somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সেলিম ওসমাণ-কে বলছি ...

১৮ ই মে, ২০১৬ দুপুর ২:৪৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

পুরা ইউরোপকে পরাজিত করার পর আলেকজেন্ডার এশিয়া আক্রমনের প্রস্তুতি নিচ্ছে, সে সময় তিনি অবস্থান করছিলেন কার্নিসে। স্থানীয় সব জ্ঞানী ব্যেক্তিরা প্রতিদিনই তার কাছে আসে অভিনন্দন জানাতে। কিন্তু ডায়াজেনিস আসেনা ! আলেকজেন্ডারের খুব শখ, মহাজ্ঞানী ডায়াজেনিসের সাথে একটু দেখা করার। শেষে নিজেই গেলেন....গিয়া দেখেন বাড়ির সামনে একটু খোলা জায়গায় শুয়ে রোদ পোহাচ্ছেন বৃদ্ধ দার্শনিক ! আলেকজেন্ডার তার সামনে দাড়িয়ে নিজের পরিচয় দিয়ে জানালেন, "আমি কি আপনার কোনো উপকারে আসতে পারি ?" ডায়াজেনিস শান্ত সুরে বললেন, "আপনি আমার আর সূর্যের মাঝে আড়াল করে দাড়াবেন না, এর বেশি আর কোনো উপকার চাইনা !" উত্তর শুনে আলেকজেন্ডার সামান্যতম রাগ করলেননা, বরং শ্রদ্ধায় বলে উঠলেন, "আমি যদি আলেকজেন্ডার না হতাম তাহলে ডায়াজেনিস হতে চাইতাম" !

আলেকজেন্ডারের শিক্ষক ছিলেন মহাজ্ঞানী এরিস্টটল। অনেক ঐতিহাসিকের অভিমত, নিজেকে বিশ্বজয়ী হিসেবে গড়ে তোলার শিক্ষা আলেকজেন্ডার পেয়েছিলেন এরিস্টটল এর কাছ থেকে। গুরু সম্পর্কে আলেকজেন্ডার বলতেন, "জীবন পেয়েছি পিতার কাছে, কিন্তু জীবনকে মহান করার শিক্ষা পেয়েছি গুরুর কাছে।" এরিস্টটলের গবেষনার সমস্ত দ্বায়ভার আলেকজেন্ডার নিজে গ্রহণ করেছিলেন। কোনো দেশ দখল করে তা ধংস করার পূর্বে প্রাচীন ও মূল্যবান সব বই তিনি এরিস্টটল এর জন্য পাঠিয়ে দিতেন।

কিছু পন্ডিতের মতে "প্লেটো", সক্রেটিসের চেয়েও বড় দার্শনিক ছিলেন। কিন্তু সবসময়ই প্লেটো নিজেকে আড়ালে রেখেছেন, প্রকাশ করেননি কখনো। প্লেটোর মতো প্রতিভাবান পুরুষ যে শুধুমাত্র সক্রেটিসের অন্ধ অনুকরণ করে তার অভিমতকেই প্রকাশ করেছেন, এ কথা মেনে নেয়া কষ্টকর ! কিন্তু বাস্তবে তিনি তাই করেছেন। সারাজীবন ধরে গুরুর বাণীই প্রচার করে গেছেন।
প্রাচীন কালের একজন অসম্ভব খারাপ এবং ভালো মানুষের উদাহরণ এই কারণে দিলাম, আলেকজেন্ডার আর প্লেটো সম্পূর্ণ ভিন্ন ধারার মানুষ হলেও, তারা সকলেই বিজ্ঞ, জ্ঞানী শিক্ষকদের হৃদয় দিয়ে সম্মান করতেন।

আর আজ ! আড়াই হাজার বছর পরে, অকাট মুর্খ জনপ্রতিনিধিদের কাছে এই দেশের বিজ্ঞ শিক্ষকরা লাঞ্চিত হচ্ছে !
এথেন্সের ৫০১ সদস্যের জুড়ি বোর্ড যখন সক্রেটিসের মৃত্যু দন্ড দেয় তখন তিনি শান্ত স্বরে বলেছিলেন-
" এখন সময় হয়েছে আমাদের সবার চলে যাবার, তবে আমি যাব মৃত্যুর দিকে, তোমরা যাবে জীবনের দিকে। জীবন কিংবা মৃত্যু- একমাত্র ঈশ্বরই বলতে পারেন এর মাঝে শ্রেষ্ঠ কে ?

আমরা ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি চাইনা ! এম,পি সেলিম ওসমাণ-কে নাকে ক্ষত দিয়ে শ্যামল কান্তি নাগ স্যারের পা ধরে ক্ষমা চাইতে হবে, এটাই শেষ কথা !
সর্বশেষ এডিট : ১৮ ই মে, ২০১৬ দুপুর ২:৫৪
২টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বিসিএস দিতে না পেরে রাস্তায় গড়াগড়ি যুবকের

লিখেছেন নাহল তরকারি, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৫৫

আমাদের দেশে সরকারি চাকরি কে বেশ সম্মান দেওয়া হয়। আমি যদি কোটি টাকার মালিক হলেও সুন্দরী মেয়ের বাপ আমাকে জামাই হিসেবে মেনে নিবে না। কিন্তু সেই বাপ আবার ২০... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। আমের খাট্টা

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৫৪



তাতানো গরমে কাল দুপুরে কাচা আমের খাট্টা দেখে ব্যাপারটা স্বর্গীয় মনে হল । আহা কি স্বাদ তার । অন্যান্য জিনিসের মত কাচা আমের দাম বাড়াতে ভুল করেনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ডাক্তার ডেথঃ হ্যারল্ড শিপম্যান

লিখেছেন অপু তানভীর, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:০৪



উপরওয়ালার পরে আমরা আমাদের জীবনের ডাক্তারদের উপর ভরশা করি । যারা অবিশ্বাসী তারা তো এক নম্বরেই ডাক্তারের ভরশা করে । এটা ছাড়া অবশ্য আমাদের আর কোন উপায়ই থাকে না... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার ইতং বিতং কিচ্ছার একটা দিন!!!

লিখেছেন ভুয়া মফিজ, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:০৩



এলার্ম এর যন্ত্রণায় প্রতিদিন সকালে ঘুম ভাঙ্গে আমার। পুরাপুরি সজাগ হওয়ার আগেই আমার প্রথম কাজ হয় মোবাইলের এলার্ম বন্ধ করা, আর স্ক্রীণে এক ঝলক ব্লগের চেহারা দেখা। পরে কিছু মনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

কে কাকে বিশ্বাস করবে?

লিখেছেন অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য , ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৩৯


করোনার সময় এক লোক ৯৯৯ এ ফোন করে সাহায্য চেয়েছিল। খবরটা স্থানীয় চেয়ারম্যানের কানে গেলে ওনি লোকটাকে ধরে এনে পিটিয়েছিলেন। কারণ, ৯৯৯ এ ফোন দেওয়ায় তার সম্মানহানি হয়েছে।

সমাজে এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

×