somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

অজানা চে : তাঁর জীবনের কিছু অজানা দিক

১০ ই অক্টোবর, ২০১১ দুপুর ২:০৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

লেখাটি সংগৃহীত।



আমাদের কাছে চে একজন বিপ্লবী, একজন নেতা আর সংগ্রামী এক যোদ্ধা। এখানে তাঁর জীবনের অজানা দিক ও খন্ড খন্ড কিছু ঘটনা তুলে ধরা হলো যা পাঠকের সামনে অন্য এক চেকে হাজির করবে।
* হাঁপানির সঙ্গে বসবাস
১৯৩০ সালের ২ মে সুইমিং পুলের বরফশীতল পানিতে গোসল করতে গিয়ে ছোট্ট চের ঠান্ডা লেগে যায়। সেই প্রথম তাঁকে আক্রমণ করে হাঁপানি। তখন তাঁর বয়স মোটে দুই বছর। তারপর আমৃত্যু আর তাঁর পিছু ছাড়েনি এই রোগ। তাঁর শেখা প্রথম বুলির একটা ছিল ইনজেকশন। অনেকে অবশ্য বলে থাকেন, চের লৌহকঠিন মনোবলের পেছনে হাঁপানিরও অবদান আছে।

* কীটনাশকের নাম আতিলা
ছাত্রজীবনে একবার এক বন্ধুকে নিয়ে আতিলা নামে একটা কীটনাশক তৈরির পরিকল্পনা করেন চে। উদ্দেশ্য ওটা বাজারজাত করে টুপাইস কামানো। শেষ পর্যন্ত কীটনাশক প্রস্তুত করতে ব্যর্থ হলেও চেদের পুরো বাড়ি বিশ্রী গন্ধে ঠিকই ভরিয়ে দিতে পেরেছিলেন দুই বন্ধু।

* কমিউনিস্ট না, ইকোনমিস্ট
ক্ষমতা গ্রহণের পর চেকে প্রথম কিউবার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রেসিডেন্ট নিয়োগ করেন কাস্ত্রো। এটা নিয়ে আছে মজার এক ঘটনা। বিপ্লবীদের এক অধিবেশনে একদিন কাস্ত্রো জিজ্ঞেস করলেন, ‘এই কামরায় কি কোনো ইকোনমিস্ট আছেন?’ ভুলে চে শুনলেন, ‘এখানে কি কোনো কমিউনিস্ট আছেন?’ অতএব বিনা দ্বিধায় হাত তুললেন তিনি। ‘চমৎকার, আপনিই হবেন আমাদের ব্যাঙ্কো ন্যাশিওনালের প্রেসিডেন্ট।’ এভাবেই নাকি ব্যাংকার বনে যান চে।

* চের চুরুট
অতিরিক্ত ধুমপান করতেন চে। সহকর্মীরা তাঁর স্বাস্থ্য নিয়ে খুব দুশ্চিন্তায় থাকতেন। শেষ পর্যন্ত একদিন তাঁদের দিকে চেয়ে আপস করলেন এর্নেস্তো চে গুয়েভারা; জানালেন, ‘আগামীকাল থেকে আমি কেবল একটা করে চুরুট খাব।’
পরদিন কথামতো একটা চুরুট নিয়েই হাজির হলেন তিনি। তবে তার দৈর্ঘ্য ছিল প্রায় এক মিটার!


* খেলোয়াড় চে
রাগবি ছিল তাঁর পছন্দের খেলা। হাঁপানির কারণে মাঝে মাঝে মাঠের বাইরে থাকতে হলেও দুর্দান্ত খেলার জন্য তাঁর নামই হয়ে যায় ‘ফিউসার’ (উন্নত্ত)। একবার বাবা-মা তাঁকে জোর করে রাগবি ক্লাব থেকে বের করে আনলেন। কিন্তু নাছোড়বান্দা চে গোপনে যোগ দিলেন আরেকটি ক্লাবে।
চের আরেক নেশা ছিল দাবা। কিশোর বয়সেই এক খেলায় আর্জেন্টিনার বিখ্যাত দাবাড়ু মিগুয়েল নাজদর্ফকে ড্রতে রুখে দিয়ে সবাইকে চমকে দেন। রুশ দাবা চ্যাম্পিয়ান ভিক্টর করতচনয়ের সঙ্গে শিল্প মন্ত্রণালয়ে এক দাবা টুর্নামেন্টের আয়োজন করেছিলেন তিনি। ১৯৬৩ সালে টেলিফোনে কিংবদন্তি দাবাড়ু ববি ফিশারের সঙ্গেও দাবা খেলেছেন চে।


