somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

নিঝুম দ্বীপে জোছনা প্রেমে

১৮ ই ডিসেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৫:৫৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আর কয় দিন পরই আবার আসছে ফুল মুন।ইচ্ছেটা অনেকদিনের।নৌবিহারে যাবো পূর্ণচাঁদ কে সাথে নিয়ে।সবচেয়ে ভালো হয় সারারাত নদীতে ভাসতে পারলে চাঁদের সাথে।পাহাড়ে তো দু’দিন পর পরই যাওয়া হয়।এবার তাহলে নদী কেন নয়।এক্সট্রিম ট্রেকিং তো চলছে,চলবেই।একটু রিলাক্স ঘুরতেও মন্দ লাগার কথা না।আর তাছাড়া পাহাড়ের বাইরে একটু বৈচিত্ত্রতাও আসলো।আমার সব ট্যুর ই হুটহাট ডিসিশন নিয়ে করা।এই বিকেলে মন চাইলো তো দে দৌড় রাতেই।আর যেহেতু একলাই ঘুরে বেড়াই উদ্দেশ্যহীন বনে বাদাড়ে তাই প্ল্যান করার প্রয়োজনও পড়েনা।সিদ্ধান্ত টা নিয়েই ফেললাম।যাবো এবার নিঝুম দ্বীপ।সারারাত ভাসব চন্দ্র ভেলায়,ডুবিয়ে দিব নিজেকে পূর্ণ যৌবনা চাঁদের কাছে।
এবার আর আমি একলা নই।এক কলিগ কে পেয়ে গেলাম সাথে।যে শেকল ছেঁড়ার আনন্দে উত্তেজনায় ফুটছে।খুব বেশী বার যায়নি সে ঢাকার বাইরে।তাই রুটিন মাফিক একঘেয়ে জীবন থেকে নতুন উদ্দমের স্বাদ নিতে যাচ্ছে সে।উত্তেজনার পারদ টা তাই স্বভাবতই ঊর্ধ্বমুখী তার।এ নিয়ে অফিসে মজাও কম হয়নি তাকে নিয়ে।সবাই তাকে সাহস দিচ্ছে(অবশ্যই মজা করে,যা তার ভালো লাগার কথা না :P)।তার পরিবারও অনন্ত দুশ্চিন্তায় তাকে ছেড়েছে আমার সাথে।আমার চিন্তাটাই তাই বেশি ছিল তাকে নিয়ে।একটা দায়িত্বও ছিল ঘরের ছেলেকে সুস্থ ঘরে ফিরিয়ে দেয়ার।

যাত্রা শুরু হোক তবেঃ

সারাদিন অফিস করলাম।ব্যাগপ্যাক গুছিয়েই এনেছি।বিকেল সাড়ে ৫ টায় সদরঘাট থেকে লঞ্চ ছাড়বে,এম ভি ফারহান৪।সেদিন আবার ইসলামিক দলগুলোর ডাকা হরতাল ছিল যা আমার জন্য শাপে বর হয়ে দেখা দিল।৪টা পর্যন্ত অফিস করে বেরুলাম।বেড়িয়ে দেখি রাস্তা মোটামুটি ফাঁকা।একটা বাস পেয়ে ওঠে বসলাম।মাথায় চিন্তার পাথর পৌঁছতে পারবো তো ইন টাইমে।সময় হাতে এক ঘণ্টা মাত্র।শেষ পর্যন্ত হরতালই বাঁচিয়ে দিল আমাদের।ফাঁকা রাস্তায় সেইরাম টেনে গেল বাস।মাত্র ৩৫ মিনিটে পৌঁছে গেলাম সদরঘাট।অকল্পনীয়,অন্য সময় হলে হয়তো ২ ঘণ্টায় ও যেতে পারতাম না।



