somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ইলেকট্রনিক পার্টস পরিচিতি - ২ !!! ইলেকট্রনিক্সপ্রেমী দের জন্য। B-)B-)

১৮ ই মার্চ, ২০১৩ রাত ১০:০১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ইলেকট্রনিক্স নিয়া যারা কাজ করে তাদের সক্কলেরই সবার আগে ঠিকঠাক মত পার্টস চিনা দরকার।
তা নাহলে, একটা লাগাইতে যাইয়া আরেকটা লাগাইব। আর কানেকশন মারলেই দুম। :P
না অবশ্য সব সময় দুম দাম হয়না, তয় সার্কিট ও কাম করেনা। তাই আমার পেয়ারের ইলেক্ট্রনিকস এর উস্তাদ ভাইদের লাইগ্যা (বইনেরা এই লাইনে আহে না তাই তাগোর নাম নিলাম না) কয়েকখান পার্ট হাজির করলাম এগোর খুমা দেখানির জন্যে। ;)
আইজকা খালি একটা ডিভাইসই দেখামু। কারন এর অনেক রকম টাইপ।
এইডার নাম হইল ডায়োড। জিনিসটা কিচ্ছু না জাস্ট একটা ভালভ। পানির লাইনের ভালভ গুলা যেমন খালি একদিকে পানি যাইতে দেয়, এইটাও তেমনি। এর ভিত্রে দিয়া শুধুমাত্র একদিকেই কারেন্ট যাইতে পারে। অন্যদিকে কারেন্ট যাইতে পারবেনা। তার মানে হইল একদিকে কারেন্টের প্রতি এর রেজিসট্যান্স খুবই কম, আর অন্য দিকে অনেক বেশি।
আইডিয়ালি চিন্তা করলে একদিকে এইটা শর্ট সার্কিট, মানে খালি তারের মত, আর অন্য দিকে এক্কেবারে বন্ধ সুইচের মত। তয় বাস্তবে এই রকম হয়না, হালকা পাতলা কিছু রেজিসট্যানস থাকে। ঐটা প্রব্লেম না।
ডায়োড বানানো হয়, সেমিকন্ডাকটর (যেমনঃ সিলিকন, জার্মেনিয়াম এইগুলা দিয়া)। এইগুলার ক্রিস্টালের ভিত্রে গ্যালিয়াম, আর্সেনিক ইত্যাদির ভেজাল মিশাইয়া পি টাইপ আর এন টাইপ ২ রকমের ক্রিস্টাল তৈরি হয়। এই ২ টারে একলগে চাইপ্যা স্যান্ডুইচ বানাইলেই ডায়োড হইয়া গেল। এইটার ২ ঠ্যাং থাকে। যেইদিক দিয়া কারেন্ট ঢুকতে পারে তারে বলে এনোড আর অন্যটারে কয় ক্যাথোড। অখন আহেন এইটার খুমা দেখি। :)



সাদা দাগআলা দিক টা ক্যাথোড।
নিচে সার্কিটে আঁকানর জন্য ডায়ডের সিম্বল দেখেন।


প্র্যাকটিকাল ডায়োড এর একটা প্রব্লেম আছে। এইটা কারেন্ট প্রবাহের সময় কিছু ভোল্টেজ খাইয়া ফেলায়। এরে কয় ইন্টারনাল ভোল্টেজ ড্রপ।
সাধারনত বেশিরভাগ ডায়োড ই সিলিকন দিয়াই বানানো হয়।
তয় রেডিওর কাজে জার্মেনিয়াম ডায়োড বেশি উপকারি। কারন সিলিকনের ড্রপ ০.৭ ভোল্ট আর জার্মেনিয়ামের ড্রপ ০.৩ ভোল্ট। সুতরাং জার্মেনিয়াম অল্প শক্তির সিগনাল ভাল ধরে। নিচে এইটার চেহারা দেখেন। B-)