* লেখক চে
কর্মযোগী এই মানুষটির লেখালেখির পরিমাণ শুনলেও আপনি চমকে উঠবেন। আমরা শুধু তাঁর লেখা গোটা দশেক বইয়ের নাম জানি। এর বাইরে বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে তাঁর অনেক লেখা। শুধু কিউবান ভাষায় তাঁর এ রকম প্রায় ৭০টি নিবন্ধ আছে। বেনামে, ছদ্মনামে লিখেছেন আরও ২৫টি নিবন্ধ। পাঁচটির মতো বইয়ের ভুমিকা লিখেছেন। ১৯৫৮ থেকে ১৯৬৫−এই আট বছরে শুধু ভাষণ আর সাক্ষাৎকারই দিয়েছেন আড়াই শর মতো। চিঠি টিকে আছে ৭০টির মতো। তাঁর লেখালেখি নিয়ে এখন পর্যন্ত বের হয়েছে নয় খন্ড রচনাবলি। এসবই তিনি করেছেন ৩৯ বছরের জীবনে, যার সিংহভাগই ব্যয় হয়েছে ভ্রমণে আর বিপ্লবে।

বিষয় যখন চে
চে গুয়েভারার ওপর বহু বই লেখা হয়েছে। নানা দেশে নানা ভাষায় প্রতিবছর তাঁকে নিয়ে বই প্রকাশিত হয়। বইবিষয়ক ওয়েবসাইট আমাজন ডট কমে (http://www.amazon.com) অনুসন্ধান করে জানা গেল শুধু ইংরেজি ভাষায় প্রকাশিত আট হাজার ৩৬৯টি বইয়ের কথা। এগুলোর মধ্যে আছে, চের বক্তৃতা, ডায়েরি, স্নৃতিকথা, সংকলন, চেকে নিয়ে লেখা বই, এবং বিশেষভাবে চের বিষয় উল্লেখ আছে এমন কিছু বই। ইন্টারনেট মাধ্যমেও চের জনপ্রিয়তা তুঙ্গে। বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে থাকা ওয়েবসাইটগুলোতে চে বিষয়ে প্রচুর লেখা আপলোড হয়েছে। গুগল সার্চ ইঞ্জিনে সার্চ দিয়ে এমন প্রায় ৮০ লাখ ভুক্তি পাওয়া গেছে যেগুলোতে চের প্রসঙ্গ আছে।


সূত্র: পদ্মা পাড়ের মানুষ
১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছি , অবৈধ দখলদার॥ আজকের প্রতিটি অন‍্যায়ের বিচার হবে একদিন।

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:১০



ধিক ‼️বর্তমান অবৈধভাবে দখলদার বর্তমান নরাধমদের। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশে । বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষমা চাইতে হলো ! রাজাকার তাজুলের অবৈধ আদালতে। এর চাইতে অবমাননা আর কিছুই হোতে পারেনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আম্লিগকে স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধে আর কোন বাধা নেই

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:২২


মঈন উদ্দিন ফখর উদ্দিনের ওয়ান-ইলেভেনে সরকারের ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে ভারতের সহায়তায় পাতানো নির্বাচনে হাসিনা ক্ষমতায় বসে। এরপরই পরিকল্পিত উপায়ে মাত্র দুই মাসের মধ্যে দেশপ্রেমিক সেনা অফিসারদের পর্যায়ক্রমে বিডিআরে পদায়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

মিশন: কাঁসার থালা–বাটি

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:২৭

বড় ভাই–ভাবীর ম্যারেজ ডে। কিছু একটা উপহার দেওয়া দরকার। কিন্তু সমস্যা হলো—ভাই আমার পোশাক–আশাক বা লাইফস্টাইল নিয়ে খুবই উদাসীন। এসব কিনে দেওয়া মানে পুরো টাকা জ্বলে ঠালা! আগের দেওয়া অনেক... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

J K and Our liberation war১৯৭১

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯



জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×