দেখি দাঁড়িয়ে আছে এম ভি ফারহান৪ আমাদের জন্য।ওঠে পড়লাম দেরী না করে।হাতে সময় আছে ২০/২৫ মিনিট।টিকেট কাটিনি আগে ইচ্ছে করেই।কারন আমার ইচ্ছে ডেস্ক এ যাবো এবার।যতবার নদীপথে যাওয়া হয়েছে প্রতিবারই কেবিনের বদ্ধ খোলসের মধ্যে বন্দী হয়ে গেছি।এবার যেহেতু প্রধান উদ্দেশ্য রাতভর চন্দ্রস্নান করা তাই খোলা ডেস্ক এর চেয়ে উপযুক্ত স্থান আর কি হতে পারে।সাথে একটা নতুন অভিজ্ঞতাও হল।আমরা দ্বিতীয় তলায় চলে গেলাম ডেস্ক এর খোঁজে।লঞ্চ এর সামনে একদম ফ্রন্ট ডেস্ক এ গিয়ে দেখি সবাই যার যার জায়গা দখল করে নিয়েছে।যারা যাননি কখনও ডেস্ক এ করে তাদের বলছি এভাবে যেতে হলে টিকেট কাটার প্রয়োজন পড়েনা শুধু আগে আসলে আগে পাবেন ভিত্তিতে নিজের পজিশন টা দখল করে নিতে হয় পাটি কিংবা চাঁদর পেতে।সেক্ষেত্রে সবাই আগে চলে আসে ভালো জায়গাটা বুকিং করার জন্য।আমরা চারদিকে তাকিয়ে দেখি মোটামুটি সব জায়গা দখল শুধু পেছনের দিকে ২জন বসার মতো জায়গা এখনও ফাঁকা আছে।না জানলে যা হয়।দেখলাম দেরী করলে হয়তো এটুকুও দখল হয়ে যাবে।তাড়াতাড়ি গিয়ে দখল নিলাম।কিন্তু বললেই শুধু হবেনা কিছু পাততে হবে।কি করি?ক্যাম্পিং এর জন্য আনা বিছানার চাঁদর বিছিয়ে নিলাম।বেশ ভালো অভিজ্ঞতা হবে বলে মনে হচ্ছে।কলিগ কে জিজ্ঞেস করলাম এভাবে খোলা হাওয়ায় যেতে পারবে কিনা।তার চটপট উত্তর প্রথমবার সে লঞ্চে যাচ্ছে কোথাও,তাই কীভাবে যাচ্ছে সেটা কোন ব্যাপার না।হাফছেড়ে বাঁচলাম।

