মহান আল্লাহ তায়ালা তাঁর বান্দাদের তাঁর প্রতি নিঃশর্ত ইমান আনার সাথে সাথে এক আল্লাহ্র ইবাদতের নির্দেশ প্রদান করেছেন। একই সাথে বলেছেন সৎ কাজের কথা। অর্থাৎ একজন মুসলমানের জন্য কেবলমাত্র মুখে কালেমার উচ্চারণই যথেষ্ট নয়। একইসাথে রসুল(সঃ) এর দেখানো পদ্ধতিতে ইবাদত বন্দেগী করতে হবে সেই সাথে সৎকাজ করতে হবে।
এছাড়াও একজন মুসলমান তাঁর সারাটা জীবন যে সব বিধি বিধানের উপরে চলবে তার সকল নির্দেশনা মহান রাব্বুল আল আমিন মহা গ্রন্থ আল কুরআনে বলে দিয়েছেন। সেই সাথে বলে দিয়েছেন অন্যান্য ধর্মাবলম্বীদের সাথে মুসলমানের আচরণ কেমন হবে। সুরা আল আন'আমের ১০৬ , ১০৭ এবং ১০৮ এই তিন আয়াতে সহজ ভাষায় স্পষ্টভাবে এই বিষয়টি বর্ননা করেছেন।
সুরা আল আন'আম এর ১০৬ , ১০৭ এবং ১০৮ নম্বর আয়াতে মহান বলেন,
১০৬) হে মুহাম্মদ ! সে অহির অনুসরণ করো, যা তোমার প্রতি তোমার রবের পক্ষ থেকে অবতীর্ণ হয়েছে, কারণ সে একক রব ছাড়া আর কোন ইলাহ নেই এবং এ মুশরিকদের পেছনে লেগে থেকো না৷
১০৭) যদি আল্লাহর ইচ্ছা হতো, তাহলে (তিনি নিজেই এমন ব্যবস্থা করতে পারতেন যাতে) এরা শিরক করতো না৷ তোমাকে এদের ওপর পাহারাদার নিযুক্ত করিনি এবং তুমি এদের অভিভাবকও নও৷
১০৮) আর ( হে ঈমান দারগণ!) এরা আল্লাহকে বাদ দিয়ে যাদেরকে ডাকে তোমরা তাদেরকে গালি দিয়ো না৷ কেননা, এরা শিরক থেকে আরো খানিকটা অগ্রসর হয়ে অজ্ঞতাবশত যেন আল্লাহকে গালি দিয়ে না বসে৷ আমি তো এভাবে প্রত্যেক জনগোষ্ঠীর জন্য তাদের কার্যক্রমকে সুশোভন করে দিয়েছি৷ তারপর তাদের ফিরে আসতে হবে তাদের রবের দিকে৷ তখন তিনি তাদের কৃতকর্ম সম্বন্ধে তাদেরকে জানিয়ে দেবেন৷
এর পরেও আমরা ওয়াজের নামে ইসলামী বক্তৃতার নামে কি করে সমানে ভিন্ন ধর্মাবলম্বীদের দেব-দেবী নিয়ে উস্কানিমূলক বক্তৃতা দেই? যেখানে স্বয়ং আল্লাহ তায়ালা অন্য ধর্মের ব্যাপারে দিকনির্দেশনা দিয়েছেন- যেমন আল্লাহ্ সুরা বাকারার ২৫৬ নম্বর আয়াতে বলেন-
২৫৬) দীনের ব্যাপারে কোন জোর-জবরদস্তি নেই । ভ্রান্ত মত ও পথ থেকে সঠিক মত ও পথকে ছাঁটাই করে আলাদা করে দেয়া হয়েছে ৷ এখন যে কেউ তাগুতকে অস্বীকার করে আল্লাহর ওপর ঈমান আনে , সে এমন একটি মজবুত অবলম্বন আঁকড়ে ধরে , যা কখনো ছিন্ন হয় না ৷ আর আল্লাহ (যাকে সে অবলম্বন হিসেবে আঁকড়ে ধরেছে ) সবকিছু শোনেন ও জানেন ৷
আবার সুরা আল হিজর এর ০৯ নম্বর আয়াতে মহান আল্লাহ্ নিজেই যেখানে ঘোষণা করেছেন। মহা গ্রন্থ আল কুরআন তিনিই অবতীর্ণ করেছেন আবার তিনিই এর সংরক্ষণ কারী। এরপরেও কোন সাহসে আমরা কুরানের হেফাজত কারী বলে দাবী করি!
৯) আর এ বাণী (কুরআন) , একে তো আমিই অবতীর্ণ করেছি এবং আমি নিজেই এর সংরক্ষক৷
এসব জানার পরেও যারা নিজেদের ইসলামের হেফাজত কারী(!) এবং কুরানের সংরক্ষনের দাবী করেন নানামুখি অরাজকতা সৃষ্টি করেন। তারা কি উদ্ধত আচরণ করছেন না? আর এই ঔদ্ধত্য প্রকাশ তো ফ্যাসাদ সৃষ্টিকারীর পরিচয়। ফ্যাসাদ সৃষ্টিকারীর ভয়াবহ পরিণামের কথা কি তাঁরা জানেন না? মহান আল্লাহ্ আমাদের সকলকে হেফাজত করুন।
সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই অক্টোবর, ২০২১ দুপুর ২:৫৪