somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আমাদের সাথে কেউ নেই। আমাদের দেশকে আমাদেরই বাঁচাতে হবে। আমাদের সাথে নেই মূলধারার মিডিয়া।

০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ৮:০৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

প্রস্তাবিত রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র, মুলধারা মিডিয়ার ব্ল্যাক আউট ।

আমরা এতদিনে অভ্যস্ত হয়ে পড়েছি মু্লধারা মিডিয়ার ব্ল্যাক আউটে। আমরা তা থেকে মুক্তির পথও খুঁজে পেয়েছি।

.

.

ভিকারুন্নেসা স্কুলের সেই ঘটনায় যখন মুলধারার মিডিয়া এক্কেবারে চুপ করে গেল, ভিকির ছাত্রীদের সাথে দুর্ব্যাবহার করল সাংবাদিকেরা, এমন কি হুমকি দিল, তখন ওখানকার ছাত্রী ও প্রাক্তন ছাত্রীরা ফেইসবুকে একটা পেইজ খুললো। একদিনে সে পেইজের লাইকের পরিমান দাঁড়ালো ১০,০০০+ । পরিস্থিতি বদলে গেলো রাতারাতি।

.

.

সরকার এই তো সেদিন যখন ইনটারনেট আপলোডিং স্পিড কমিয়ে এক দশমাংশে নেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। ফেইসবুক ও ব্লগে ঝড় ওঠে । সে সিদ্ধান্ত তখন বাতিল করে সরকার।

.

.

প্রখ্যাত ভুগোলবিদ, এ কে এম ওয়াহিদুজ্জামান, যিনি জি আই এস সংক্রান্ত বিদেশী কাজগুলোর সিংহভাগই পেয়ে থাকেন তার নিজস্ব যোগ্যত্যায়, যখন রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র আমাদের পুরো জাতির জন্যে কি ভয়াবহ বিপর্যয় ডেকে আনবে তা নিয়ে তথ্য সমৃদ্ধ প্রতিবেদন তৈরি করলেন তখনই আমাদের মূলধারা সংবাদপত্র গুলোর আসল চেহারা বেড়িয়ে পড়লো। উনি প্রতিবেদনটি বাংলায় ও ইংরেজীতে তৈরি করে দেশের নামী দামি এই পত্রিকাগুলোতে যান ছাপানর জন্যেঃ



১। প্রথম আলো।

২। কালের কন্ঠ।

.

৩। ইত্তেফাক।

৪। ডেইলি স্টার।

৫। দি ইন্ডিপেনডেন্ট।

.

.

.

জাতির বিবেক, একটা পত্রিকাও এই প্রতিবেদনটি ছাপতে রাজী হয়নি।





শেষে প্রখ্যাত কথা সাহিত্যিক তার সাপ্তাহিক ২০০০ পত্রিকায়বাংলা প্রতিবেদনটি ছাপেন। দূঃখ জনক হল এই পত্রিকাটির কোন অন লাইন ভার্শান নেই।

.



আমাদের সাথে কেউ নেই।

আমাদের দেশকে আমাদেরই বাঁচাতে হবে। আমাদের সাথে সরকারী দল নেই, নেই মূলধারার মিডিয়া। আমাদেরকে সফলকাম হতে হবে এই সামাজিক মিডিয়া ফেইসবুক ও ব্লগের মাধ্যমেই।



মনে রাখবেন, এই রামপাল বিদ্যুত কেন্দ্রকে যদি আমরা রুখে দিতে না পারি, আমরা আমাদের পরবর্তী প্রজন্মগুলোর কাছে আমৃত্যু দায়ী থেকে যাবো।

.

সুন্দরবনের একবার মৃত্যু হলে তার আর পূনর্জন্ম হবে না।

.

.

ছড়িয়ে দিন এই প্রতিবেদন সবখানে, দেশের আনাচে কানাচে, ব্লগে, টুইটারে লিংক দিয়ে দিন। এটাআমার আপনার সবাই অত্যাবশকিয় দ্বায়িত্ব।



আমি এখানে এ কে এম ওয়াহিদুজ্জামানের প্রতিবেদনের সবচেয়ে জন গুরুত্বপূর্ণ অংশ প্রকাশ করলাম তাদের জন্যে যারা সময়ের অভাবে মূল প্রতিবেদনটি পড়তে অপারগ এবং নিচে তার মূল প্রতিবেদনের বাংলা ইংরেজীর লিংক দুটোও দিয়ে দিলামঃ

.

.