এই আমাদের লঞ্চ



লঞ্চ ছাড়ার সময় হয়ে গেছে।হর্ন দিচ্ছে।চারপাশের যাত্রাসঙ্গীদের দিকে চোখ বোলালাম।যাদের সাথে একটা আস্ত রাত আর একটা পুরো সকাল থাকব তাদের চিনে রাখাটা জরুরী।দেখলাম কয়েকটা ফ্যামিলি বিছানা গুছিয়ে নিচ্ছে মনে হয় শোয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে এখনই।২টা স্টুডেন্ট গ্রুপ দেখলাম একদম সামনে বসেছে।বেশ কয়েকজন বন্ধুবান্ধব মিলে যাচ্ছে।একটা গ্রুপ আবার ইতমধ্যে কার্ড বের করে ফেলেছে।দেখে মনে হল ওরাও আমাদের মতো নিঝুম দ্বীপের যাত্রী।
ঘড়িতে ৫:৪৫।বিশাল বড় লঞ্চটা ঘুরতে শুরু করতেই একটা ঠাণ্ডা হওয়ার ঝাপটা এসে লাগলো গায়ে।বেশ লাগলো এই গরমে হিমেল হাওয়ার পরশ।মনে হচ্ছে কেবিন না নিয়ে ভালই করেছি।ঠাণ্ডা হাওয়া খেতে খেতে যাবো এই ধবল জ্যোৎস্নায়।আর আমরা যেহেতু বিশাল বড় এই লঞ্চের একদম সামনে তাই সামনে গিয়ে দু’হাত তুললেই কেমন টাইটানিক টাইটানিক ফিলিংস হচ্ছিল।সদরঘাট ছেড়ে আসছি কিছুক্ষন।এখনও ঠিক অন্ধকার হয়ে ওঠেনি রাতের আকাশ।তাই আরও অপেক্ষায় থাকতে হচ্ছে যুবতী চাঁদের জন্য।বুড়িগঙ্গার দুষিত পানি কেটে চলছে আমাদের লঞ্চ।দু’পাশে যতদূর চোখ যায় বিভিন্ন রকমের ইন্ডাস্ট্রি নয়তো ইটের ভাটা ছাড়া আর কিছু চোখে পড়ছেনা।সহজেই অনুমেয় বুড়িগঙ্গার বিষাক্ত হয়ে ওঠার নেপথ্য গল্পটা কি।
এতক্ষনে অন্ধকার হয়ে গেছে।চাঁদ মামা উকি দিতে শুরু করেছে।অনেক কে এটা ওটা খেতে দেখে মনে পড়ল আমাদেরও খুদা পেয়েছে।খাবার দাবার সাথে বেশ ভালই আছে।বিভিন্ন রকমের শুকনো বিস্কিট থেকে শুরু করে হরেক রকমের ফল ভর্তি আমাদের আর একটা ব্যাগ।ফল টা আবার আমার বেশি প্রিয় কিনা তাই আমি যেখানেই যাই আর কিছু না থাকলেও ব্যাগ ভর্তি ফল থাকবেই।কলা,বিস্কিট,আপেল দিয়ে নাস্তাটা সেরে ফেললাম।সামনের তরুন গ্রুপ এতক্ষনে কার্ড খেলায় মজে গেছে।ওদের আর অন্য কোথাও নজর নেই।সামনে একটা মস্ত চাঁদ ওঠে আসছে তার সবটুকু রুপ নিয়ে ওদিকে তাদের বিন্দুমাত্র ভ্রুক্ষেপ নেই।ওদের দেখে মনে হচ্ছে আগেও গেছে ডেক’এ করে।একদম নিজের বাড়ির মতো আসর জমিয়ে বসেছে কিন্তু আমাদের কিছুটা আড়ষ্টতা সত্তেও প্রথম অভিজ্ঞতা এখনও পর্যন্ত জমজমাট।এনজয় করছি প্রতিটা সেকেন্ড।খাওয়া দাওয়া আপাতত শেষ,পেটও তাই শান্ত।এবার শুধু প্রেম করার সময়।

