প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আগামী বছরের মধ্যে সরকার গ্রামাঞ্চলে উন্নততর যোগাযোগ ব্যবস্থা প্রবর্তনের লক্ষ্যে দেশের সকল ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়কে ফাইবার অপটিক নেটওয়ার্কের আওতায় আনার ব্যাপক পরিকল্পনা নিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রাথমিকভাবে একশ'টি ইউনিয়ন পরিষদকে ফাইবার অপটিক নেটওয়ার্কের আওতায় আনার জন্য নির্ধারণ করা হয়েছে। আগামী এক বছরের মধ্যে আরো এক হাজার ইউনিয়ন পরিষদ এই নেটওয়ার্কের আওতায় আনা হবে। প্রধানমন্ত্রী রাজধানীরর্রোডিসন ওয়াটার গার্ডেন হোটেলে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয় আয়োজিত 'ডিজিটাল বাংলাদেশ : প্লান অব কানেকটিং পিপল' উদ্বোধনকালে একথা বলেন। অনুষ্ঠানে আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন আইটি বিশেষজ্ঞ ও কম্পিউটার বিজ্ঞানী সজিব আহমেদ ওয়াজেদ বিষয় ভিত্তিক 'থিম পেপার' উপস্থাপন করেন। এতে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী রাজিউদ্দিন আহমেদ রাজু সভাপতিত্ব করেন।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে আন্তর্জাতিক টেলিকমিউনিকেশন ইউনিয়ন (আইটিইউ)'র মহাসচিব ড. হামাদুন আইটোরি, বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন রেগুলেটরি কমিশনের (বিটিআরসি) চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) জিয়া আহমেদ এবং ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের সচিব সুনীল কান্তি বোস বক্তৃতা করেন। শেখ হাসিনা বলেন, এই প্রকল্পের আওতায় জনগণের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে এবং আইটিভিত্তিক বিশ্বে প্রতিযোগিতার লক্ষ্যে দেশের শিক্ষা ব্যবস্থাকে সময়োপযোগী ও আধুনিক হিসেবে গড়ে তুলতে সব হাসপাতাল ও স্কুল কম্পিউটার নেটওয়ার্কের আওতায় আনা হবে।
এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ২০২১ সালের মধ্যে ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়তে তাঁর সরকারের ঘোষিত ভিশন বাস্তবায়নে সকল উপজেলা হাসপাতালে কম্পিউটার সরবরাহ এবং ওয়েব ক্যামেরাসহ ইন্টারনেট সংযোগ স্থাপন করা হয়েছে। পাশাপাশি দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে দেড় হাজার ল্যাপটপ দেয়া হয়েছে। তিনি বলেন, পর্যায়ক্রমে সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কম্পিউটার ল্যাব স্থাপন করা হবে। দেশব্যাপী তথ্যপ্রযুক্তি (আইটি) সমপ্রসারণে তাঁর সরকারের বিভিন্ন বাস্তবমুখী পদক্ষেপের উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ইতোমধ্যে দেশের ১২৮টি উপজেলায় কম্পিউটার ল্যাব স্থাপন করা হয়েছে এবং পর্যায়ক্রমে অন্য উপজেলাগুলোতে কম্পিউটার ল্যাব স্থাপন করা হবে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশের ৫টি উপজেলায় কমিউনিটি ই-সেন্টার স্থাপন করা হয়েছে এবং অন্য উপজেলাগুলোতেও ই-সেন্টার স্থাপন করা হবে।
তিনি বলেন, তাঁর সরকার ইতোমধ্যে আইসিটি পলিসি-২০০৯ অনুমোদন দিয়েছে এবং দেশে আইসিটি শিলের বিকাশ ত্বরান্বিত করতে আইসিটি এ্যাক্ট-২০০৯ প্রণয়ন করেছে। দেশব্যাপী আইটির সমপ্রসারণে তাঁর সরকারের ভিশন তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, দেশের বিভিন্ন প্রান্তে সাড়ে ৮ হাজার পোস্ট অফিসে 'ই-সেন্টার ফর রুরাল কমিউনিটি' স্থাপন করার পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সঙ্গে মন্ত্রী পরিষদ এবং ৬৪ জেলা প্রশাসক ও ৭ বিভাগীয় কমিশনারের মধ্যে যোগাযোগ সহজ করতে অত্যাধুনিক প্রযুক্তি নির্ভর কনফারেন সুবিধা প্রদানের ব্যবস্থা নেয়া হবে। শেখ হাসিনা বলেন, গাজীপুরে হাইটেক পার্কের জন্য প্রয়োজনীয় অবকাঠামো তৈরি এবং সমগ্র দেশ ই-গভর্নেনের আওতায় আনতে দেশজুড়ে টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থা শক্তিশালী করা হচ্ছে। স্যাটেলাইট স্থাপনে সরকার প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেবে বলে তিনি উলে−খ করেন। সরকারি ও বেসরকারি খাতের উদ্যোগে আইটি ভিত্তিক বাংলাদেশ গড়ে উঠবে এই আশাবাদ ব্যক্ত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই বিশাল কর্মকাণ্ড সরকারের একার পক্ষে বাস্তবায়ন করা সম্ভব নয়। ২০২১ সালে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী পালনের উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, এই সময়ের মধ্যে আমরা বাংলাদেশকে জ্ঞান-বিজ্ঞান-প্রযুক্তি এবং অর্থনৈতিক দিক থেকে একটি আধুনিক ও সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে গড়ে তুলতে চাই। আধুনিক ও প্রযুক্তি নির্ভর বাংলাদেশ বিনির্মাণে সকলকে এগিয়ে আসার আহবান জানিয়ে তিনি বলেন, ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার মাধ্যমে এ লক্ষ্য অর্জন সম্ভব।

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




