যদি তুমি তোমার ভালবাসার মানুষকে হারাতে না চাও তবে বিয়ের আগে কোনভাবেই তার সাথে শারিরীক সম্পর্কে যাবে না, কারণ এর পর আর একটি ছেলে একটি মেয়েকে বিয়ে করার মত কোন কারণ খুঁজে পায় না । সবাই এক নয় তারপর ও বোনেরা সাবধান !!!
ভালবাসা ফ্যাক্ট - ১
ইরা একটি নামী দামী মাল্টি ন্যাশনাল কোম্পানীতে চাকুরি করে। অসম্ভব রূপবতী,অবিবাহিত । অন্যান্য রূপবতী মেয়েদের মত তার মন ও খুব নরম টাইপের , এবং কিছুটা বোকা । কথা একটু কম বলে কিন্তু যথেষ্ট অভিমানী । কিছুদিন হল তার নতুন বস এসেছে, আহসান । অসাধারণ একজন মানুষ । ইরাকে খুব রেসপেক্ট করে কথা বলে । ইরা যেন একটু একটু করে আহসানের প্রেমে পড়তে লাগল । আহসান ও ব্যাপারটা বুঝতে পারছিল। একদিন ইরাকে ডেকে আগামী শুক্রবার রাতে ডিনারের অফার করল । ইরা ও যেন এটাই চাইছিল ...অন্তত ওর চোখ মুখ দেখে তাই মনে হচ্ছিল । কাঙ্ক্ষিত দিনটি আসতেই ইরার হার্ট বিট বাড়তে লাগল । কি পরবে , কি বলবে তা ভেবে ই অস্থির হচ্ছিল । অনেক খুজে খুঁজে শেষ পর্যন্ত পরল পিংক কালারের একটি জামদানি । ঠিক যেন ডানা কাটা পরীর মত লাগছিল ইরাকে । আটটায় আহসানের আসার কথা ইরারদের বাসার নিচে । আটটা বাজতেই আহসান চলে এল আর ইরাও যেন পাখির মত উড়ে গিয়ে হাজির হল আহসানের সামনে । ইরাকে দেখে একটু থতমত খেয়ে গেল আহসান, চোখের সামনে এত রূপবতী মেয়ে দেখে একটু অবাক হওয়ার ই কথা । নিজেকে সামলে ইরাকে গাড়িতে উঠতে বলে । রেস্টুরেন্টে যাওয়ার আগ পর্যন্ত সারা রাস্তা একনাগাড়ে ইরার গুণগান গেয়ে গেছে আহসান ।
ক্যান্ডাল লাইট ডিনারের ব্যবস্থা দেখে একটু অপ্রস্তুত হয়ে গেল ইরা । এবার আরো অবাক হওয়ার পালা । আহসান এবার হাটু গেঁড়ে বসে ইরার দিকে এগিয়ে দিল একগুচ্ছ গোলাপ ... আর বলল "উইল ইউ ম্যারি মি '
আনন্দে ইরার চোখে পানি চলে এল। সে আহসানের হাত থেকে বাড়িয়ে দেয়া গোলাপের তোড়াটি নিয়ে সজোরে মাথা নেড়ে স্মমতি জানাতে লাগল ।তারপর চলতে লাগল তাদের জামানো না বলা হাজারো কথা । অফিসের শেষে দুজনেই কিছু সময় কাটায় একসাথে । কখন ও শপিং , কখনো মুভি দেখা , কখনো বা রেস্টুরেন্টে , কখনো লং ড্রাইভে ... এরি মাঝে আহসানের হাত ইরার হাত থেকে কাধে, কাঁধ থেকে কোমরে , ঠোট হাত থেকে কপালে, কপাল থেকে নাকে , নাক থেকে ঠোঁটে নেমে এল...