এই সেই প্রিয়তমা আমার



লঞ্চের লাইট গেছে।রাতও গভীর হচ্ছে।অনেকেই ঘুমের রাজ্যে হাড়িয়ে গেছে এতক্ষনে।কার্ড খেলা বন্ধ,চারদিকে এক নিস্তব্ধতা নেমে আসছে ধীরে ধীরে।রাত বাড়ার সাথে সাথে চাঁদের রঙও বদলাতে শুরু করেছে।হলুদাভ রঙের খোলস ছেড়ে ধবল সাদার মাতন লেগেছে সারা গায়ে।সে এক অসহ্য ফোয়ারা হয়ে ঝরতে শুরু করেছে,যেন সমস্ত আকাশ আজ ফুটো হয়ে গেছে।ঝরছে এক চরম আক্রোশে।আমি আজ চন্দ্রগ্রস্ত হবো।বাধা দিবনা নিজেকে।অপেক্ষা করছি আরও নির্জনতার।সবাই ঘুমিয়ে পড়ুক।নিঃশব্দ চরাচরে আমি একা জেগে থাকব।একাই ভাসব আজ ধবলপঙ্খি নায়,রাতভর এই পোড়া চোখে ভরে নেব আলোর পেয়ালা,একা আমি জ্যোৎস্না খাবো,সমস্ত গায়ে মেখে নেব উছলে পড়া দুধ সাগরের ঢেউ।
পিঠে হাতের স্পর্শ পেয়ে স্বপ্নের দুনিয়া থেকে বাস্তবে নেমে আসলাম।আমার কলিগ উঠে আসছে।সেও আমার সাথে যোগ দিল।চাঁদ তার পূর্ণ আলোর স্ফুরন ছড়াচ্ছে।চন্দ্র প্রেমের স্মৃতি হিসেবে কিছু ছবি নেওয়ার চেষ্টা করলাম।কিছুতেই মনের মতো পাচ্ছিলাম না।তারপরও তুলে নিলাম বেশ কিছু তাজা প্রেমের গল্প।হঠাৎ দেখি সব আলো জ্বলে উঠেছে।চেকার আসছে টিকেট চেক করতে।কি যে বিরক্ত হলাম বেরসিক চেকার কে দেখে।আসবিই যখন আগেই আসলিনা কেন!মাঝখানে উদয় ঠিক সিনেমার ব্রিলেনের মতো।তাড়াতাড়ি টিকেট কেটে নিয়ে তাকে বিদায় করলাম।ঘড়ির দিকে চেয়ে দেখি প্রায় ১০ টা বাজে।ইতিমধ্যে মুন্সিগঞ্জ ঘাট পেড়িয়ে এসেছি অনেকক্ষণ হল।তখন খাইনি কিন্তু এখন মনে হচ্ছে কিছু খেতেই হবে।চলে গেলাম ক্যান্টিনে।কিন্তু ভাত খাওয়ার সাহস হলনা।রুটি কলা দিয়েই আজকের রাতের মতো পেট বাবাজি কে শান্ত করলাম।কিছুক্ষন ঘুরে বেড়ালাম লঞ্চে।অবশ্য বেশি দূর যেতে পারিনি।শ্রেণী বিভেদের দরজায় গিয়ে বাঁধা পেলাম।কিছুতেই নিচের মানে ডেকের মানুষ জন ওপরে কেবিনে বা তার আশেপাশে যাওয়ার যোগ্যতা রাখেনা।যদিও এটা আমি জানতাম।তবে মাঝে মাঝে দরজা গুলো খোলাও থাকে।তখন ঠিক বৈষম্য ঘুচিয়ে এক হয়ে যাওয়ার একটা সুযোগ থাকে।যাইহোক ফিরে আসলাম আপন নীরে।ওদের বদ্ধ ছোট্ট কেবিনের থেকে আমাদের খোলা আকাশই অনেক ভালো।দেখলাম চেকার এতক্ষনে তার কাজ সম্পাদন করে চলে গেছেন।তার মানে এখন আবার আমার অবাদ স্বাধীনতা।সমস্ত লঞ্চ ঘুমিয়ে পড়ুক।তারপর আবার শুরু হবে দ্বিতীয় পর্ব।রাত গভীর হচ্ছে।খুব ভালো হতো যদি লঞ্চের ছাঁদে যেতে পারতাম।তাহলে আরও ভালোভাবে প্রেম জমত পূর্ণবতি চন্দ্রাবতির সাথে খোলা আকাশের নিচে।



রাত বেশ গভীর হয়ে এলো।ঠাণ্ডা কনকনে হাওয়া বইতে শুরু করেছে।বেশ তীব্র সেই হাওয়ার দাপট।একদম জমিয়ে দেওয়ার মতো।আমাদের দুজনের কাছে যা ছিল মানে সবেদন নীলমণি আমার একটা হালকা সুয়েটার পড়ে নিলাম আর আমার কলিগ রাজিব ভাইয়ের কাছে দেখলাম সুয়েটারের সাথে একটা মাফলারও আছে। সে যা আছে সব পড়ে নিয়েছে।সবশেষ সাথে থাকা গামছাটাও মাথায় পেঁচাতে হল আমার।কিন্তু তাও খুব বেশি আটকাতে পারছিনা মধ্য মেঘনায় ভয়ঙ্কর ভাবে তেরে আসা এই ঠাণ্ডা বাতাসের স্রোত।এই প্রথম মনে হল ডেকে এসে মনে হয় ভুলই করলাম।

