয়মে বৈচিত্রময় পরিবর্তন এবং ঘটনা ঘটায়।এমন বৈচিত্র ঘটনা নানা রকম বিবর্তন প্রকৃতির নিজস্ব নিয়ম বলে মেনে নেই।
ভূখন্ড তৈরি হওয়ার পর থেকে এর পরিবর্তন হয়ে আসছে নানা রকম ভাবে।
আজকের মহাদেশ গুলো যা আমরা চিনি তা তো এ রকম ছিল না হাজার বছর আগে। যখন এই বিষয় গুলো বিজ্ঞান সম্মত মনে হয় তখন কোন ঈশ্বরের কুদরত মনে হয় না।
মানুষের জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত শারীরিক এবং মানসিক নানা বদলে যাওয়ার মতন প্রকৃতিরও এই বদলে যাওয়া সহজ নিয়ম। তাই গত বছর এমন ছিল এবছর তেমন হলো না। এমন সহজ হিসাব দিয়ে গননা না করে, বৈচিত্রর সাথে জীবন যাপন করি।
বিশাল কোন সুনামি, ভূমিকম্প, ঝড়ের আঘাতে যেন কখনো না পরি প্রকৃতির রুদ্র অবস্থায় প্রকৃতির কাছে এই আশা করি।
এ বছর সূর্যের পূর্ণ গ্রহণ হবে আর তিনদিন পর।
অনেক মানুষ তা দেখার জন্য কত রকম আয়োজন করেছে। চাঁদ যে সূর্যের আলোয় আলোকিত হয় সেই চাঁদ ছায়া দিয়ে ঢেকে দিবে সূর্যকে। দিনটা হবে রাতের মতন অন্ধকার। তাই মানুষের অনেক আয়োজন। দোকানে দোকানে বিক্রি হচ্ছে সূর্য গ্রহণ দেখার বিশেষ সানগ্লাস। পাওয়াও যাচ্ছে না। অনেকে হন্যে হয়ে খুঁঁজছে সানগ্লাস।
অনেকে পরিবার, বন্ধু আত্মিয় নিয়ে এক সাথে হয়ে চলে যাবে ভালো করে দেখার জায়গায়। অথচ আকাশের যে অবস্থা সানগ্লাস দিয়ে চোখ ঢেকে সূর্যগ্রহণ দেখা যাবে কিনা কে জানে। অনেক মেঘ সূর্যকে ঢেকে রেখেছে গত কয়েকদিন ধরে। এই তিন দিন বৃষ্টি বরফ আর হাওয়া পেয়ে মেঘের স্তর উড়ে না গেলে সব আশা ধূলিসাৎ হয়ে যাবে মনে হচ্ছে সূর্যগ্রহণ দেখার।
স্কুল ছুটি সেদিন। বাচ্চারা যেন ক্লাসে বসে না থেকে বাইরে গিয়ে প্রকৃতির এই ভিন্ন রূপটি উপভোগ করতে পারে সে জন্য এই ব্যবস্থা।
দেশে থাকতে একবার এমন সূর্য গ্রহণের সময় বাচ্চা স্কুলে গেলে বলেছিলাম সূর্য গ্রহণের সময় যেন বাইরে গিয়ে দেখে। সরাসরি সূর্যের দিকে না তাকানাের জন্য বিশেষ সানগ্লাস দিয়েছিলাম। ভেবেছিলাম শিক্ষকই হয় তো বাচ্চাদের দেখাবেন প্রকৃতির এই বিশেষ মূহুর্তটি। এটা তো শিক্ষার একটা অংশ। কিন্তু কোন উদ্যোগ নেয়া হয়নি স্কুলে শিক্ষার্থীদের জানানোর। জানেই না বাচ্চারা কখন কি ভাবে সূর্যগ্রহণ হয়ে গেছে। মনে হয়ে ছিল সেদিন বাচ্চাকে স্কুলে না পাঠিয়ে বাসায় রেখে প্রকৃতি দেখালে ভালো করতাম। ছোটবেলার দারুণ একটা স্মৃতি হয়ে থাকত। স্কুল কি আহামরি শিক্ষা আর দেয়, বাড়িতেই পড়াতে হয়।
এখানে এবার প্রতিটি শহর যেখানে ভালো ভাবে সূর্যগ্রহণ দেখা যাবে বলে বলা হচ্ছে, সে সব শহরের মেয়ররা নানারকম ব্যবস্থা গ্রহন করেছেন । ভিন্ন জায়গা থেকে মানুষ এসে যেন অসুবিধায় না পরে তাদের শহরে সে জন্য। নায়েগ্রা ফলসে জরুরী অবস্থা দেয়া হয়েছ সে দিনের জন্য। কারণ মানুষের ঢলটা নায়েগ্রার দিকেই বেশী। উত্তর আমেরিকায় এমন সূর্য গ্রহণ অনেক বছর পরে হচ্ছে।
আমার মনে পরে খুব ছোটবেলায় এমন অন্ধকার হয়ে যাওয়া সূর্যগ্রহণ দেখেছিলাম একবার দেশে। বাবা বাড়ির সবাইকে নিয়ে উঠানে নেমেছিলেন।
তখন সানগ্লাস ছিল না। এক্সরে প্লেটের ভিতর দিয়ে আমরা সূর্যের দিকে তাকিয়েছিলাম। ঠিক জোছনা প্লাবিত রাতের মতন নয়। সন্ধ্যার আধো অন্ধকারময় সময় নয় বা মেঘলা দিনের মতনো নয়। অন্যরকম একটা অন্ধকারে ঢেকে গিয়েছিল পৃথিবী ঠিক দুপুর বেলা স্মৃতিটা আজো মনে পরে।
সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ২:১৯
৭টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

