যে শিক্ষা জাতির মেরুদন্ডের জন্য হুমকি স্বরূপ তা আবার কেমন শিক্ষা!!
প্রবাদ বাক্যে যে মেরুদন্ডের কথা বলা হয়েছে তা ভাবগত বিশ্লেষণের প্রতীকী রুপ। কিন্তু এই পোস্টের তাৎপর্য ভাবগত দিক থেকে নয়, আক্ষরিক অর্থে। জী, আমি শরীরী মেরুদণ্ডের কথা বলছি।
মূল আলোচনায় যাবার পূর্বে সরকারের প্রতি সাধুবাদ জ্ঞাপন করছি বছরের প্রথম দিনে ছাত্রছাত্রীর হাতে নতুন বই তুলে দেয়ার জন্য। শুক্রবার সরকারি ছুটি হওয়া সত্ত্বেও সরকার প্রতিশ্রুতি রক্ষা করেছে, যা প্রশংসার দাবী রাখে।
এবার আলোচনায় আসা যাক। শিক্ষা গ্রহণের জন্য অসংখ্য মাধ্যমের মধ্যে পাঠ্যপুস্তক একটা মাধ্যম। যার দরুন একদিকে যেমন জ্ঞান আরোহণ হয়, অন্যদিকে প্রাতিষ্ঠানিক স্বীকৃতি লাভ করা যায়। কিন্তু পাঠ্যপুস্তকের বাহিরেও শিক্ষার শাখা প্রশাখা সর্বত্র ছড়িয়ে আছে। যেমন, সংবাদপত্র, বিভিন্ন প্রাতিষ্ঠানিক পাঠ্যপুস্তক বহির্ভূত বই, টেলিভিশন ইত্যাদি।
আমার এলাকার ছোট ভাই এবার ৮ম শ্রেণীতে। ওর নতুন বই দেখে যতটা না আনন্দিত হয়েছি তার চেয়ে বেশি বিস্মিত হয়েছি!! সদ্য ৭ম শ্রেণী শেষ করা বাচ্চা ছেলেটার হাতে ১৪ টা বই তুলে দেয়া হয়েছে। একজন ছাত্রের যদি প্রাতিষ্ঠানিক বই ১৪ টা হয় তবে সে অন্যান্য সেক্টর থেকে কিভাবে জ্ঞান আরোহণ করবে একবার ভেবে দেখবেন কি?
আচ্ছা শিক্ষার কথা না হয় বাদ দিলাম, তার কি বিনোদন কিংবা বিশ্রামের প্রয়োজন নেই?
প্রতিদিন দাঁড়িয়ে বাচ্চাকাচ্চাদের স্কুলে যাওয়া দেখি। কাঁধে ব্যাগ নিয়ে প্রতিটা বাচ্চা বইয়ের ভাড়ে কুঁজো হয়ে স্কুলে যায়। যেন তাদের পিঠে বই নয় একটা চালের বস্তা তুলে দেয়া হয়েছে। ব্যাগে কি শুধু বই-ই থাকে? বইয়ের সাথে কিছু খাতা-কলম, নোট, জ্যামিতি বক্স, টিফিন বক্স, পানির বোতল প্রভৃতি আইটেমসহ যে বাচ্চাটা মাইল এর পর মাইল হেটে স্কুলে যায় তার কোমল মেরুদন্ডে কি প্রভাব পড়েনা?
তবে কি শিক্ষা শরীরী মেরুদন্ডের জন্য হুমকি স্বরূপ নয়??
আমাদের কর্তৃপক্ষ কেন বোঝেনা যে বইয়ের সংখ্যা বাড়ালেই জ্ঞানের পরিসীমা বৃদ্ধি পায়না। বরং পড়ালেখার প্রতি অনীহা সৃষ্টি হয়। যা পরবর্তীতে ভাবগত "মেরুদন্ড" কে চূর্ণবিচূর্ণ করে দেয়।
মেধা যাচাই হোক শিক্ষার ক্ষেত্র বিস্তৃতির মাধ্যমে, বই এর সংখ্যা বৃদ্ধিতে নয়।
সর্বশেষ এডিট : ২১ শে জানুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৪:৩৮