somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বিদ্যালয়বিহীন একটি গ্রাম রসুলপুর

১৩ ই ডিসেম্বর, ২০১৮ রাত ২:০৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


বিদ্যালয়বিহীন একটি গ্রাম রসুলপুর। সুনামগঞ্জের জামালগঞ্জ উপজেলার ফেনারবাক ইউনিয়নের এই গ্রামটিতে কোন বিদ্যালয় নেই। যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন এই গ্রামের শিশুরা পার্শ্ববর্তী গ্রামের বিদ্যালয়েও যেতে পারে না। ফলে গ্রামের তিন শতাধিক শিশু শিক্ষার আলো থেকে বঞ্চিত। বছর কয়েক আগে এই গ্রামে একটি বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নেয়া হয়। কিন্তু শেষ পর্যন্ত হয়নি। শিক্ষা প্রকৌশল বিভাগ বিদ্যালয় স্থাপনের জন্য ছয়বার দরপত্র আহবান করেও কোন ঠিকাদার সেখানে কাজ করতে যায়নি, একমাত্র দুর্গম এলাকার জন্য। এই গ্রামের সবচেয়ে কাছের বিদ্যালয়টি হচ্ছে দুই কিলোমিটার দূরে। তারপরেও যোগাযোগ ব্যবস্থা না থাকায় সেই বিদ্যালয়েও যেতে পারে না শিশুরা। দেশের সর্বত্র যখন নতুন নতুন বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হচ্ছে, বেসরকারী বিদ্যালয়গুলো একে একে সরকারিকরণ হচ্ছে, বাড়ছে বিদ্যালয়গামী শিশুর সংখ্যা-ঠিক তখনই এই ধরনের একটি খবর সত্যি কষ্টদায়ক।


রসুলপুর গ্রামটি গড়ে ওঠে প্রায় চার দশক আগে। পার্শ্ববর্তী দিরাই উপজেলার ভাটিপাড়া ইউনিয়নের বেশ কয়েকটি পরিবার এই স্থানে এসে বসতি গড়ে তুলে। এর নামকরণ হয় রসুলপুর। বর্তমানে এই গ্রামে দেড় শতাধিক পরিবারের বসবাস। কিন্তু এই গ্রামে এখন পর্যন্ত কোন বিদ্যালয় গড়ে ওঠেনি। এখানকার শিশুরা লেখাপড়া বঞ্চিত হয়েই বেড়ে উঠছে। অর্থাৎ বিগত প্রজন্ম বর্তমান প্রজন্ম আর ভবিষ্যৎ প্রজন্ম বেড়ে উঠছে শিক্ষার আলো ছাড়াই।
চার বছর আগে গ্রামবাসী একটি বিদ্যালয় স্থাপনের জন্য জমি রেজিস্ট্রি করে দিয়েছেন। কিন্তু এখনও বিদ্যালয় স্থাপনের উদ্যোগ নেই। ইতোপূর্বে প্রায় ৪৮ লাখ টাকা ব্যয়ে একটি বিদ্যালয় স্থাপনের জন্য প্রকল্প গ্রহণ করেও কোন ঠিকাদার পাওয়া যায়নি। তাছাড়া বর্তমানে সরকারের ‘বিদ্যালয়বিহীন এক হাজার গ্রামে বিদ্যালয় স্থাপন’ প্রকল্পের মধ্যেও রসুলপুর প্রাথমিক বিদ্যালয় অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। এখানে দুঃখের খবর এটাই যে, বিদ্যালয় স্থাপনের জন্য অর্থ বরাদ্দ হওয়া সত্ত্বেও চার বছরেও বিদ্যালয়টি স্থাপিত হয়নি। একজন ঠিকাদার নিয়োগ দিতে ব্যর্থ হয় সরকারের সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান।
দেশের প্রতিটি গ্রামে একটি করে প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ওপর গুরুত্ব আরোপ করে আসছে সরকার দীর্ঘদিন ধরে। বিভিন্ন ধাপে বিদ্যালয় স্থাপনের উদ্যোগও নেয়া হয়। কিন্তু এখনও অনেক গ্রাম রয়েছে বিদ্যালয়বিহীন। তেমনি একটি গ্রাম হচ্ছে এই রসুলপুর। এখানে এতোদিনে একটি বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা না হওয়ার প্রধান কারণ হলো সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরের উদাসীনতা। তাছাড়া, দেশব্যাপী অনগ্রসর এলাকায় শিক্ষা, স্বাস্থ্যসহ অন্যান্য খাতের উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছে বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থা। এই ধরনের কোন প্রতিষ্ঠানেরও নজর পড়েনি রসুলপুর গ্রামের দিকে। আর দেশের অন্যান্য অঞ্চলে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন হচ্ছে ব্যাপকভাবে; এই প্রেক্ষিতে রসুলপুর গ্রামটি যোগাযোগ বিহীন দুর্গম হয়েই পড়ে রয়েছে দীর্ঘদিন ধরে। এটাই দুঃখজনক। দুর্গম এলাকায়ও ইদানিং ভাসমান নৌকায় বিদ্যালয় পরিচালনা করা হচ্ছে। রসুলপুর গ্রামের জন্যও একটি ভাসমান বিদ্যালয় চালু করার কথাও চিন্তা করা যায়।
সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০১৮ রাত ২:১৫
৫টি মন্তব্য ৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

