ইঞ্জিনিয়ার তাজহারুল ইসলামের মেজাজ আজ প্রচন্ড খারাপ। টেবিলের উপর তার সামনে রাখা হলুদ রঙ্গের খামটির উপর লেখা ইঞ্জিঃ আজহারুল ইসলাম।খামের উপর নামের বানান ভুল এটা কোন সমস্যা না। সমস্যা হচ্ছে খামের ভিতরে। খাম হাতে নিয়ে ইনঞ্জিনিয়ার সাহেবের মনে হয়েছিল টাকার পরিমানটা ঠিক আছে। মোট ১০০ টা নোট আছে খামের ভিতর। কিন্তু ৫০০ টাকার নোটের জায়গায় সবগুলো ১০০ টাকার নোট।
ঠিকাদার বেলায়েত ফাজলামী করেছে। পঞ্চাশ হাজারের জায়গায় দিয়েছে দশ হাজার টাকা ।দশ হাজার বার কান ধরে উঠবস করালে ব্যাটার একটা শিক্ষা হত। ইনঞ্জিনিয়ার তাজহারুল টেবিলের উপর রাখা কলিং বেলের সুইচটা জোরে কয়েকবার চাপলেন। হেড এসিস্ট্যান্ট আনছার আলী বাম হাতে কলম নিয়ে হন্তদন্ত হয়ে ইঞ্জিনিয়ার সাহেবের রুমে ঢুকল।আনছার আলীর হ্যাংলা পাতলা পোড় খাওয়া কালো চেহারাটার দিকে তাকিয়েই নাকমুখ কুচকে ফেললেন তাজহারুল ইসলাম।আনছার আলীর চেহারাটা এমন যে ওর মুখের দিকে একবার তাকিয়েই বলে দেয়া যায় লোকটা একজন কেরানি।তবে ওর চেহারাটা কোন সমস্যা নয়, সমস্যা হছে ওর শরীর থেকে সবসময় আতরের গন্ধ বেরোয়।আতরের গন্ধ ইনঞ্জিনিয়ার তাজহারুলের মোটেই সহ্য হয় না। পায়খানার গন্ধের মতো লাগে।ইনঞ্জিনিয়ার তাজহারুল নিশ্বাস বন্ধ করে হেড এসিস্ট্যান্ট আনছার আলীকে নির্দেশ দিলেন, “ঠিকাদার বেলায়েতকে খবর দাও। এক্ষুনি আমার সাথে দেখা করতে বল।”
ঠিকাদার বেলায়েত হাসি হাসি মুখ করে ইনঞ্জিনিয়ার তাজহারুল ইসলামের টেবিলের সামনের চেয়ারে বসে আছে।টেবিলের উপর হলুদ খাম পড়ে আছে। ইনঞ্জিনিয়ার তাজহারুল ওর মুখের দিকে না তাকিয়েই জিজ্ঞেস করলেন, “আমার নাম কি?”
ঠিকাদার বেলায়েত চালাক লোক।সে বুঝতে পারল ইনঞ্জিনিয়ার সাহেব কি বলতে চাইছেন। চট করে জবাব দিল, “সরি স্যার। আপনার নাম তো স্যার ঠিকই আছে। তাজহারুলের জায়গায় স্যার আজহারুল লিখা হয়েছে।স্যার ভুলটা করেছে আমার ম্যানেজার।আই এম এক্সট্রিমলি সরি ফর দ্যাট মিস্টেক স্যার।”
“তুমি ইচ্ছা করে আজহারুল লিখেছ।” এবার বেলায়েতের দিকে তাকিয়ে বললেন তাজহারুল।
“আমি লিখি নাই স্যার। আমার ম্যানেজার ভুল করেছে স্যার। নতুন লোক তো স্যার। আমি ম্যানেজারের হয়ে ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি স্যার।
“তমাকে ক্ষমা চাইতে হবে না। তোমার ম্যানেজারকে বলো দশ হাজার বার আমার নাম লিখে জমা দিতে। এ ফোর কাগজে এক পাতায় একশ বার করে লিখবে। এরকম একশ পাতা জমা দিবে।”
“স্যার…”
“যাও। আর নামের আগে ইঞ্জি ফিঞ্জি লিখবেনা।লিখলে পুরা ইঞ্জিনিয়ার লিখবে অথবা নামের আগে কিছুই লিখবেনা—শুধু তাজহারুল ইসলাম লিখবে।এইবার যাও। আমার চোখের সামনে থেকে বিদায় হও।”
ইঞ্জিনিয়ার সাহেবের মর্জি বুঝে ঠিকাদার বেলায়েত সালাম দিয়ে হাসি হাসি মুখেই চলে গেল।
চলবে...। মন্তব্য করলে ধন্য হব।

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




