সকাল বেলা প্রথম আলোর খবরে চোখ আটকে গেল। সেখানে আহমদ শফি বলছেন-
আপনাদের মেয়েদের স্কুল-কলেজে দেবেন না। বেশি হলে ক্লাস ফোর বা ফাইভ পর্যন্ত পড়াতে পারবেন। বিয়ে দিলে স্বামীর টাকা পয়সা হিসেব করতে হবে। চিঠি লিখতে হবে স্বামীর কাছে। আর বেশি যদি পড়ান, পত্রপত্রিকায় দেখছেন আপনারা, মেয়েকে ক্লাস এইট, নাইন, টেন, এমএ, বিএ পর্যন্ত পড়ালে ওই মেয়ে আপনার মেয়ে থাকবে না। অন্য কেহ নিয়ে যাবে। পত্রপত্রিকায় এ রকম ঘটনা আছে কিনা? ওয়াদা করেন। বেশি পড়ালে মেয়ে আপনাদের থাকবে না। টানাটানি করে নিয়ে যাবে আরেকজন পুরুষ।
!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!
আমার গা গুলিয়ে আসছে। কিছু লিখতে পারছিনা ওনার এই বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে। মানুষের মৌলিক চাহিদার বিপরীতে দাঁড়ানো একজন শুঁয়োরের বাংলাদেশ নামের একটা স্বাধীন দেশে বেচে থাকার অধিকার কতটুকু আছে ভেবে দেখুন। অথচ এই লোকটাই ৫ই- মে তারিখে শাহবাগে নিষ্পাপ মাদ্রাসা ছাত্রদের বুর্জোয়া রাইফেলের মুখোমুখি করে দিয়ে সরে পড়েছে। তাদের রাস্তায় নামিয়ে আনা হয়েছিল আওয়ামীলীগের বিরুদ্ধে!! অথচ নির্বাচনের আগে আওয়ামীলীগের পা চেটে বা আওয়ামীলীগের লোকজন তার পা চেটেছে, উনিও শেখ হাসিনার পা চেটে বলেছেনঃ প্রধানমন্ত্রীর সাথে আমার সুসম্পর্ক রয়েছে!!
তিনি কোন এক আলোচনা সভায় বলেছিলেনঃ কেউ কেউ বলছেন, আমি আওয়ামী লীগ হয়ে গিয়েছি। তারা মিথ্যা কথা বলছেন। তবে আওয়ামী লীগ হয়ে গেলেও কোনও আপত্তি নেই।
যেই আওয়ামিলীগ নাস্তিক ছিল। শেখ হাসিনা নাস্তিকের তোষনকারী ছিল সেই শেখ হাসিনাকে তিনি সংবর্ধনা দিতে চেয়ে বলেছিলেনঃ
কওমি মাদরাসার সর্বোচ্চ স্তর দাওরায়ে হাদিসের সনদকে মাস্টার্স ডিগ্রির সমমান স্বীকৃতি দিয়ে জাতীয় সংসদে বিল পাস করায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আমি সংবর্ধনা দিতে চাই!!
অথচ এই তেতুল হুজুর বলেনঃ ‘আমার কোনো রাজনৈতিক পরিচয় নেই। রাজনৈতিক কোনো দলের সঙ্গে আমার বা হেফাজতে ইসলামের কোনো সম্পর্ক নেই। তাই আমার কোনো সিদ্ধান্ত ও কর্মকৌশলকে রাজনৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকে দেখার কোনো সুযোগ নেই।’
আমাদেরো আসলে দৃষ্টিকোণ পরিবর্তন করতে হবে। দৃষ্টিকোণ পরিবর্তন করতে হবে ব্লগে থাকা এদের দোসরদের মুরিদদের। যারা শফি হুজুরের এইসব কর্মকাণ্ড আর তার অর্থনৈতিক যোগানদাতাদের জামাত বা বি,এন,পি র উপর চাপিয়ে দিয়েছিলেন।
ব্লগার স্বাধীন ২০১৩ সালের এক পোস্টে বলেছিলেনঃ
খালেদা জিয়া ৯১ থেকে ৯৬ সাল পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রী ছিলেন তখনও এই শফি এমন দাবী নিয়ে মাঠে নামেননি। কারন হিসেবে বলা যায়, তখন তারা ছিলেন বিএনপির দোসর। আল্লামা শফি সম্প্রতি বগুড়া জনসভা করলেন হেলিকপ্টারে চড়ে। যার ভাড়া ছিল প্রায় ত্রিশ লক্ষ টাকা। আমরা সবাই জানি কওমি মাদ্রাসা চলে দান, সদকা, যাকাত, চামড়া আর ফিতরার টাকায়। সেই টাকা দিয়ে মাদ্রাসার প্রধান যখন রাজকীয়তার সাথে বিলাস বহুল ভাবে হেলিকপ্টারে ভ্রমন করে, তখন প্রশ্ন জাগে এই টাকার উৎস কি? এর জোগান দাতা কারা? একটু লক্ষ্যে করলেই দেখা যাবে এর উৎস জামায়াতে ইসলামী। কেননা তাদের ব্যাংক, বীমা, রিয়েল এস্টেট, ফার্মেসী, কোচিং ব্যবসা রয়েছে। এই অর্থে হেফাজতের নেতারা সারা দেশে শানে রেসালত এর নামে সরকার বিরোধী জনসমাবেশ করে বাংলাদেশ বিরোধী প্রচার প্রচারনা চালাচ্ছেন। আগামী ৫ই মে তাদের ঢাকা অবরোধ কর্মসুচী রয়েছে। এই উপলক্ষ্যে প্রচার প্রচারনার ঘাটতি নেই। মুলত ঘুম নেই জামায়াত শিবির কর্মীদের চোখে। তাদের উদ্দেশ্যে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বানচাল করা। হেফাজতের নেতারা সবাই ১৮ দলীয় জোটের নেতাকর্মী দেশবাসী এ বিষয়ে ইতিমধ্যে অবগত হয়েছে। তাদের আন্দোলনে মানুষের কোন অর্থনৈতিক মুক্তি তথা মানব মুক্তির কথা উল্লেখ নেই। সচেতন মহল এই রাজাকারদের ডাকে কখনও সাড়া দিবে না বরং প্রতিহত করে তাদেরকে উপযুক্ত জবাব দিবে এ প্রত্যাশা দেশবাসী এখনও করে থাকে।
পোস্ট আর দীর্ঘায়িত করব না। প্রিয় কয়েকলাইন রেখে গেলাম।
বারবারা, এসো,
রবিশঙ্করের সুরে সুরে মুমূর্ষু মানবতাকে গাই-
বিবেকের জংধরা দরোজায় প্রবল করাঘাত করি
অন্যায়ের বিপুল হিমালয় দেখে এসে ক্রুদ্ধ হই, সংগঠিত হই
জল্লাদের শাণিত অস্ত্র
সভ্যতার নির্মল পুষ্পকে আহত করার পূর্বে,
দর্শন ও সাহিত্যকে হত্যা করার পূর্বে
সঙ্গীত ও চিত্রকলাকে ধ্বংস করার পূর্বে
ছাড়পত্রহীন সূর্য কিরণকে বিষাক্ত করার পূর্বে
এসো বারবারা, বজ্র হয়ে বিদ্ধ করি তাকে।
সর্বশেষ এডিট : ১২ ই জানুয়ারি, ২০১৯ সকাল ৯:৫৮