১। ভারতের এনটিপিসি কোম্পানি একই প্রকল্প একই কোম্পানী ভারতের ছত্রিশগড়ে প্রতিষ্ঠার জন্যে ভারত সরকারের অনুমতি চেয়েও পায় নি। তাদের পরিবেশ মন্ত্রনালয় এটা আটকে দেয়।



২। ভারতের “Wildlife Protection Act ” অনুযায়ী সংরক্ষিত বনাঞ্চলের ১৫ কিলো মিটারের মধ্যে কোনো বিদ্যুৎকেন্দ্র থাকতে পারবেনা। আর আমাদের এই প্রস্তাবিত রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র সুন্দরবনের ১০ কিলোমিটার দূরে।





৩। এই বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি যখন ভারতে বানানোর প্রস্তাব করা হয়েছিল তখন ৭৯২ একর এক ফসলি কিংম্বা অনুর্বর পতিত জমি অধিগ্রহনের কথা ছিল। কিন্তু বাংলাদেশে একই আকারের ও ক্ষমতার বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্যে অধিগ্রহণ করা হয়েছ ১৮৩৪ একর জমি যার ৯৫% ই তিন ফসলা জমি যেখানে বছরে ১২৮৫ টন ধান ও ৫৬৯ টন মাছ উৎপাদন হয় এবং যে অধিগ্রহণে ৮ হাজার পরিবার উচ্ছেদ হবে।





৪। বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্যে যে কয়লা পোড়ানো হবে তা থেকে বছরে ১ কোটি ৮ লাখ টন কার্বন ডাই অক্সাইড উৎপন্ন হবার কথা।





৫। বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে রোজ ১৪২ টন বিষাক্ত সালফার ডাই অক্সাইড ও ৮৫ টন বিষাক্ত নাইট্রোজেন ডাই অক্সাইড নির্গত হবে যা গোটা সুন্দরবনকে ধ্বংস করে দেবে।





৬। পশুর নদীর পানি এই বিদ্যুৎ কেন্দ্রে ব্যাবহার করা হবে যথেচ্ছ ভাবে। পানি টারবাইন চালানো ও শীতলীকরন ও অন্যান্য কাজে ব্যাবহার করা হবে। পানি গ্রহণ করা হবে ঘন্টায় ৯১৫০ ঘন মিটার এবং ব্যাবহার করে বাকি পানি পরিশ্রুত করে ঘন্টায় ৫১৫০ ঘন মিটার পানি নদীতে ফেরৎ দেয়া হবে। মানে ঘন্টায় ৪০০০ ঘন মিটার পানি পশুর থেকে প্রত্যাহার করা হবে। পানি ব্যাবহার ও প্রত্যাহারে এর ফলে যা যা ঘটবে তা হলঃ

.



৬।১। নদীর পানির তাপমাত্রা বেড়ে যাবে যাতে জলজ জীবনের ব্যাপক নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।

.

৬। ২। এই পানি প্রত্যাহারে নদীর নিম্নপ্রবাহে সুন্দরবন এলাকায় পানির লবণাক্ততা, নদীর পলি প্রবাহ, প্লাবন, জোয়ার-ভাটা, মাছসহ নদীর উদ্ভিদ ও প্রাণী জগৎ ও বাস্তুব্যবস্থার ওপর প্রভাব পড়বে।





৭। এই বিদ্যুতকেন্দ্রের সবচে’ ক্ষতিকর বর্জ হবে কয়লা পোড়ানো ছাই যার পরিমান ৯ লাখ ৫০ জাহার টন। এতে আর্সেনিক, পারদ, সিসা, নিকেল, ভ্যানাডিয়াম, বেরিলিয়াম, ব্যারিয়াম, ক্যাডমিয়াম, ক্রোমিয়াম সেলেনিয়াম, রেডিয়ামের মতো বিভিন্ন ক্ষতিকর ও তেজস্ক্রিয় ভারী ধাতু মিশে থাকে। যদিও বলা হয়েছে এগুলর মধ্যে কিছু আমাদের সিমেন্ট ফ্যাক্টরিগুলোতে ব্যাবহার করা হবে, কিন্তু সঠিক ব্যাবস্থাপনা না থাকলে সেটা হয়ে উঠবেনা। বড় পুকুরিয়াতে হয়নি। সেখানে এই ছাই মাটিচাপা দিয়ে এলাকাকে বিষাক্ত করা হচ্ছে।



৮। কয়লা পরিবহনে দূষণঃ রামপালের কয়লা সমুদ্র পথে সুন্দর বনের ভেতর দিয়ে আসবে। বড় জাহাজে করে প্রথমে আকরাম পয়েন্ট এবং সেখান থেকে ছোট ছোট জাহাজে রামপাল। এতে করে তিন ধরনের ক্ষতি হবেঃ

.

