somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আমার মোবাইল ফোন সাতকাহন

১৫ ই অক্টোবর, ২০১৫ বিকাল ৪:১০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


বিলেত থেকে খালামনি দেশে বেড়াতে গেছেন। প্রায় তিন মাস হয়ে গেল। আবার বিলেত যাওয়ার সময় হয়ে যায়। আমার সঙ্গে এখনও দেখা হয়নি। দেখা করার প্রবল ইচ্ছা। বিলাদেশিদের(বিলাতি-বাংলাদেশিদের) সাথে সাক্ষাৎ করলে লাভ ছাড়া খাস্তা হয় না। বিলাত ফেরার আগের দিন আমাদের বাসায় খালা, খালু আর খালাত ভাই বোনরা বেড়াতে আসলেন। আমার খালুর আবার বিলাতি জিনিস পত্র বিলানোর হাত খুব লম্বা। এইবার নাকি সুটকেস ভর্তি মোবাইল ফোন নিয়ে এসেছেন। যাকে তাকে ফোন বিলাচ্ছেন। এক মাস হয় আমি গ্রামীণের ডিজুস সিম কিনে রেখেছি। কিন্তু হ্যান্ডসেট নেই বলে ব্যবহার করতে পারছি না। মনে মনে আশা করে বসে আছি যদি বিলাতি খালুর সুটকেসের একটা হ্যান্ডসেট আমার কপালে জুটে! খালু মনে হয় মাইন্ড রিডার। হেহেহে

তো শেষ মেস আমার কপালে জুটল সনি এরিকসনের T68i

সেট। জীবনের প্রথম মোবাইল হ্যান্ডসেট! সে কি আনন্দ! এতেই আমি মহা খুশি। এই ফোনের রিংটোনটা এখনো আমার কানে বাজে। তার পর আর কত হ্যান্ডসেট ব্যবহার করলাম কিন্তু ঐটার কথা কখনো ভুলতে পারব না। প্রায় দুই বছর একটানা সেটটা ব্যবহার করেছি। ভাল সার্ভিস ই দিত। একদিন দুপুর বেলা কে যেন আমার বালিশের নিচ থেকে চুরি করে নিয়ে গেছে। আমি ঘুমে এতই অচেতন ছিলাম যে টের ই পাই নি। সেদিন দেখলাম ই-বে তে এখনো এই সেট কিনতে পাওয়া যায়। ভাবছি একটা সেট কিনে রাখব। ইহা যে আমার পরথম মোবাইল পেরেম। তাহারে কি ভুলিতে পারা যায়!!!!

পরের বছর আপা বিলেত থেকে আমার জন্য একটা ব্রান্ড নিউ Nokia 6300
এই সেটে ইন্টারনেট আর অপেরা মিনি আমার সার্বক্ষনিক সঙ্গী হয়ে গেল।
প্রায় দেড় বছরের মত ব্যবহার করলাম। একদিন গেলাম সিলেটে একটা কাজে। রমজান মাস ছিল তাই সেহরি খেয়েই রওনা দিলাম। গাড়িতে সেকি মরার মত ঘুম! সিলেট পৌছে দেখি পকেট থেকে আমার সাধের সেটখানা হাওয়া! কুন সে বেরসিক সিলটী ভাই ...


২০১০ সাল। আমি নিজে এইবার বিলেত আসলাম। একমাস মোবাইল ছাড়া চললাম। কিছু কাজ টাজ করলাম। টাকা জমিয়ে এই বার কিনলাম Nokia c3-01 Touch and Type
ভাল সার্ভিস ই পেলাম। প্রায় দশ মাসের মত ব্যবহার করলাম। কিন্তু মন মত হয়নি। মন শুধু iPhone দেখলেই আকু পাকু করে। তাই অনলাইন বাজার ই-বেতে নিলামে দিলাম। সময়সীমা দশদিন। পরের দিন ই এক নাইজেরিয়ান মহিলা সেটা কিনে নিল। পেপালে পেমেন্ট দিল। আমি ডাকে পাঠিয়ে দিলাম। পরের দিন খবর পেলাম সব ভূয়া! কোন পেমেন্ট আসেনি :( ই-বে তে সবচেয়ে ধোকাবাজ বায়ার্স হল নাইজেরিয়ানরা। তাই সাধু সাবধান।

পূর্বের সেটগুলো হারালাম ঘুমের ঘোরে! আর এইবার......? লোভে

মেজাজটাই খারাপ। অনেক কষ্টের জমানো টাকা!!!!


যাই হোক এইবার কিনলাম Samsung Galaxy Ace

পরিচয় হল এন্ড্রয়েড দুনিয়ার সাথে। কি মজা কি মজা...

