somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বিভ্রান্ত হলে দায় কার?

১০ ই মার্চ, ২০১৩ ভোর ৪:১৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আজ একজন স্বনাম ধন্য ব্লগারের ফেসবুক স্ট্যাটাস এ দেখলাম তিনি অভিনেত্রী রোকেয়া প্রাচী এবং গায়ক হায়দার হোসেন কে ছাগু উপাধী দিয়েছেন কেননা তাদেরকে দিগন্ত টিভিতে দেখানো হয়েছে। স্ট্যাটাসটি দেয়ার সাথে সাথেই তার কিছু চ্যালা-চামচা ধুমায়া লাইকান শুরু করল এবং মূহুর্তের মধ্যেই রোকেয়া প্রাচীর প্রাইজ ট্যাগ ঠিক করে ফেলল, হায়দার হোসেনের ১৪ গুষ্ঠি উদ্ধার করে ফেলল। আবার আধাঘন্টা পরেই স্ট্যাটাস আপডেট, স্ট্যাটাসটি প্রকাশিত হওয়ার পরে এইমাত্র রোকেয়া প্রাচী ফোন করেছিলেন। তিনি জানালেন যে দিগন্তটিভিতে প্রচারিত এই অনুষ্ঠানটি দুই বছর আগের, যেখানে তিনি, ইশিতা এবং হায়দার হোসেন অংশ নিয়েছিলেন, কিন্তু দিগন্ত এবছর এমনভাবে প্রকাশ করেছে যাতে মনে দর্শকদের মনে হয় যে অনুষ্ঠানটি নতুন। সে রোকেয়া প্রাচীকে অভিনন্দনও জানালো। সাথে সাথেই আবার সেই মুরিদরাও তাকে অভিনন্দন জানালো।
এটা ঘটনা। আসুন একটু আলোচনা করি পরিস্থিতিটা নিয়ে। আমরা অনেকেই জানি রোকেয়া প্রাচী মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাস করেন। যারা জানেন না, তারাও তাকে গনজাগরন মঞ্চের সাথে একাত্মতা প্রকাশ করেতে দেখে থাকবেন। আর হায়দার হোসেনের কথা বলা বাহুল্য। শাহবাগ আন্দোলন নিয়ে এখন পর্যন্ত সবচেয়ে উত্তাল গানটি তিনিই গেয়েছেন। তাহলে কোন যুক্তিতে এদেরকে জামাতী পণ্য বানানো হল? এইসব ব্লগারদের হ্যা-তে হ্যা আর না-তে না বলেনা দেখে? এই স্ট্যাটাসটি দেবার আগে কি তার উচিৎ ছিলনা নিশ্চিত হয়ে তারপর কাওকে জামাতিদের গোলাম বানানো?
এই ধরনের ব্লগারদের যখন মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষ-বিপক্ষের মানুষ চিহ্নিত করতে বলা হবে (যেটা ইতিমধ্যে বলা হয়ে গেছে) তখন তাদের করা তালিকার গ্রহনযোগ্যতা কতটুকু হবে? তারা যে নিজেদের সাথে ভিন্ন মত পোষরকারীদের শায়েস্তা করার জন্য এমন করবেনা তার নিশ্চয়তা কে দেবে? স্পাইডারম্যানের চাচার একটা কথা খুবই গুরুত্বপুর্ণ "with great power comes great responsibility". কিছু ব্লগারদের হাতে আজ সত্যিই অনেক ক্ষমতা। কিন্তু সেই ক্ষমতা ব্যবহার করার যোগ্যতা কি তাদের আছে? একটা দেশ, দেশের মানুষ, এবং তাদের চেতনা নিয়ে ফাজলামো করার অধিকার কারও নেই। এরকম একটা পাবলিক স্ট্যাটাস দেবার পর উচিৎ ছিল প্রকাশ্যে ক্ষমা প্রর্থানা করার। কারন তার সেই স্ট্যাটাস দেখে আমিও কনফিইজ হয়ে গিয়েছিলাম, ক'দিন আগেই যার গান শুনে আমি উৎসাহিত হয়েছিলাম, সে কিকরে রাজাকারের দালাল একটি চ্যানেলে গান করে। এই ধরনের ব্লগাররাই গলা ফাটাচ্ছে, বিভ্রান্ত হবেন না, করবেন না। আবার তারা নিজেরাই বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে। মুক্তিযুদ্ধের চেতানা এতটা সস্তা জিনিস না যে, কয়েকটি ব্যক্তির কথাতেই সেটা মিথ্যা হয়ে যাবে। আর মুক্তিযুদ্ধের চেতনা কোন একটি রাজনৈতিক দলের সম্পত্তি না, সেই দলের তোষামদি না করলেই যে সে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিরোধী হয়ে যাবে।
যে ব্লগাররা আন্দোলন পরিচালিত করছে তারা বিভিন্ন সময়ে নিজেরাই নিজেদের নিরপেক্ষতা প্রশ্নাবিদ্ধ করেছে। প্রথমে তারা দ্বায়িত্ব নিয়ে বলল যে, এটা অরাজনৈতিক গণজাগরন, তারপর তারাই বলল যে, রাজনৈতিক না হলে আবার আন্দোলন হয় কিভাবে? তাদের কারো কারো মতে ৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ পাকিস্তানী শোষন, নিপীড়নের বিরুদ্ধে না, বরং ধর্মনিরপেক্ষতার যুদ্ধ ছিল। পুরো ব্যাপারটা দাঁড়িয়েছে এরকম, যে আ.লীগ এর অন্ডথলি মুখে নিয়ে পায়ুপথে নাক গুজে থাকতে হবে, তাহলেই আপনি দেশপ্রেমিক। আর যদি বলেন পায়ু থেকে গন্ধ বের হচ্ছে তাহলেই আপনি রাজাকারের বাচ্চা। শাহবাগ আন্দোলন দুইভাগ হবার পেছনে এই ধরনের মানসিকতাই দায়ী। বাংলাদেশ একটি গনপ্রজাতন্ত্রী দেশ। ভিন্ন মত থাকবেই।গণতন্ত্রের মূলমন্ত্রই তো তাই।৪২ বছর পর জাতি যখন মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় এক হয়ে এক পতাকাতলে দাঁড়িয়েছিল তখন এই ধরনের কার্যকলাপ করা হলে যদি জাতি দ্বিধাবিভক্ত হয়ে পড়ে তাহলে সে দায় আম জনতার নাকি এই ধরনের ফেমস্লাট ব্লগারদের?
সর্বশেষ এডিট : ১০ ই মার্চ, ২০১৩ রাত ১১:৩১
১৫টি মন্তব্য ১৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মব সন্ত্রাস, আগুন ও ব্লাসফেমি: হেরে যাচ্ছে বাংলাদেশ?