=তুমি সুলতান সুলেমান-আমি হুররাম=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৩৬



©কাজী ফাতেমা ছবি

মন প্রাসাদের রাজা তুমি, রাণী তোমার আমি
সোনার প্রাসাদ নাই বা গড়লে, প্রেমের প্রাসাদ দামী।

হও সুলেমান তুমি আমার , হুররাম আমি হবো
মন হেরেমে সংগোপনে, তুমি আমি রবো।

ছোট্ট প্রাসাদ দেবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মৃত্যুর আগে ইবলিশ ঈমান নিয়ে টানাটানি করে

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:০২



ইউটিউব হুজুর বললেন, মৃত্যুর আগে ইবলিশ ঈমান নিয়ে টানাটানি করে। তখন নাকি নিজ যোগ্যতায় ঈমান রক্ষা করতে হয়। আল্লাহ নাকি তখন মুমিনের সহায়তায় এগিয়ে আসেন না। তাই শুনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মহিলা আম্পায়ার, কিছু খেলোয়ারদের নারী বিদ্বেষী মনোভাব লুকানো যায় নি

লিখেছেন হাসান কালবৈশাখী, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:০৯



গত বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল প্রাইম ব্যাংক ও মোহামেডানের ম্যাচে আম্পায়ার হিসেবে ছিলেন সাথিরা জাকির জেসি। অভিযোগ উঠেছে, লিগে দুইয়ে থাকা মোহামেডান ও পাঁচে থাকা প্রাইমের মধ্যকার ম্যাচে নারী আম্পায়ার... ...বাকিটুকু পড়ুন

জানা আপুর আপডেট

লিখেছেন আরাফআহনাফ, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৫৭

জানা আপুর কোন আপডেট পাচ্ছি না অনেকদিন!
কেমন আছেন তিনি - জানলে কেউ কী জানবেন -প্লিজ?
প্রিয় আপুর জন্য অজস্র শুভ কামনা।



বি:দ্র:
নেটে খুঁজে পেলাম এই লিন্ক টা - সবার প্রোফাইল... ...বাকিটুকু পড়ুন

বন্ধুর বউ কে শাড়ি উপহার দিলেন ব্যারিস্টার সুমন। বাটার প্লাই এফেক্ট এর সুন্দর উদাহারন।

লিখেছেন নাহল তরকারি, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:০৭



এক দেশে ছিলো এক ছেলে। তিনি ছিলেন ব্যারিস্টার। তার নাম ব্যারিস্টার সুমন। তিনি একজন সম্মানিত আইনসভার সদস্য। তিনি সরকার কতৃক কিছু শাড়ি পায়, তার জনগণের মাঝে বিলি করার জন্য।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×