গণতন্ত্র আর বাক-স্বাধীনতার আলাপসালাপ

লিখেছেন অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য , ২৭ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৪:২৩


একাত্তর সালে আওয়ামী লীগের লোকজন আর হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা ছিল পাকবাহিনীর প্রধান টার্গেট। যদিও সর্বস্তরের মানুষের ওপর নিপীড়ন অব্যাহত ছিল। গ্রামের পর গ্রাম জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছিল। মুক্তিযোদ্ধা আর তাদের পরিবারের... ...বাকিটুকু পড়ুন

কাফের কুফফারদের দেশে বাস করা হারাম।

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ২৭ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৯:১৩

ফেসবুকে বাঙালিদের মধ্যে ইদানিং নতুন এক ফতোয়া চালু হয়েছে, এবং তা হচ্ছে "দাওয়াতের নিয়্যত ছাড়া কাফের কুফফারদের দেশে বাস করা হারাম।"
সমস্যা হচ্ছে বাঙালি ফতোয়া শুনেই লাফাতে শুরু করে, এবং কোন... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে মুক্তিযোদ্ধাদের মুমিনী চেহারা ও পোশাক দেখে শান্তি পেলাম

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৭ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৯:৫৮



স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে স্টেজে উঠেছেন বত্রিশ মুক্তিযোদ্ধা তাঁদের চব্বিশ জনের দাঁড়ি, টুপি ও পাজামা-পাঞ্জাবী ছিলো। এমন দৃশ্য দেখে আত্মায় খুব শান্তি পেলাম। মনে হলো আমাদের মুক্তিযোদ্ধা আমাদের মুমিনদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

দু'টো মানচিত্র এঁকে, দু'টো দেশের মাঝে বিঁধে আছে অনুভূতিগুলোর ব্যবচ্ছেদ

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১২:৩৪


মিস ইউনিভার্স একটি আন্তর্জাতিক সুন্দরী প্রতিযোগিতার নাম। এই প্রতিযোগিতায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সুন্দরীরা অংশগ্রহণ করলেও কখনোই সৌদি কোন নারী অংশ গ্রহন করেন নি। তবে এবার রেকর্ড ভঙ্গ করলেন সৌদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের দুই টাকার জ্ঞানী বনাম তিনশো মিলিয়নের জ্ঞানী!

লিখেছেন সাহাদাত উদরাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ২:৫৯

বিশ্বের নামীদামী অমুসলিমদের মুসলিম হয়ে যাওয়াটা আমার কাছে তেমন কোন বিষয় মনে হত না বা বলা চলে এদের নিয়ে আমার কোন আগ্রহ ছিল না। কিন্তু আজ অষ্ট্রেলিয়ার বিখ্যাত ডিজাইনার মিঃ... ...বাকিটুকু পড়ুন

×