আবীর রাঙ্গা আকাশ



ইতিমধ্যে আরও কয়েকবার দাঁড়িয়েছে লঞ্চ।একটা ঘাটে তো দেখলাম কোন পলটুন নেই,সাইনবোর্ড নেই।সোজা মাটির ঘাটে এনে দাঁড় করিয়ে দিল এতো বিশাল বড় এই লঞ্চ টা।কিছু জানতেও পারলাম না কোথায় আসলো।রাত দেড়টা কি ২ টা বাজে তখন।কয়েকজন লোক দেখলাম নামলো সেই সাথে উঠলো ৪/৫ জন।এতো রাতে এমন একটা জায়গায় কেন দাঁড়ালো লঞ্চ যেখানে মাত্র ৭/৮ জন উঠানামা করল ঠিক বুঝে উঠতে পারলাম না।ভোর প্রায় সাড়ে পাঁচ টায় লঞ্চ এসে থামল তজুমদ্দিন ঘাটে।এই নামটা হয়তো অনেকের জানা।ভোলার চরফ্যাশন অথবা কুঁকড়িমুকড়ি গামি সব লঞ্চ এখানে দাঁড়ায়।পরবর্তী বিরতি আমাদের মনপুরায়।তখনও ঘুটঘুটে অন্ধকার।মাঝ নদী দিয়ে চলছে আমাদের লঞ্চ।নদীর দুইপাশেই ধুধু কুয়াশার ভেলা ছাড়া আর কিছু চোখে পরছেনা তখন।আস্তে আস্তে পূব আকাশের রঙ বদলাতে শুরু করেছে।ঘন অন্ধকারের বুকে রক্তাভ লাল টুকটুকে সূর্যটা উঁকি মারার অপেক্ষায়।সে এক অভূতপূর্ব দৃশ্য।পুরো আকাশ যেন লাল আবীরে কেউ মাখিয়ে দিয়েছে পরম মমতায়।এবারে দু’পাশ ও স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে।তবে একপাশে পানির জলরাশি ছাড়া আর কিছু দেখা যাচ্ছেনা।যতদূর চোখ যায় শুধু পানি আর পানি।অন্য পাশটায় বহুদুরে দ্বীপের মতো কিছু দেখা যাচ্ছে।সবুজ গাছের সারি দিয়ে দ্বিপ টাকে ঘিরে রেখেছে।ওই দিক টায় অবশ্য এরকম আরও অসংখ্য ছোট ছোট দ্বিপ আছে।কোনটাতে হয়তো কোন মানুষ ই থাকেনা।আস্তে আস্তে উঠে আসছে সূর্য্যি মামা।বিশাল নদীর বক্ষ চিরে বেড়িয়ে আসছে তার মাথা,তারপর মুখ,তারপর সমস্ত শরীর।এই অপার্থিব দৃশ্যের সাথে আসলে কোন কিছুর তোলনা চলেনা।কোন ভাষাও হয়তো তা প্রকাশে দুর্বল মনে হবে।শুধু চেয়ে থাকা আর প্রানভরে উপভোগ করা ছাড়া।আমার ক্যামেরার ব্যাটারিটাও হয়তো তাই ঠিক এই সময়টাতেই দুর্বল হয়ে গেল।দুই একটা ছবি নিতেই বন্ধও হয়ে গেল।যাইহোক মনের খাঁচায় বন্দী করে নিয়েছি সেই দৃশ্য স্থায়িভাবে।