আরেক টাইপ এর ডায়োড আছে যেইটা উল্টা দিকেও কারেন্ট যাইতে দেয়। এরে বলে জেনার ডায়োড। নরমাল ডায়োড কে উল্টা দিকে ভোল্টেজ দিলে এইটা কারেন্ট পার হইতে দেয়না ঠিকই, কিন্তু ভাইরে সবার ই তো এটা সহ্যক্ষমতা আছে না কি? এই খানেও একই ব্যাপার। নরমাল ডায়োড এর উল্টা দিকে এটা সর্বোচ্চ ভোল্টেজ সহ্য ক্ষমতা আছে। এর থেকে বেশি দিলে এর ভিতরের গঠন ভেঙ্গে যায়। তখন উল্টা দিকেও কারেন্ট পাস করে।

এইটাকে বলা হয়, রিভার্স ব্রেকডাউন, আর এই পরিমান ভোল্টেজ কে বলে রিভার্স ব্রেক ডাউন ভোল্টেজ। নরমাল ডায়োড এ এইটা অনেক বেশি হয়। কিলো ভোল্টের কাছাকাছি। মজার ব্যাপার হইল এই ভোল্টেজ দেয়ার পর ডায়োড এর ২ প্রান্তের ভোল্টেজ আর বাড়েনা, যদিও কারেন্ট এর পরিমান বাড়ে। এই বুদ্ধি কাজে লাগায়া জেনার ডায়োড বানানো হইছে। এইটাতে বানানোর টাইমে ভেজাল বেশি দেয়া হয়। তখন রিভার্স ব্রেকডাউন ভোল্টেজ কইমা যায়। ২ থিকা ১২ ভোল্ট এর ই বেশি বানানো হয়। এর কাজ হইল এইটা উলটা দিকে একবা্র স্টার্ট হইলে ভোল্টেজ ফিক্সড কইরা দেয়। তয় এইটা নরমাল ডায়োড এর মত নস্ট হইয়া যায়না। ভোল্টেজ রেগুলেটর বানাইতে এইটা ছাড়া গতি নাই।
খুমা দেখেন।


জেনার এর সিম্বল


ডিজিটাল সার্কিটে আর কম্পুটার প্রসেসরে পাওয়ার কনজাম্পশন কমাইতে কম ড্রপ ভোল্টেজ এর ডায়োড লাগে। এই কাজে সেরা হইল শটকি ডায়োড। এর ড্রপ অনেক কম। ০.১ বা ০.২ ভোল্ট মাত্র।
এইটা কমার্শিয়াল প্যাকেজ এ দেখতে নরমাল ডায়োড এর মতই। পার্টস নাম্বার দিয়ে আলাদা করে চিনা যায়, তাই খালি সিম্বল দিলাম। :P


এইটা বানানো হয়, এন টাইপ ক্রিস্টালের সাথে কোন মেটাল লাগাইয়া।
নিচে দেখেনঃ


আরেকটা ডায়োড আছে এইটার নাম টানেল ডায়োড। এই জিনিস আবার নেগেটিভ রেজিসট্যান্স শো করে। যার জন্যে এইটা অসিলেটর বানাইতে কাজে লাগে।




সুপার ফাস্ট কোন কাজে নরমাল ডায়োড ভাল সার্ভিস দেয়না। তখন পিন ডায়োড রে অবশ্যই অবশ্যই দরকার। এইটারে দিয়া সাধারনত গিগা হার্জ রেঞ্জে কাজ করানো হয়।


পি আর এন এর ভিত্রে এক লেয়ার নরমাল সিলিকন দিলেই পিন ডায়োড তৈরি হয়।


সবার লাস্টে যেইটা দেখামু এইটা আইজকাল কার ল্যাংটা পুলাপাইন ও চিনে। গিরামে নাম হইল টুনি বাতি। আর শহুরে দুকানদার আর তাগোর কর্মচারি গুলা এইটা দিয়া ২ ৪ টা বাত্ততি বানাইয়াই নিজেরে বেরাট ইঞ্জিনিয়ার দাবি কইরা বসে (আবাল আর কারে হয়) !!! :P:P

