somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

হরতাল ছাড়াও কঠোর কর্মসূচি আসছে

২৬ শে মার্চ, ২০১৩ রাত ১১:১০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

সরকার পতনের আন্দোলনে কঠোর অবস্থান থেকে সরবেন না বিএনপির চেয়ারপারসন ও ১৮-দলীয় জোটের নেতা বেগম খালেদা জিয়া। বরং হরতাল ছাড়াও ‘চলো চলো ঢাকা চলো’ ধরনের কর্মসূচির কথাও ভাবা হচ্ছে। এই কর্মসূচিতে বাধা দেওয়া হলে ‘যেখানে বাধা সেখানেই অবস্থান’ নেয়ার মতো নির্দেশ দেওয়া হতে পারে নেতা-কর্মীদের।

তবে এ বিষয়ে দলের শীর্ষ নেতাদের মধ্যে দ্বিমত থাকলেও খালেদা জিয়া অনড়। নেতারা কেউ কেউ বলছেন, সরকারের মেয়াদ শেষ হওয়ার তিন মাস আগে থেকে আন্দোলনে পুরোপুরি কঠোর অবস্থান নিলে ভালো হবে। কারণ, এই মুহূর্তে কঠোর আন্দোলন করে ব্যর্থ হলে তা দলের জন্য ভালো হবে না।

দলীয় সূত্র জানায়, বিএনপির চেয়ারপারসনকে বিভিন্ন সময় যারা পরামর্শ দেন, তারা কিছূদিন আগেও এই মুহূর্তে কঠোর অবস্থানে না যাওয়ার পরামর্শ দেন। কিন্তু খালেদা জিয়া সিঙ্গাপুর থেকে চিকিৎসা শেষে দেশে ফেরার পর তারাই আবার সরকারের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নেয়ার পরামর্শ দেন। এর পরই খালেদা জিয়া ‘সরকার পতনের এক দফা’ আন্দোলনের ঘোষণা দেন।

বিএনপি ও জোটের নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আবারও সরকার পতনের আন্দোলনে বিভিন্ন ইস্যুতে হরতাল দেবে ১৮ দল। তবে এপ্রিল মাসের যেকেনো সময় আবার ‘ঢাকা চলো’ কর্মসূচির মতো রাজধানীতে মহাসমাবেশের ঘোষণা দেয়া হতে পারে এবং সেখান থেকেই নতূন কর্মসূচি ঘোষণা দেয়া হবে। আর গত বছরের ১২ মার্চের মতো এ কর্মসূচিতে সরকারের পক্ষ থেকে বাধা দেয়া হলে ‘যেখানে বাধা সেখানেই অবস্থান’ করার নির্দেশ দেয়া হতে পারে বলেও জানা গেছে।

আর বিএনপি মনে করে, দেশের আলেম সমাজ এখন তাদের পক্ষে। বিশেষ করে মাওলানা ফরিদ উদ্দীন মাসঊদের নেতৃত্বে ওলামা মাশায়েখ তৌহিদি জনতা পরিষদ দেশের সব আলেমকে নিয়ে রাজধানীতে ২৩ মার্চ মহাসমাবেশের ঘোষণা দিয়ে সমাবেশ করলেও তাতে দেশের বিশিষ্ট আলেমরা যোগ দেননি। অন্যদিকে, ‘নাস্তিক মোরতাদদের’ শাস্তিসহ বিভিন্ন দাবিতে ৬ এপ্রিল ঢাকার অভিমুখে হেফাজতে ইসলামের লংমার্চ সফল হবে বলে মনে করে দলটি। তাদের ধারণা, গণজাগরণ মঞ্চ ও ব্লগারদের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়ায় বিএনপির প্রতি হেফাজতে ইসলামের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট আলেমরা খুশি।

এদিকে, কয়েক দিনে বিভিন্ন জেলায় জনসভা ও শোকসভায় যোগ দিয়ে সরকার পতনের আন্দোলনে নতুন করে কঠোর কর্মসূচির ইঙ্গিত দিয়েছেন বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া।

১৫ মার্চ মুন্সিগঞ্জে দুর্বৃত্তদের হামলায় হিন্দুসম্প্রদায়ের ক্ষতিগ্রস্ত মন্দির পরিদর্শন শেষে স্থানীয় বিএনপি আয়োজিত জনসভায় তিনি বলেন, “অপকর্ম ঢাকতে সরকার গণহত্যা শুরু করেছে। গণজাগরণ মঞ্চ বন্ধ না হলে জনগণ ঢাকা অভিমুখে যাত্রা শুরু করবে। জনগণের মঞ্চ করে সরকারকে পদত্যাগে বাধ্য করা হবে।”
ঠিক এর পরের দিন শনিবার মানিকগঞ্জে সাম্প্রতিক সহিংসতায় পুলিশের গুলিতে নিহতের স্বজনদের প্রতি সহমর্মিতা জানাতে গিয়ে কয়েকটি শোকসভায় খালেদা জিয়া কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দেন।

খালেদা জিয়া বলেন, “এ সরকার খুনি সরকার, রক্তপিপাসু সরকার। খুনি সরকারের সঙ্গে কোনো আলোচনা নয়। এ সরকারকে বিদায় নিতে হবে। বিদায় করার জন্য হরতাল-অবরোধসহ সব ধরনের কঠোর কর্মসূচি দেয়া হবে। সরকার পতনের এক দফা আন্দোলন চলছে, চলবে।”

এরপর ২৩ মার্চ বগুড়ায় সফরে গিয়ে সাম্প্রতিক সহিংসতায় নিহতের স্বজনদের প্রতি সহমর্মিতা ও ক্ষতিগ্রস্ত মন্দির পরিদর্শনের সময় খালেদা জিয়া আবারো সরকার পতনের আন্দোলনে তার কঠোর অবস্থানের কথা জানান।

