কোথাকার কোন রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের কোন শিক্ষিকা ছাত্রের চুল কেটে ফেললো সেইটা নিয়ে দেশ তোলপাড় হয়ে গেল৷ হট টপিক৷ কিন্তু গত এক বছরে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি ফায়েক সাহেব যেসমস্ত অপকর্ম করে গেছেন সেইসব নিয়া কেউ কোন কথা বলেনাই৷ অবৈধভাবে তিন শিক্ষককে অপসারণ করে ফেলা হয়েছে৷
ভিসি অফিসের এক কর্মকর্তা আমার পাশের ফ্লাটে ছিলেন তখন৷ ভদ্রলোক মাঝে মাঝে দুঃখ প্রকাশ করতেন৷ শুনতাম ভেতরকার কাহিনী৷ এনাদের অপসারণ করা হয়েছিল কারন ছাত্র আন্দোলনে এই শিক্ষকেরা ফুয়েল দিয়েছিলেন৷ খুবই দরকারী দাবিদাওয়া ছিল স্টুডেন্টদের৷ শিক্ষার্থীদের বেতন-ফি কমানো, আবাসনসংকটের সমাধান এবং আরো দুই তিনটা ভ্যালিড ডিমান্ড ছিল তাদের৷
এই বিষয়ে কেউ কথা বলেনাই মাননীয় স্পীকার৷ বিশ্বাস করেন কেউ বলেননাই৷ আতেল, সুশীল, বাম, রাম কেউ না৷
তো এইটা হইতেসে রিসেন্ট পাস্ট৷ এইবার অতি সাম্প্রতিক ঘটনায় আসেন৷
ড. সেলিম সাহেব৷ এই ভদ্রলোকের সাথে একবার সাহাব ভাইয়ের বাসায় এক ঘরোয়া অনুষ্ঠানে পরিচয় হইসিলো৷ সাহাব ভাই বলসিলেন এই লোক কোন শো অফের মধ্যে নাই৷ অভাব অনটনের মধ্যে বড় হইসেন৷ রাস্তায় ফল বেচে পড়ালেখার খরচ চালাইসেন৷ দারুন একজন মানুষ৷ ব্লা ব্লা৷
এর পর পাঁচ বছর গেসে৷ উনি অস্ট্রেলিয়া থেকে ক্রিপ্টোগ্রাফিতে PHD নিয়ে এসে কুয়েটেই প্রফেসর হিসেবে যোগদান করলেন৷ একদল ছাত্র(!) তাকে অপমান করলো৷ কি বিষয় নিয়ে অপমান করলো? হলের ডাইনিং ম্যানেজমেন্ট নিয়ে ভাগবাটোয়ারা নিয়ে! মানে আপনি বুঝতেসেন একদল ছাত্রকে তাদের বাপ মা কুয়েটে পাঠাইসে হলের ডাইনিং ম্যানেজার হওয়ার জন্য৷
উনি বাসায় ফিরে লজ্বায়, অপমানে স্ট্রোক করে বাথরুমের মধ্যে মরে গেলেন৷ এইটা নিয়ে দেশ গরম না, কেউ গ্রেফতার হয়নাই, কাউকে বহিস্কার করা হয়নাই৷ কি আশ্চর্য! কুয়েটে একটা অভ্যন্তরীণ তদন্ত কমিটি করা হইসিলো৷ তারা বলেছে তদন্ত করতে পারবে না৷ চাপ আছে উপর মহলের
আবার ছাত্রলীগ বলতেসে উনি স্ট্রোক করে মারা গেসেন৷ আবার তারাই বলতেসে সেলিমের পরিবারকে এক কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে হবে৷ তার মানে তারা দোষ স্বীকার করে নিসে! ফানি না?
এইসব ঘটনা তো নতুন না৷ খুলনার বি এল কলেজের এক নেতা একবার প্রিন্সিলাল সাহেবকে স্টেজের উপরে থাপ্পড় দিয়েছিল৷ সেই ঘটনার বিচার হয়নাই৷ সেই নেতা অবশ্য এখন আওয়ামিলীগ এর গাড়ি পোড়ানো মামলায় বছরের ছয় মাস পালায়ে বেড়ায়৷
এক কাজ করেন৷ আপনারা যেহেতু শিক্ষকের মর্যাদা দিতে পারতেসেন না৷ ভুলভাল মানুষরে ভিসি বানাইতেসেন৷ বিশ্ববিদ্যালয়ে অটোক্রেসি চালাইলে সেইটার বিরুদ্ধে কিছুই করতে পারতেসেন না৷
সেহেতু দুই রকম ইউনিভার্সিটি, স্কুল, কলেজ বানান৷
একটায় যাবে যারা শুধুমাত্র পড়ালেখা করতে চায়৷
আরেকটায় আপনারা দলীয় ক্যাডার, চোর, ছ্যাচ্চড়, বদমায়েশ, ধর্ষক এগুলো পড়াবেন৷ সেগুলোর ভিসি বানাবেন ফায়েক উদ্দিনের মত জানোয়ারদের৷ সেগুলোর ছাত্র নেতা হবে ধর্ষনে সেঞ্চুরি করা মানিক৷ হলের ডাইনিং এর ম্যানেজার হওয়ার লোভে শিক্ষককে খুন করা ছেলেপেলে৷
রিয়াজ রোমেন
খুলনা
ডিসেম্বর ৫