আমি হাসিনাকে হাড়ে হাড়ে চিনতাম।
একটু পড়াশুনা করলেই স্বৈরাচারদের চেনা যায়। আর স্পেসিফিকালি হাসিনাকে নিয়ে পড়াশুনা করলে সে একটা উন্মুক্ত বই। তার প্রতিটা কথা ইন্টারপ্রেট করা যায়।
এই জানা বুঝা থেকেই আমি বারবার একটু অবাক হচ্ছিলাম আন্দোলন যখন জোরালো হচ্ছিলো, যে হাসিনার তার সর্বোচ্চ নিসংশতা দেখাচ্ছে না। আমি আশেপাশের মানুষদের বারবার বলছিলাম, ক্ষমতার জন্য এই কয়েকশো মানুষ মারা হাসিনার জন্য কোনো ব্যাপারই না। সে আরো ভয়ংকর কিছু করবে। সেই ভয়ানক জিনিসটা কি পরে বলছি।
সেই ভয়ংকর কিছু সে করতে পারে নাই তখন কারণ দলের মোরালিটিতে উপর কন্ট্রোল তার আর ছিল না। থাকলে, আওয়ামী লীগকে ধর্ম মনে করা, এবং শেখ পরিবারকে রয়াল ব্লাড মনে করা লীগের ফলোয়াররা জান দিয়ে দিতো শেখ মুজিবের মেয়ের জন্য। ছাত্রলীগ যেদিন ওবায়দুল কাদেরের মিটিং এ সিনিয়র নেতাদের সামনে ভুয়া ভুয়া বলছিলো কাউয়া কাদেরকে, সেই ভিডিও দেখে হাসিনার সন্ত্রাসি বাহিনীর চালাক গুলো বুঝে গেসিলো যে দিন শেষ, পলক যখন নার্ভাস হয়ে ক্যামেরার সামনে কথা বলা শুরু করলো তখন হাসিনার সন্ত্রাসি বাহিনীর চালাক গুলো বুঝে গেসিলো যে দিন শেষ। পনের বছর যা করার করসে, কিন্তু চালাক খুনিরা শেষের দিকে গা ঢাকা দেয়। এই জন্য অটোমেটেড অস্ত্র সাপ্লাই দিয়েও যথেষ্ট খুন হাসিনা করাইতে পারে নাই।
তাহলে সেই ভয়ানক কাজটা কি করতো হাসিনা? গৃহযুদ্ধ।
একটা শর্ট টার্ম গৃহযুদ্ধ হাসিনা করে দিতো। তার বাহিনীর হাতে তুলে দিয়েছিলো অটোমেটেড অস্ত্র। ভিডিও আপনারা দেখেছেন, শামীম ওসমান থেকে শুরু করে বিভিন্ন এলাকার ছাত্রলীগের নেতারা কি অস্ত্র নিয়ে রাস্তায় নেমে গুলি করছিলো। এই অস্ত্রধারীর সংখ্যা দিনে দিনে আরো বাড়তো। এরপর এদের প্রতিহত করতে তৈরী হতো পাল্টা অস্ত্রধারী মিলিশিয়া বাহিনী, বিপ্লবী বাহিনী। এই হাঙ্গামার মধ্যে খুনি হাসিনা বজায় রাখতো তার শাসন, খালি করে ফেলতো দেশের কোষাগার, আর রাজাপাকশে যেভাবে গণহারে মেরে তামিলদের দমন করেছিল, ঐরকম একটা এপ্রোচে গিয়ে পরিচিতি নিয়ন্ত্রণে আনতো হাসিনা। এরপর যুদ্ধবিদ্ধস্ত দেশ ঠিক করতে নিতো আরো আন্তর্জাতিক লোন এবং, সেগুলোও পাচার হতো কারণ যেই দেশের মানুষ টরে সরাইতে চাইসে তাদের পুনর্গঠনে আবার কিসের টাকা! এরমাঝে পেছাত মধ্য আয়ের দেশের শর্তাবলী, এইটা একটা আরো গভীর ভিন্ন আলাপ। কেউ কেউ বলে এরজন্যই হাসিনা অনেকগুলো অস্থিতিশীলতার ম্যাপ করে রেখেছিলো, যার মধ্যে বিডিআর হত্যাকাণ্ডের মতন পুলিশে গেঞ্জাম লাগানোর প্ল্যান'ও ছিল। এইটা যদিও আমার শোনা কথা, বিশ্বাস করার কিছু নাই।