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৩:৫২


ময়মনসিংহে হিন্দু সম্প্রদায়ের একজন মানুষকে ধর্মীয় কটূক্তির অভিযোগে পুড়িয়ে মারা হয়েছে। মধ্যযুগীয় এই ঘটনা এই বার্তা দেয় যে, জঙ্গিরা মবতন্ত্রের মাধ্যমে ব্লাসফেমি ও শরিয়া কার্যকর করে ফেলেছে। এখন তারই... ...বাকিটুকু পড়ুন

আরো একটি সফলতা যুক্ত হোলো আধা নোবেল জয়ীর একাউন্টে‼️

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৮:৪০



সেদিন প্রথম আলো-র সম্পাদক বলেছিলেন—
“আজ শেখ হাসিনা পালিয়েছে, প্রথম আলো এখনো আছে।”

একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবে আজ আমি পাল্টা প্রশ্ন রাখতে চাই—
প্রথম আলোর সম্পাদক সাহেব, আপনারা কি সত্যিই আছেন?

যেদিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

হামলা ভাংচুর অগ্নিসংযোগ নয়, আমরা শান্তি চাই

লিখেছেন নতুন নকিব, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:১১

হামলা ভাংচুর অগ্নিসংযোগ নয়, আমরা শান্তি চাই

ছবি এআই জেনারেটেড

হামলা ভাংচুর অগ্নিসংযোগ প্রতিবাদের ভাষা নয় কখনোই
আমরা এসব আর দেখতে চাই না কোনভাবেই

আততায়ীর বুলেট কেড়ে নিয়েছে আমাদের হাদিকে
হাদিকে ফিরে পাব না... ...বাকিটুকু পড়ুন

তৌহিদি জনতার নামে মব সন্ত্রাস

লিখেছেন কিরকুট, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:৫৪




ছবিঃ অনলাইন থেকে সংগৃহীত।


দেশের বিভিন্ন স্থানে সাম্প্রতিক সময়ে ধর্মের নাম ব্যবহার করে সংঘটিত দলবদ্ধ সহিংসতার ঘটনা নতুন করে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। বিশেষ করে তৌহিদি জনতা পরিচয়ে সংঘবদ্ধ হয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুখ গুজে রাখা সুশীল সমাজের তরে ,,,,,,,,

লিখেছেন ডঃ এম এ আলী, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:০৫


দুর্যোগ যখন নামে আকাশে বাতাশে আগুনের ধোঁয়া জমে
রাস্তা জুড়ে কখনো নীরবতা কখনো উত্তাল প্রতিবাদের ঢেউ
এই শহরের শিক্ষিত হৃদয়গুলো কি তখনও নিশ্চুপ থাকে
নাকি জ্বলে ওঠে তাদের চোখের ভেতর নাগরিক বজ্র
কেউ কেও... ...বাকিটুকু পড়ুন

×