ছবিঃ সংগৃহীত
আজকের এই দিনে স্কুলগামী শিক্ষার্থীদের বিশ্রী চুলের কাটিং এবং জামা-কাপড়ের যে ডিজাইন দেখি তাতে তো সুশিক্ষা আর কুশিক্ষার পার্থক্য বোঝাই দায় হয়ে পড়েছে। রুচি বোধের যেন রীতিমত দুর্ভিক্ষ!
এদের শেখাবে কে? শিক্ষক শাসন করতে পারবে না। মা-বাবার কথা তাঁরা শুনবে না। তাহলে এদের ভবিষ্যৎ কি?
আমাদের সময় তো শিক্ষক বেত মেরে হাত লাল করেও দিতেন। কই আমাদের মা-বাবা তো কোনদিন সে নিয়ে উষ্মা পর্যন্ত প্রকাশ করেন নি। উলটো সেই শিক্ষকের প্রশংসা করতেন। বলতে বাধা নেই স্কুলের সেই কঠিন টিচারকেই আজো শ্রদ্ধা ভড়ে মনে রেখেছি। অন্যদের কথা এখন আর তেমন একটা মনেই পরে না। অথচ ক্লাসে তাঁর সম্মুখীন হওয়াটাই ছিল সবথেকে ভয়ের।
আজ ভাবি সেদিন যদি অমন কঠিন শাসনের মাঝে বেড়ে না উঠতে পারতাম আজ হয়ত আমিও একটা শিক্ষিত বেয়াদব হতাম।
উচ্ছৃঙ্খল শিক্ষার্থী তখনো ছিল এখনো আছে। তখন শিক্ষক গন লেখাপড়ার পাশাপাশি ছাত্রদের আদব কায়দা শেখানো এবং সুন্দর ও কদর্য এ দুয়ের মধ্যে তফাতটা ধরিয়ে দিতেন। শুধু যে ধরিয়েই দিতেন তা নয়। একজন শিক্ষার্থীদের আদর্শ মানুষ হিসেবে গড়ে তোলাকে নিজেদের দায়িত্ব বলে মনে করতেন। আর তা করতে গিয়ে যা করা দরকার তাঁর সবটাই করতেন।
আর এখনকার শিক্ষক গন তো ছাত্রদের শাসন করার কথা ভাবতেই ভয় পান। একদিকে সুশীল সমাজ নামের অশ্লীল সমাজের ধমকানি অন্যদিকে সরকারী বিধিনিষেধ! আচ্ছা বলুন তো আপনারা চাচ্ছেন টা কি। প্রথম শ্রেণী থেকে শুরু করে উচ্চ শিক্ষা পাঠক্রমের কোথাও নিতি নৈতিকতার শিক্ষা নেই। আওয়ামী সরকার ক্ষমতায় আছে বলেই বঙ্গবন্ধুর যা একটু ছোঁয়া আছে এর বাইরে কোন আদর্শ মানুষের দেখা পাই না।
আমাদের পাঠক্রমে কি শেখানো হয়? কেবল একলা বাচা, কেবল একলা চলা, নিজেকে নিয়ে ভাবা, কেবল লাভ আর ক্ষতির হিসেব। এটা কি মানুষ গড়ার শিক্ষা? ব্রিটিশদের সেই কেরানী বানানোর পাঠক্রমেও তো কিছুটা মানুষ হওয়ার শিক্ষা ছিল। আমরা এখন সেটাও বিভাজনের নীতিতে আঁটকে গিয়ে ছেঁটে ফেলেছি। এখন শুধু কিছু বিবেক বর্জিত, বর্বর শিক্ষিত গড়ে তোলার পালা। এভাবে চলতে থাকলে এটা নিশ্চিত যে অচিরেই আমরা একটা অসভ্য বর্বর প্রজন্ম পেতে যাচ্ছি। যাদেরকে সামাল দিতে হয়ত আগামীতে সভ্য মানুষ আমদানি করতে হবে।
সর্বশেষ এডিট : ০৯ ই অক্টোবর, ২০২১ বিকাল ৪:৪৪