এক বছর হয়ে গেল এই সেট ব্যবহার করে। নিত্য নতুন সেট বের হয় আর আমাকে হাতছানি দিয়ে ডাকে। পকেটে কিছু টাকা আই মিন পাউন্ড জমে গেল। আর কি আমাকে ঠেকানো যায়। ই-বে থেকে কিনে ফেললাম সে সময়ের সাড়া জাগানো সেট Samsung Galaxy S2. কি তার স্পিড, কি তার ক্যামেরা রেজুলেশন। অসাধারন। চোখ আমার সরেই না।


এক সময় সেই অসাধারন সেটও বোরিং লাগতে লাগল। মন আবার আকুপাকু শুরু করে দিল। দিন রাত শুধু গুগলে সার্চ দিয়ে কি নতুন সেট আসল তা দেখতে লাগলাম। ইউটিউব চষে বেড়ালাম সেগুলোর রিভিউ দেখে দেখে। মন গিয়ে Samsung Galaxy Note 2 তে গিট্টু লাগল। আবারো ই-বে থেকে কিনলাম।



সময় চলে যাচ্ছে আপন গতিতে। আজকের নতুন আগামীকাল হয়ে যাচ্ছে পুরাতন। মন গিয়ে পড়ল এইবার Samsung Galaxy Note 4 এ. যেই ভাবা সেই কাজ। আগে পিছে চিন্তা না করে কিনে ফেললাম। এক মাস ব্যবহার করে বেচে দিলাম কেনা দামে। সেই ফাকে আবারও অনেক সেট দেখতে লাগলাম।


এই বার বের হল Google Nexus 5X and Google Nexus 6P. অসাধারন সেট। কিন্তু দামে কুলায় না। ভারাক্রান্ত হৃদয় নিয়ে দুধের স্বাদ ঘোলে মিটানোর জন্য কিনে ফেললাম Motorola Nexus 6.


কেনার পর দেখি ভাল লাগেনা। ফেলে রাখলাম আলমারিতে। পুরাতন Samsung Galaxy Note 2 টাই ব্যবহার করতে লাগলাম সাচ্ছ্যন্দে
সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই অক্টোবর, ২০১৫ বিকাল ৩:৪৯
১৩টি মন্তব্য ১৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ব্লগার'স ইন্টারভিউঃ আজকের অতিথি ব্লগার শায়মা

লিখেছেন অপু তানভীর, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ রাত ১১:০৫



সামুতে ব্লগারদের ইন্টারভিউ নেওয়াটা নতুন না । অনেক ব্লগারই সিরিজ আকারে এই ধরণের পোস্ট করেছেন । যদিও সেগুলো বেশ আগের ঘটনা । ইন্টারভিউ মূলক পোস্ট অনেক দিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

...এবং উচ্চতায় তুমি কখনই পর্বত প্রমাণ হতে পারবে না

লিখেছেন নতুন নকিব, ০৫ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:৫৬

...এবং উচ্চতায় তুমি কখনই পর্বত প্রমাণ হতে পারবে না

ছবি কৃতজ্ঞতাঃ অন্তর্জাল।

ছোটবেলায় মুরব্বিদের মুখে শোনা গুরুত্বপূর্ণ অনেক ছড়া কবিতার মত নিচের এই লাইন দুইটাকে আজও অনেক প্রাসঙ্গিক বলে মনে হয়।... ...বাকিটুকু পড়ুন

লালনের বাংলাদেশ থেকে শফি হুজুরের বাংলাদেশ : কোথায় যাচ্ছি আমরা?

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:১৪



মেটাল গান আমার নিত্যসঙ্গী। সস্তা, ভ্যাপিড পপ মিউজিক কখনোই আমার কাপ অফ টি না। ক্রিয়েটর, ক্যানিবল কর্পস, ব্লাডবাথ, ডাইং ফিটাস, ভাইটাল রিমেইনস, ইনফ্যান্ট এনাইহিলেটর এর গানে তারা মৃত্যু, রাজনীতি,... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমেরিকার গ্র্যান্ড কেনিয়ন পৃথিবীর বুকে এক বিস্ময়

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৪১


প্রচলিত কিংবদন্তি অনুসারে হাতে গাছের ডাল আর পরনে সাধা পোশাক পরিহিত এক মহিলার ভাটাকতে হুয়ে আতমা গ্র্যান্ড কেনিয়নের নীচে ঘুরে বেড়ায়। লোকমুখে প্রচলিত এই কেনিয়নের গভীরেই মহিলাটি তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

চুরি! চুরি! সুপারি চুরি। স্মৃতি থেকে(১০)

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৩৪


সে অনেকদিন আগের কথা, আমি তখন প্রাইমারি স্কুলে পড়ি। স্কুলে যাওয়ার সময় আব্বা ৩ টাকা দিতো। আসলে দিতো ৫ টাকা, আমরা ভাই বোন দুইজনে মিলে স্কুলে যেতাম। আপা আব্বার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×