somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

টি- টুয়েন্টি বিশ্বকাপের উদ্বোধনী আয়োজনঃ পাস না ফেল? (পুনঃ)

২৮ শে মার্চ, ২০১৪ দুপুর ২:৫১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বাংলাদেশ, সব সম্ভবের একটি দেশ। তা ফিনিক্স পাখির মত ভস্ম থেকে জেগে নীলাকাশে জয় কেতন হয়ে উড়তে পারে, আবার হাত ছোঁয়া দূরত্ব থেকে সোনার হরিণকে স্পর্শ করতে করতে ব্যর্থ হতে পারে। প্রথম উপমার ভুরি ভুরি নিদর্শন আছে, একই সাথে আছে দ্বিতীয় উপমা সদৃশ হতাশ করার নমুনা। ১৩ মার্চ গোধূলি লগনে আনুষ্ঠানিক পর্দা উঠল টি- টুয়েন্টি বিশ্বকাপ-২০১৪ এর। বাংলাদেশের গর্ব করার দারুণ উপলক্ষ, কারণ এককভাবে গোটা টুর্নামেন্ট আয়োজনের সুযোগ আমরা পেয়েছি। ২০১১ সালের বিশ্বকাপ উদ্বোধনে আমাদের চৌকস কারিশমা আর সাফল্যমণ্ডিত অনুষ্ঠান পুরো বিশ্বে তাক লাগিয়ে দিয়েছিল। বাংলাদেশও পারে, তার সামর্থ্য আছে বিশ্বমানের জমকালো আয়োজন করার- তা প্রমাণিত সত্য। এবারের অনুষ্ঠানটিও আশার সঞ্চার করেছিল; ২০১১ কে ছাড়িয়ে না যাক, অন্তত সম পর্যায়ের সফল তো হবেই। হাজারো দর্শক কাড়ি কাড়ি টাকা দিয়ে টিকেট কিনল, বিকাল নাগাদ লাখো দর্শক বসল টিভি সম্মুখে। স্টেডিয়ামের ভেতরে কেমন পরিবেশ ছিল জানি না। তবে, টিভি দর্শকরা পরিষ্কার প্রতারণা ও ধাঁধার শিকার হয়েছেন তা বলার অপেক্ষা রাখে না। যাদের স্যাটেলাইট সম্প্রচার সুবিধা নেই, অন্তত বিটিভি যারা দেখেছেন, তাদের আশার গুঁড়ে বালির ছিটা পড়েছে। বিকাল ৪ টা থেকে উদ্বোধনী অনুষ্ঠান সরাসরি দেখানোর কথা থাকলেও বিকাল গড়িয়ে সন্ধ্যা, অতঃপর সন্ধ্যা গড়িয়ে ঘড়িতে ৭ টা বাজলেই কেবল লাইভ স্ট্রিমিং বা সরাসরি সম্প্রচারে গিয়েছে তারা। ততক্ষণে অবশ্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর স্বাগত বক্তব্য এবং শুভ উদ্বোধন ঘোষণার ক্ষণ চলছিল। অর্থাৎ, বিকেল এবং সন্ধ্যায় নির্ধারিত বাংলাদেশী শিল্পীদের হৃদয়গ্রাহী পরিবেশনা থেকে পুরো বঞ্চিত হল টিভি দর্শকেরা। এটি অব্যবস্থাপনার প্রথম নিদর্শন। এরপর সরাসরি সম্প্রচারের নামে চলল ক্রীড়া কৌতুক। দুই-তিন মিনিট পরপর বিজ্ঞাপন আর অসহ্য পুরনো ধারণকৃত ভিডিও প্রচার করে মানুষের বিশদ্গারই অর্জন করেছে টিভি। নয়টার পর থেকে যখন সরাসরি সম্প্রচারে আবার গেল, সবার চোখ ছানাবড়া। একি! ভারতের কোন চ্যানেল ভুলে চাপ দেইনি তো! স্বাধীনতার মাস মার্চে হিন্দি গান এবং উন্মাদ অনুষ্ঠানের সরগরম। এ আর রহমান, জাভেদ আলী, শ্বেতা পণ্ডিত সহ তাদের ভিনদেশী বহরের একক প্রদর্শনী চলল ঘণ্টার পর ঘণ্টা। স্টেডিয়ামে দর্শকদের চূড়ান্ত ধৈর্য পরীক্ষা হয়েছিল বৈকি। নিজ দেশের মাটিতে অনুষ্ঠান, অথচ নিজের সংস্কৃতিকে উপেক্ষা করে ঢালাও ভাবে ভারতীয় প্রদর্শনী কতখানি গ্রহণযোগ্য? ভারতের মাটিতে কোন ক্রীড়া আসর হলেও তো একচেটিয়া প্রদর্শনী এরকম একচোখা ভাবে হত না! স্ব বিবেককে জিজ্ঞাসা করলে অপমানিত-ই হতে হয়। পূর্ব নির্ধারিত থাকলেও দেশ সেরা ব্যান্ড মাইলস বিশেষ কারণে মঞ্চে উঠতে পারে না, এর থেকে লজ্জার কিছু থাকতে পারে? স্ব-শিল্পীদের জন্য পনের মিনিট সময় ক্ষেপণ কি বেশী কিছু? এই অনুষ্ঠানের আয়োজকদের বিবেক এবং বুদ্ধি কি ভিন সংস্কৃতির উত্তাল বাতাসে উড়ে গিয়েছিল? আতশ বাজির বর্ণিল কারিশমাতেই কি উৎসুক চোখ তৃপ্ত হয়, পাছে যদি চলে হিন্দি নর্তন-কুর্দন আর একঘেয়ে ভাঁড়ামি? কর্তাব্যক্তি এবং সুধীজনদের কাছে কিছু প্রশ্ন তাই রেখে গেলাম। অথচ এই সুবর্ণ সুযোগ দিয়ে ২০১১ সালের অনুষ্ঠানকে ছাড়িয়ে যাওয়া কি প্রত্যাশিত ছিল না? চারিদিকে কান পাতলেই শোনা যাচ্ছে জনমুখে অতৃপ্তির ব্যাপক কানাঘুষা। এবারের উদ্বোধনী আয়োজনটি তাই পাস না ফেল?- নম্বর দেওয়ার দায়িত্ব দর্শক যারা ছিলেন, তাদের সবার উপর।
সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে মার্চ, ২০১৪ দুপুর ২:৫৬
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মৃত্যু ডেকে নিয়ে যায়; অদৃষ্টের ইশারায়