বগুড়ার মাটিডালিতে এক শোকসভায় তিনি বলেন, “এত দিন শুধু তত্ত্বাবধায়কের দাবিতে আন্দোলন করেছি। এখন হবে সরকার পতনের এক দফা আন্দোলন। এ আন্দোলন সফল করতে প্রয়োজনে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে দেশ অচল করে দেয়া হবে। শিগগির আন্দোলনের নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।”

বগুড়া সফরকালে জয়পুরহাটে এক জনসভায় বিএনপির নেতাকর্মীদের উদ্দেশে খালেদা জিয়া বলেন, “আবারও আপনাদের ঢাকায় ডাকা হবে।তবে এবার যেখানে বাধা দেয়া হবে সেখানেই সবাই অবস্থান করবেন, সরকারের পতন না হওয়া পর্যন্ত কেউ ঘরে ফিরে যাবেন না।”

এ বিষয় জানতে চাইলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন নুতন বার্তা ডটকমকে বলেন, “এখন আর পিছনে যাওয়ার সুযোগ নেই। সরকার প্রতিনিয়ত নির্যাতনের মাত্রা বৃদ্দি করছে আর জনগণের দাবিকে অগ্রাহ্য করছে। তাই সরকার পতনের এক দফার আন্দোলনকে আরো বেগবান করতে নতুন কর্মসূচি দেয়া হবে।”

‘তবে কোন ধরনের কর্মসূচি আসতে পারে’ এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “সময় হলে দেখতে পারবেন।তবে কঠোর কর্মসূচিই দেয়া হবে।”

এদিকে, ১৮-দলীয় জোটের একজন শীর্ষ নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে নতুন বার্তা ডটকমকে বলেন, “আগামী সপ্তাহে আবার জোটের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে। সেখানে আন্দোলনের নতুন কর্মসূচি ঠিক করা হবে।”

বিএনপির একটি বিশ্বস্ত সূত্র জানিয়েছে, শিগগিরই কয়েকটি জেলায় সফর করবেন খালেদা জিয়া। নেতাকর্মীদের মুক্তি, মামলা প্রত্যাহারসহ সরকারের পদত্যাগের দাবিতে আবারও হরতাল দেয়া হতে পারে। এ ছাড়া, এপ্রিল মাসের মাঝামাঝি ‘চলো চলো ঢাকা চলো’ কর্মসূচির আদলে রাজধানীতে মহাসমাবেশ হতে পারে। আর এবার যদি বাধা দেয়া হয়, তাহলে বাধাপ্রাপ্ত জায়গাতেই অবস্থান করতে বলা হবে।”

প্রয়োজনে ঢাকাকে সারা দেশ থেকে বিছিন্ন করার কর্মসূচিও দেয়া হতে পারে বলে দলীয় সূত্রে জানা যায়
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কুরসি নাশিন

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৯ শে মে, ২০২৪ সকাল ১১:১৫


সুলতানি বা মোগল আমলে এদেশে মানুষকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছিল৷ আশরাফ ও আতরাফ৷ একমাত্র আশরাফরাই সুলতান বা মোগলদের সাথে উঠতে বসতে পারতেন৷ এই আশরাফ নির্ধারণ করা হতো উপাধি... ...বাকিটুকু পড়ুন

বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন আর আদর্শ কতটুকু বাস্তবায়ন হচ্ছে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৯ শে মে, ২০২৪ সকাল ১১:৩৭

তার বিশেষ কিছু উক্তিঃ

১)বঙ্গবন্ধু বলেছেন, সোনার মানুষ যদি পয়দা করতে পারি আমি দেখে না যেতে পারি, আমার এ দেশ সোনার বাংলা হবেই একদিন ইনশাল্লাহ।
২) স্বাধীনতা বৃথা হয়ে যাবে যদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

কৃষ্ণচূড়া আড্ডার কথা

লিখেছেন নীলসাধু, ১৯ শে মে, ২০২৪ দুপুর ১:০২



গতকাল পূর্ব নির্ধারিত কৃষ্ণচূড়ায় আড্ডায় মিলিত হয়েছিলাম আমরা।
বছরের একটি দিন আমরা গ্রীষ্মের এই ফুলটির প্রতি ভালোবাসা জানিয়ে প্রকৃতির সাথে থাকি। শিশুদের নিয়ে গাছগাছালি দেখা, ফুল লতা পাতা চেনাসহ-... ...বাকিটুকু পড়ুন

সকাতরে ঐ কাঁদিছে সকলে

লিখেছেন হাসান মাহবুব, ১৯ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৩:২৯

সকাতরে ওই কাঁদিছে সকলে, শোনো শোনো পিতা।

কহো কানে কানে, শুনাও প্রাণে প্রাণে মঙ্গলবারতা।।

ক্ষুদ্র আশা নিয়ে রয়েছে বাঁচিয়ে, সদাই ভাবনা।

যা-কিছু পায় হারায়ে যায়,... ...বাকিটুকু পড়ুন

বসন্ত বিলাসিতা! ফুল বিলাসিতা! ঘ্রাণ বিলাসিতা!

লিখেছেন নাজনীন১, ১৯ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৪:০৯


যদিও আমাদের দেশে বসন্ত এর বর্ণ হলুদ! হলুদ গাঁদা দেখেই পহেলা ফাল্গুন পালন করা হয়।

কিন্তু প্রকৃতিতে বসন্ত আসে আরো পরে! রাধাচূড়া, কৃষ্ণচূড়া এদের হাত ধরে রক্তিম বসন্ত এই বাংলার!

ঠান্ডার দেশগুলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

×