যাই হোক, এগুলা আমার স্পেকুলেশন। অন্য কিছুও হইতে পারতো। হাসিনাকে যতটুকু রীড করতে পারি, এইটা তার একটা সম্ভাব্যতা যাচাই। উপর দিয়ে আওয়ামী লীগ যত জাকজমক ছিল ভিতরে ততই দুর্বল ছিল। স্থানীয় রাজনৈতিক নেতারা দল থেকে অনেক দূরে সরে গেসিলো। এই নিয়ে একটা নিউজ রিপোর্ট কমেন্টে দিচ্ছি। সো এক হিসাবে আসলে আমরা অনেক অল্পের উপর দিয়ে জিতে গেসি হাসিনার ধ্বংস ক্ষমতার সাথে তুলনা করলে।
কিন্তু, হাসিনা হইলো একটা অশুভ আত্মা। হ্যারি পটারের লর্ড ভোল্ডেমর্ট। সে মরে যায় নাই, তার ফলোয়াররাও উড়ে যায় নাই। ৫ অগাস্টের পর একটার পর একটা অরাজকতার চেষ্টা এরা করেই যাচ্ছে।
ডাকাত > বৈচারিক ক্যু > সাম্প্রদায়িক হামলা > আনসার ক্যু > পুলিশের কেয়ারলেস ভাবে ফিরে আসা > প্রশাসন অচল রাখা - একটার পর একটা করে করে কোনো ভাবেই এই সরকারকে তারা কাজ করতে দিবেনা। ১/১১ সরকারের মতন হার্ড লাইনে যেহেতু খেলছেনা এই সরকার, এই ফায়দা হাসিনার দোসররা খুব ভালো ভাবেই নিবে। ১৫ বছর ধরে বেছে বেছে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে, এদেরকে সরায়ে দেওয়াও যাচ্ছেনা, রেখে কাজও করা যাচ্ছেনা। ছাত্রনেতাদের ডাক দেওয়া অসহযোগ আন্দোলন কিন্তু মোটামুটি ব্যার্থ ছিল, কিন্তু হাসিনার দোসররা এখন যেই অঘোষিত অসহযোগ আন্দোলন পালন করছে আনঅফিসিয়ালি, সেটা কিন্তু মোটামুটি ভালোই চলছে।
কিন্তু আমার বিশ্বাস পাশ কাটায়ে যা যা করার দরকার ইউনুস সরকার করে ফেলবে। সেই স্ট্রেটিজিক চিন্তা ক্ষমতা এই লোকের আছে। বিশ্বের বেশ কিছু মৌলিক পরিবর্তন এই লোক এনেছে, সেটা শুধু ক্ষুদ্রঋণ না। সামাজিক ব্যবসা থেকে শুরু করে অলিম্পিক গেমসের মতন শত বছরের বৈশ্বিক ঐতিহ্যে সে পরিবর্তন নিয়ে এসেছে এই বছর।
কিন্তু উনি বা যারা হাল ধরেছে, এরা অবিসংবাদিত নেতা না, রাজনৈতিকভাবে অভিজ্ঞ না। সো সবকিছু সামলে নেওয়ার জন্য জনগণ তাকে/তাদেরকে সময় দিবে কিনা, সপোর্ট দিবে কিনা সেটা সময় বলে দিবে। বাট এরা যদি ব্যার্থ হয় তাহলে আমাদের এই দেশ নিয়ে স্বপ্ন দেখা থামায়ে দিয়ে আখের গোছাতে হবে। কারণ অল্টারনেটিভ হইলো তারেক জিয়া, আর এই লোককে কেন আমি বিশ্বাস করিনা তা আরেকদিন বলবো।

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।