এই মহারথি হইল লাইট এমিটিং ডায়োড বা সংক্ষেপে এলইডি। অনেকে ভুল কইরা লেড বইলা থাকে। এই জিনিস বানানো হয়, গ্যালিয়াম সিলিকন আর্সেনাইড এর ক্রিস্টাল দিয়া। এইটাতে ভোল্টেজ দিলেই এইটা থেকে আলো বাইর হয়। ক্রিস্টালের পদার্থ একটু এদিক সেদিক কইরা আলোর রঙ ভিন্ন করা যায়।

জাইনা রাখেন, এলইডির লম্বা ঠাং পজিটিভ অন্যটা নেগেটিভ। আর হাঁ মাতবরি কইরা এইটা দিয়া বাত্তি বানানোর টাইমে ডাইরেক্ট ব্যাটারির লগে কানেকশন দিয়েন না। পুইড়া যাইব। মিডিলে মোটামুটি ১ কিলো রেজিসট্যান্স লাগায় নিয়েন।



------------------------------------------------------------------

আইজকা এইটুকুই। ডায়োড নামা সমাপ্ত।


আগের পর্বঃইলেকট্রনিক্স পার্টস পরিচিতি - ১ (ছবি ব্লগ) !!! ইলেকট্রনিক্সপ্রেমী দের জন্য।
সর্বশেষ এডিট : ১৮ ই মার্চ, ২০১৩ রাত ১০:৩১
২০টি মন্তব্য ২০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বরিষ ধরা-মাঝে শান্তির বারি

লিখেছেন বিষাদ সময়, ০৬ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১২:১৬





মাসের আধিক কাল ধরে দাবদাহে মানব প্রাণ ওষ্ঠাগত। সেই যে অগ্নি স্নানে ধরা শুচি হওয়া শুরু হলো, তো হলোই। ধরা ম্লান হয়ে, শুষ্ক হয়, মুমূর্ষ হয়ে গেল... ...বাকিটুকু পড়ুন

=নীল আকাশের প্রান্ত ছুঁয়ে-৭ (আকাশ ভালোবেসে)=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৬ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:১৯

০১।



=আকাশের মন খারাপ আজ, অথচ ফুলেরা হাসে=
আকাশের মন খারাপ, মেঘ কাজল চোখ তার,
কেঁদে দিলেই লেপ্টে যাবে চোখের কাজল,
আকাশের বুকে বিষাদের ছাউনি,
ধ্বস নামলেই ডুবে যাবে মাটি!
================================================
অনেক দিন পর আকাশের ছবি নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

পানি জলে ধর্ম দ্বন্দ

লিখেছেন প্রামানিক, ০৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৫২


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

জল পানিতে দ্বন্দ লেগে
ভাগ হলোরে বঙ্গ দেশ
এপার ওপার দুই পারেতে
বাঙালিদের জীবন শেষ।

পানি বললে জাত থাকে না
ঈমান থাকে না জলে
এইটা নিয়েই দুই বাংলাতে
রেষারেষি চলে।

জল বললে কয় নাউযুবিল্লাহ
পানি বললে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সমস্যা মিয়ার সমস্যা

লিখেছেন রিয়াদ( শেষ রাতের আঁধার ), ০৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:৩৭

সমস্যা মিয়ার সিঙ্গারা সমুচার দোকানে প্রতিদিন আমরা এসে জমায়েত হই, যখন বিকালের বিষণ্ন রোদ গড়িয়ে গড়িয়ে সন্ধ্যা নামে, সন্ধ্যা পেরিয়ে আকাশের রঙিন আলোর আভা মিলিয়ে যেতে শুরু করে। সন্ধ্যা সাড়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

এই মুহূর্তে তারেক জিয়ার দরকার নিজেকে আরও উন্মুক্ত করে দেওয়া।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ০৬ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:২৬


তারেক জিয়া ও বিএনপির নেতৃত্ব নিয়ে আমি ব্লগে অনেকবারই পোস্ট দিয়েছি এবং বিএনপি'র নেতৃত্ব সংকটের কথা খুব স্পষ্টভাবে দেখিয়েছি ও বলেছি। এটার জন্য বিএনপিকে সমর্থন করে কিংবা বিএনপি'র প্রতি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×