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৭ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:৩৯

১৯৩৩ সালে প্রখ্যাত সাহিত্যিক উইলিয়াম সমারসেট মম বাগদাদের একটা গল্প লিখেছিলেন৷ গল্পের নাম দ্য অ্যাপয়েন্টমেন্ট ইন সামারা বা সামারায় সাক্ষাৎ৷

চলুন গল্পটা শুনে আসি৷

বাগদাদে এক ব্যবসায়ী ছিলেন৷ তিনি তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

ফিরে এসো রাফসান দি ছোট ভাই

লিখেছেন আবদুর রব শরীফ, ১৭ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৩৮

রাফসানের বাবার ঋণ খেলাপির পোস্ট আমিও শেয়ার করেছি । কথা হলো এমন শত ঋণ খেলাপির কথা আমরা জানি না । ভাইরাল হয় না । হয়েছে মূলতো রাফসানের কারণে । কারণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

কুমীরের কাছে শিয়ালের আলু ও ধান চাষের গল্প।

লিখেছেন সোনাগাজী, ১৭ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৩:৪০



ইহা নিউইয়র্কের ১জন মোটামুটি বড় বাংগালী ব্যবসায়ীর নিজমুখে বলা কাহিনী। আমি উনাকে ঘনিষ্টভাবে জানতাম; উনি ইমোশানেল হয়ে মাঝেমাঝে নিজকে নিয়ে ও নিজের পরিবারকে নিয়ে রূপকথা বলে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সভ্য জাপানীদের তিমি শিকার!!

লিখেছেন শেরজা তপন, ১৭ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০৫

~ স্পার্ম হোয়েল
প্রথমে আমরা এই নীল গ্রহের অন্যতম বৃহৎ স্তন্যপায়ী প্রাণীটির এই ভিডিওটা একটু দেখে আসি;
হাম্পব্যাক হোয়েল'স
ধারনা করা হয় যে, বিগত শতাব্দীতে সারা পৃথিবীতে মানুষ প্রায় ৩ মিলিয়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

রূপকথা নয়, জীবনের গল্প বলো

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ১৭ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:৩২


রূপকথার কাহিনী শুনেছি অনেক,
সেসবে এখন আর কৌতূহল নাই;
জীবন কণ্টকশয্যা- কেড়েছে আবেগ;
ভাই শত্রু, শত্রু এখন আপন ভাই।
ফুলবন জ্বলেপুড়ে হয়ে গেছে ছাই,
সুনীল আকাশে সহসা জমেছে মেঘ-
বৃষ্টি হয়ে নামবে সে; এও টের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×