এমনি করে দুমাস কেটে গেল । আহসান একদিন ইরাকে বলল তুমি তো আমার বাসায় কখনো যাও নি ... চলো আজকে আমার বাসা দেখে আসবে । ইরা ও রাজি হয়ে গেল । কিছুদিন পর তো ওরা বিয়ে করছে ই যেতে তো পারে ই ।
অফিস থেকে আজকে দুজনেই আগে বের হয়ে গেল আহসানের বাসায়। চমৎকার সাজানো সুন্দর বাড়ী । ওর বাবা মা আলাদা ফ্ল্যাটে থাকে তাই বাসায় কাজের লোক ছাড়া আর কেউ নেই । কিছুক্ষন সময় কাটানোর পর ইরার সাথে একান্ত হওয়ার ইচ্ছা জানাল আহসান । ইরার ইচ্ছা নেই বিয়ের আগে কোন রকম শারীরিক সম্পর্কে জড়ানোর ।
আহসান এবার ওকে বুঝাতে লাগল - আমরা তো কিছুদিন পর বিয়ে করছি ই । তুমি কি আমাকে বিশ্বাস করতে পার না ? আমার ভালবাসা কি তোমার কাছে এতটাই ভিত্তিহীন ...ব্লা ব্লা ব্লা
একসময় আহসানের আবেগের কাছে ইরার বিকেক হার মানে ।
এখন প্রায়ই ইরাকে আহসানের ফ্ল্যাটে আসতে হয় , নয়ত ও খুব মন খারাপ করে । কেমন যেন বদলে যাচ্ছে ও দিন দিন । আগের মত সময় দেয় না ,ভালভাবে কথা ও বলে না । এদিকে অফিসের সবাই ই মোটামুটি ব্যাপারটা জানে । কেউ কেউ আবার বিয়ে কবে হচ্ছে , দাওয়াত পাবে কিনা এসব ও জানতে চায় । বিয়ের কথা বললেই আহসান সেটা এড়িয়ে যায় আজকাল। এদিকে বাসা থেকে ও বিয়ের জন্য তাড়া দিচ্ছে ।
যেটা সবচেয়ে বড় সমস্যা তা হল সে নিজের মধ্যে অন্য আরেকটি জীবনের অস্তিত্ব টের পাচ্ছে । আহসান কে বলি বলি করেও বলা হচ্ছে না ।
সেদিন শনিবার ছিল , আহসান অফিসে আসে নি । সকাল থেকে ফোন ও ধরছে না। কোন বিপদ হল কিনা তা ভেবে ই অস্থির লাগছে । লাঞ্চের পর অফিস থেকে বেড়িয়ে সোজা আহসানের বাসায় চলে গেল । কলিং চাপতেই দরজা খুলল ২২ - ২৩ বছরের একটি মেয়ে ।আহসান কোথায় জিজ্ঞেস করতেই মেয়েটি উলটো ওর পরিচয় জানতে চাইল। মেয়েটিকে কোন উত্তর না দিয়ে ইরা ভিতরে গিয়ে দেখল আহসান মাত্র শাওয়ার নিয়ে বের হয়েছে । ইরাকে দেখে বিন্দুমাত্র বিচলিত হল না সে , নরম সুরে জিজ্ঞেস করল কেন এসেছে এখানে ।
ইরা -মেয়েটি কে জানতে ?
আহসান - ও রাতে ছিল এখানে এক বন্ধু সে আমার।
ইরা বাকরুদ্ধ হয়ে গেল । সোজাসুজি জানতে চাইল কিছুদিন পর আমরা বিয়ে করব কেন তুমি এটা করলে ।
আহসান - দেখ তোমার মত মেয়েকে আমি আসলে বিয়ে করতে চাই না । মানে যে মেয়ে বিয়ের আগে কোন ছেলের সাথে শারীরিক সম্পর্কে জড়াতে পারে সে মেয়ে ত ভাল না । তুমি আর কার কার সাথে কি কি করেছ তা কে জানে ? আমার আশায় না থেকে তুমি তোমার রাস্তা দেখ ।
ইরার মাথায় যেন বাজ ভেঙ্গে পরল। সবকিছু শুনে আর একটি কথা ও না বলে চোখের পানি আটকে বের হয়ে এল এও রূম থেকে। পিছন থেকে শুনতে পেল মেয়েটি আহসান কে জিজ্ঞেস করছে হু ইজ সি ডারলিং... উওর শোনার অপেক্ষা না করে দ্রুত বের হয়ে গেল সেখান থেকে ।
হয়ত মামলা মকাদ্দমা , জোর জবরদস্তি করলে সে আহসানকে পেত । কিন্তু যে তাকে ভালই বাসেনি তার ভালবাসাকে মূল্যায়ণ করে নি, কি হবে তাকে পেয়ে ? সে যখন ঘরে ইরাকে রেখে বাইরের আরেকটি মেয়ের সাথে রাত কাটাবে তখনকার সময়টাকে সে কিভাবে মেনে নিবে ? কয়লা ধুইলে ময়লা যায় না ...। ইউ হেব টু , বুঝতে হবে
wink emoticon
মোরাল অব দা স্ট্যাটাস - বিয়ের আগেই "মন চাইলে মন পাবে ,দেহ চাইলে দেহ, সব ই হবে অগোচরে জানবে না তো কেহ" নীতি থেকে বের হয়ে আসুন । নিজে ভাল থাকুন , অন্যকে ভাল রাখুন ।
সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই অক্টোবর, ২০১৫ সকাল ১১:০৬