নদীর বুক চিরে উঠে আসছে সূর্য্যি মামা






যেখানে নদী মিশে আছে মেঘের সাথে



ভাঙ্গনে আক্রান্ত মনপুরা







সাড়ে ছয়টায় পৌঁছে গেলাম মনপুরা।আমাদের প্রথম গন্তব্য।তখনও পর্যন্ত আমরা দ্বিধায় ছিলাম আমরা কি মনপুরায় থেকে যাবো নাকি নিঝুম দ্বিপ যাবো।মুন্সিগঞ্জ থেকে লঞ্চ ভর্তি করে সিমেন্টের বস্তা উঠিয়েছে।এগুলো এখানে নামাবে।তাই অনেক সময় আমাদের হাতে।নেমে নাশতা করে নিলাম।তারপর একটু ঘুরে দেখলাম।ছবি নিলাম মনপুরার বুকে।একটা মজার তথ্য জানলাম স্থানীয় লোকজনের কাছ থেকে।সেটা হল যে “মনপুরা” ছবির মাধ্যমে এই ছোট্ট দ্বীপের পরিচিতি এখন সাড়া দেশে সেই ছবির শ্যুটিং ওখানেই নাকি হয়নি।এমনকি তাদের ভাস্যমতে পরিচালক গিয়াস ভাই নাকি এই দ্বীপের নামও শোনেনি আগে(পরে কোন এক সাক্ষাতকারে বলেছে)।কল্পিত এক চরিত্র,একটা দ্বীপের কাহিনি কি করে অনেকটাই পালটে দিল মনপুরার মানুষের জীবন।এখন প্রতিদিন সকালে অনেক মানুষ এসে জড়ো হয় এই ঘাটে কখন লঞ্চ আসবে সাথে নিয়ে আসবে তাদের কয়েকজনের কিছুটা হলেও ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য আমাদের মতো কিছু পাগলা অভিযাত্রী দল।

চলবে...
সর্বশেষ এডিট : ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:৪৬
৪৫টি মন্তব্য ৪৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

জীবনের গল্প

লিখেছেন ঢাকার লোক, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:৩৫

মাত্র মাস দুই আগে আমার এক আত্মীয়ের সাথে দেখা আমার এক বোনের বাড়ি। তার স্ত্রী মারা গেছেন তার সপ্তাহ দুই আগে। মক্কায় উমরাহ করতে গিয়ে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

অভিমান

লিখেছেন জিনাত নাজিয়া, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১০:১২

" অভিমান "

তোমার ঠোঁটে বোল শিখেছি
তুমি আমার মা, কেমন করে
ভুলছ আমায় বলতে
পারিনা। এমন করে চলে
গেলে, ফিরে ও এলেনা। হয়তো
তোমার সুখেই কাটছে দিন,
আমায় ভাবছ না।

আমি এখন সাগর... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার কিছু ভুল!

লিখেছেন মোঃ খালিদ সাইফুল্লাহ্‌, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১:৪৮

১। ফ্লাস্কে চা থাকে। চা খেতে টেবিলে চলে গেলাম। কাপে দুধ-চিনি নিয়ে পাশে থাকা ফ্লাস্ক না নিয়ে জগ নিয়ে পানি ঢেলে দিলাম। ভাবছিলাম এখন কি করতে হবে? হুঁশ ফিরে এল।... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশের লোকসংস্কৃতিঃ ব্যাঙের বিয়েতে নামবে বৃষ্টি ...

লিখেছেন অপু তানভীর, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:০০



অনেক দিন আগে একটা গল্প পড়েছিলাম। গল্পটা ছিল অনেক এই রকম যে চারিদিকে প্রচন্ড গরম। বৃষ্টির নাম নিশানা নেই। ফসলের মাঠ পানি নেই খাল বিল শুকিয়ে যাচ্ছে। এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশি ভাবনা ও একটা সত্য ঘটনা

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:১৭


আমার জীবনের একাংশ জুড়ে আছে; আমি চলচ্চিত্রাভিনেতা। বাংলাদেশেই প্রায় ৩০০-র মত ছবিতে অভিনয় করেছি। আমি খুব বেছে বেছে ভাল গল্পের ভাল ছবিতে কাজ করার চেষ্টা করতাম। বাংলাদেশের প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

×