বিকেলের লাঞ্চ করতে করতে আলোচনা হচ্ছিল বাংলাদেশের টাওয়ারগুলোতে বিশেষ করে হসপিটেলে মুসল্লিদের সুবধার্থে তৈরি করে দেয়া নামাযের ব্যবস্থাপনা নিয়ে। দেশে গেলে বিভিন্ন সময় বাধ্য হয়ে সেখানে নামায পড়তে হয়। নামাযে ইমামের তেলাওয়াত শুনলে ইচ্ছে করে টান দিয়ে পেছনে নিয়ে আসি। এমন ইচ্ছে কেবল আমার না, নামাযের গুরুত্ব সম্পর্কে অবগত প্রত্যেক মুসল্লির।
একটি ঘটনা মনে পড়লো। একবার এক মসজিদে নামায চলাকালীন সময়ে হঠাৎ ইমাম সাহেবকে দেখা গেল তেলাওয়াত ছেড়ে কার সাথে যেন কথা কাটাকাটি করছেন। কাহিনী হল, ঐদিন ইমামের পেছনে তেলাওয়াত সম্পর্কে অবগত একজন মুসল্লি দাঁড়িয়েছিলেন। যখন উনি দেখলেন, ইমাম সাহেব নামাযে 'লাহনে-যালি' করে যাচ্ছেন, এমনকি ভুল ধরে দেয়ার পরও শুধরাচ্ছেন না (ভুল ধরার জ্ঞান না থাকলে এবিষয়ে শুধরানো যায় না) তখন ঐ মুছল্লি ইমাম সাহেবকে টেনে প্রথম সারিতে নিয়ে আসলেন। এ বিষয়ে কথা কাটাকাটি থেকে নিয়ে এলাকায় বিচার-সালিশ হয়ে গেল। বাঙালির অভ্যাস অনুযায়ী ইমামের ভুল প্রমাণিত হওয়ার পরও এলাকার সাধারণ পাব্লিক ইমামের পক্ষ নিল।
দেশের প্রায় জায়গায় এ অবস্থা বিরাজ করছে। বিশেষ করে বাংলাদেশের টাওয়ার ও হসপিটেলে এর বেহাল অবস্থা। অনেক জায়গায় কর্তৃপক্ষ কোন ইমাম রাখেন না; যে সুবিধা পায় সেই নামাজ পড়ায়। ঐ সবস্থানে নামায পড়তে গেলে দেখা যায়, দাঁড়ীহীন টাইট শার্ট-পেন্ট পরিহিত ব্যক্তি ইমামতি করাচ্ছেন। ইমামতির ক্ষেত্রে কাপড়ের চেয়ে তেলাওয়াত শুদ্ধ হওয়া শর্ত। দুর্ভাগ্য যে, এই ভাইদের তেলাওয়াত আমাকে প্রতিবার উপরের ঘটনা স্মরণ করিয়ে দেয়। কয়েকদিন পর সেখানে গেলে একই অবস্থা দেখা যায়। উপস্থিত ইমামের সাথে যোগাযোগ করলে তারা নিজেদের অপারগতা স্বীকার করে কর্তৃপক্ষের ঘাড়ে দোষ চাপিয়ে দেন। তবে অনেক ইমামকে সম্মানের সাথে কৌশল প্রয়োগের মাধ্যমে তাদের ভুল ধরিয়ে দেয়ার চেষ্টা করলে তাদের থেকে মুর্খামি কথা শুনতে হয়। এ বিষয়ে কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করলে তারা পাশ কাটিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। আরো কয়েকটি ব্যবসায়ী টাওয়ারে যোগাযোগ করলে একই অবস্থা দেখতে পাই কিন্তু কর্তৃপক্ষ তার অবস্থানে অটল।
আহবান : কর্তৃপক্ষের সচেতনতা তৈরির জন্য দেশে অবস্থানরত প্রত্যের সচেতন মুসল্লিকে বলছিঃ দয়া করে, সময় সুযোগ তৈরি করে আপনারা কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করুন। আপনারা চাইলেই পরিবর্তন আনতে পারেন। (কর্তৃপক্ষ একটা দানবাক্স তৈরি করে রাখলেই কিন্তু ইমামের বেতন উঠে আসবে। যদিও তাদের বেলায় এটার কোন প্রয়োজন পড়বে না।)
সকলের সার্বক্ষণিক শান্তি কামনা করি, ভাল থাকুন সুস্থ থাকুন।
: রিপোস্ট
ছবি: গুগুল।
সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই জুন, ২০১৮ রাত ১২:৫৩