somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

হারিয়ে যাচ্ছে সুনামগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী রুট পিঠা উৎসব

২৩ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৯ দুপুর ১:৪০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


যেকোনো অঞ্চলের ঐতিহ্যের লালন মূলত সভ্যতার লালন। কারণ ঐতিহ্যের মাঝেই নিহিত থাকে অঞ্চল ও জাতির সভ্যতার শিকড়। ঐতিহ্যে পাওয়া যায় বহুকাল ধরে চলে আসা কবিতা ও গান, পাওয়া যায় শিক্ষা ও অপরূপ প্রকৃতি এবং আরো অনেক কিছু। হরেক রকম পিঠা ও নানান উৎসবেরও সন্ধান মিলে ঐতিহ্যের খোঁজে বের হলে।

সুনামগঞ্জের নানান অঞ্চলে নানান উৎসব হতো যা এখন হারিয়ে যাচ্ছে। আমার গ্রাম বরইতিয়র এর কথাই যদি বলি, তাহলে বলতে হয়, গত শতাব্দীর শেষ দিকেও অগ্রহায়ণ মাসে সেখানে এক ধরনের পিঠা উৎসব হতো। এই পিঠাকে স্থানীয়ভাবে রুট বলা হয়। পিঠা তৈরির জন্য আগের দিন সন্ধ্যা থেকে বাড়িতে চাল ভিজিয়ে রাখা হতো, তারপর সেই চাল ঢেঁকিতে কুটে গুঁড়ো করে কাই মাখানো হয়, পরে ওই কাইয়ের সাথে পিঁয়াজ, হলুদ, আদা ইত্যাদি মসলা সামগ্রী মিশিয়ে দিয়ে নির্দিষ্ট আকৃতির চ্যাপ্টা গোলাকার পিঠা বানানো হয়। একেকটি পিঠা ভাত খাওয়ার থালার আকৃতির হতো। ওই পিঠার উভয় পিঠে তেল মাখিয়ে তা কলাপাতা দিয়ে মোড়ানো হয়।


সকাল থেকেই বাড়ির আঙ্গিনায় বা ধান শুকানোর খলায় প্রথমে চার কোনায় চারটি ইট বা মাটির তৈরি একধরণের একহাত উঁচু পিলার বসিয়ে চুলা তৈরি করা হয়। চুলার উপর সমান টিন বসিয়ে তার উপর এক সাথে দশ-পনেরোটি রুট পিঠা পাশাপাশি রাখা হয়। পরে ওই চুলায় খড় দিয়ে তাতে আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়। ওই আগুন অনেকক্ষণ ধরে জ্বলতো আর আমরা ছোটরা তখন সারা খলায় দৌড়াদৌড়ি করতাম।

তখন প্রত্যেক সামর্থ্যবানদের বাড়িতে খলায় একসাথে রুট পোড়া হতো। রুট পোড়া হয়ে গেলে তা আবার টুকরিতে করে বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার পালা। এরপর প্রতিটি রুট কেটে ছোট ছোট করে বাঁশের বেতের তৈরি ঢালায় করে মাঠে নিয়ে যাওয়া হতো। পুরো গ্রামের সবার রুট একত্রিত করে আবার গ্রামের সবার মাঝে বিতরণ করা হতো। এমন মজার ঐতিহ্যের উৎসব এখন আর হয়না।
সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৯ দুপুর ১:৪২
৪টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

স্মৃতিপুড়া ঘরে

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৩০



বাড়ির সামনে লম্বা বাঁধ
তবু চোখের কান্না থামেনি
বালিশ ভেজা নীরব রাত;
ওরা বুঝতেই পারেনি-
মা গো তোমার কথা, মনে পরেছে
এই কাঠফাটা বৈশাখে।

দাবদাহে পুড়ে যাচ্ছে
মা গো এই সময়ের ঘরে
তালপাতার পাখাটাও আজ ভিন্নসুর
খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

গরমান্ত দুপুরের আলাপ

লিখেছেন কালো যাদুকর, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৫৯




মাঝে মাঝে মনে হয় ব্লগে কেন আসি? সোজা উত্তর- আড্ডা দেয়ার জন্য। এই যে ২০/২৫ জন ব্লগারদের নাম দেখা যাচ্ছে, অথচ একজন আরেক জনের সাথে সরাসরি কথা... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাজীব নূর কোথায়?

লিখেছেন অধীতি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:২৪

আমি ব্লগে আসার পর প্রথম যাদের মন্তব্য পাই এবং যাদেরকে ব্লগে নিয়মিত দেখি তাদের মধ্যে রাজীব নূর অন্যতম। ব্যস্ততার মধ্যে ব্লগে কম আসা হয় তাই খোঁজ-খবর জানিনা। হঠাৎ দু'একদিন ধরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বৃষ্টির জন্য নামাজ পড়তে চায়।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৩৮



ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে বৃষ্টি নামানোর জন্য ইসতিসকার নামাজ পড়বে তার অনুমতি নিতে গিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এটির অনুমতি দেয়নি, যার জন্য তারা সোশ্যাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

=তুমি সুলতান সুলেমান-আমি হুররাম=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৩৬



©কাজী ফাতেমা ছবি

মন প্রাসাদের রাজা তুমি, রাণী তোমার আমি
সোনার প্রাসাদ নাই বা গড়লে, প্রেমের প্রাসাদ দামী।

হও সুলেমান তুমি আমার , হুররাম আমি হবো
মন হেরেমে সংগোপনে, তুমি আমি রবো।

ছোট্ট প্রাসাদ দেবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×