৮।১। পরিবহনকারী জাহাজ থেকে কয়লার গুঁড়ো, ভাঙা বা টুকরো কয়লা, তেল, ময়লা-আবর্জনা, জাহাজের দূষিত পানিসহ বিপুল পরিমাণ বর্জ্য নিঃসৃত হয়ে নদী-খাল-মাটিসহ গোটা সুন্দরবন দূষিত করবে।

.

৮।২। সুন্দরবনের ভেতরে আকরাম পয়েন্টে বড় জাহাজ থেকে ছোট জাহাজে কয়লা স্থানান্তর করার সময় কয়লার গুঁড়ো, ভাঙা কয়লা পানিতে বা মাটিতে পড়ে কিংবা বাতাসে মিশে গিয়ে পরিবেশ দূষণ ঘটাবে।

.

৮।৩। কয়লা পরিবাহী জাহাজের ঢেউ পশুর নদীর দুই তীরের ভূমি ক্ষয় করবে, কয়লা স্থানান্তরের যন্ত্রপাতি শব্দদূষণ ঘটাবে এবং রাতের বেলায় জাহাজের সার্চলাইটের আলো নিশাচর প্রাণীসহ সংরক্ষিত বনাঞ্চল সুন্দরবনের পশু-পাখির জীবনচক্রের ওপর মারাত্মক ক্ষতিকর প্রভাব ফেলবে।





৯। এই কেন্দ্র আর্থিক ভাবেও অলাভজনক। এই কেন্দ্র থেকে সরকার ৮ দশমিক ৮৫ টাকা মূল্যে প্রতি ইউনিট বিদ্যুৎ কিনবে। যেখানে অন্যান্য বেসরকারী বিদ্যুতকেন্দ্র থেকে সরকার গড়ে চার টাকা প্রতি ইউনিট বিদ্যুৎ কিনে থাকে বা সে রকম চুক্তি করেছে কেনার।

.

.

মূল প্রতিবেদনঃ.

.

১। বাংলাঃ Click This Link

.

২। ইংরেজীঃ http://alalodulal.org/2013/08/29/rampal/


৩। প্রতিবেদনটি এই সামুতেও উঠাছিলঃ

Click This Link
সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ দুপুর ১:০৫
২৬টি মন্তব্য ২৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমি হাসান মাহবুবের তাতিন নই।

লিখেছেন ৎৎৎঘূৎৎ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



ছোটবেলা পদার্থবিজ্ঞান বইয়ের ভেতরে করে রাত জেগে তিন গোয়েন্দা পড়তাম। মামনি ভাবতেন ছেলেটা আড়াইটা পর্যন্ত পড়ছে ইদানীং। এতো দিনে পড়ায় মনযোগ এসেছে তাহলে। যেদিন আমি তার থেকে টাকা নিয়ে একটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতীয় পণ্য বয়কটের কেন এই ডাক। একটি সমীক্ষা-অভিমত।।

লিখেছেন সাইয়িদ রফিকুল হক, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৩:১৫



ভারতীয় পণ্য বয়কটের কেন এই ডাক। একটি সমীক্ষা-অভিমত।।
সাইয়িদ রফিকুল হক

বিএনপি ২০২৪ খ্রিস্টাব্দে দেশে অনুষ্ঠিত “দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে”-এ অংশগ্রহণ করেনি। তারা এই নির্বাচনের বহু আগে থেকেই নির্বাচনে অংশগ্রহণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সাংঘাতিক উস্কানি মুলক আচরন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪



কি সাঙ্ঘাতিক উস্কানিমুলক আচরন আমাদের রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রীর । নাহ আমি তার এই আচরনে ক্ষুব্ধ । ...বাকিটুকু পড়ুন

একটি ছবি ব্লগ ও ছবির মতো সুন্দর চট্টগ্রাম।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৮:৩৮


এটি উন্নত বিশ্বের কোন দেশ বা কোন বিদেশী মেয়ের ছবি নয় - ছবিতে চট্টগ্রামের কাপ্তাই সংলগ্ন রাঙামাটির পাহাড়ি প্রকৃতির একটি ছবি।

ব্লগার চাঁদগাজী আমাকে মাঝে মাঝে বলেন চট্টগ্রাম ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

×