আজকাল মুক্তমনাদের বা আধুনিক চিন্তার লোকদের আর্দশ হিসেবে আজাদ, আহমদ শরীফের নাম বা আরজ আলীর নাম বেশি উচ্চারিত হতে দেখা যায় কিন্তু বাঙলার প্রথম আধুনিক মহাপুরুষ একই সাথে ধর্মের বেড়াজাল থেকে যিনি প্রথম বের হন ও সমাজকে বের করার চেষ্টা চালান; তিনি আমাদের ঋষি ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর। বাঙালির প্রথম নাস্তিক ছিলেন তিনি। যিনি ইংরেজদের চাকরি করলেও কখন ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট মাথা নত করেননি বরং কর্মজীবনে তিনি ছিলেন প্রবল জেদী ও আত্মমর্যাদা সম্পন্ন। বাঙলা ভাষায় ও বাঙলা সাহিত্যে তাঁর অবদান অতুলনীয়। ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের অন্যতম কৃতিত্ব শিক্ষা সংস্কার। হিন্দুশাস্ত্রবিদ হয়েও ধর্মকে শিক্ষাক্ষেত্র থেকে নির্বাসিত করতে বিন্দুমাত্র দ্বিধা করেননি ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর। ধর্মনিরপেক্ষ শিক্ষাদর্শের জনক তিনি। বিজ্ঞান শিক্ষার বিকাশ ও বৈজ্ঞানিক চিন্তাধারার প্রবর্তনেও বিশেষ আগ্রহী ছিলেন বিদ্যাসাগর মহাশয়। তাঁর রচনায়, কার্যে নানাভাবে বিজ্ঞান প্রীতির নিদর্শন রেখেছেন তিনি।
সংস্কৃত শাস্ত্রের বিরাট পণ্ডিত হয়েও পাশ্চাত্য শিক্ষা ও সংস্কৃতি গ্রহণে দ্বিধা করেননি ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর। নারীমুক্তি আন্দোলনের প্রবল সমর্থক ছিলেন তিনি। হিন্দু বিধবাদের অসহনীয় দুঃখ, তাঁদের প্রতি পরিবারবর্গের অন্যায়, অবিচার, অত্যাচার গভীরভাবে ব্যথিত করেছিল তাঁকে। এই বিধবাদের মুক্তির জন্য তিনি আজীবন সর্বস্ব পণ করে সংগ্রাম করেছেন। তাঁর পুত্রকেও এক ভাগ্যহীনা বিধবার সাথে বিবাহ দেন। এজন্য সেযুগের রক্ষণশীল সমাজ ও সমাজপতিদের কঠোর বিদ্রুপ ও অপমানও সহ্য করতে হয় তাঁকে। বিধবা বিবাহ প্রবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে বহুবিবাহের মতো একটি কুপ্রথাকে নির্মূল করতেও আজীবন সংগ্রাম করেন ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর। প্রচার করেন বাল্যবিবাহ রোধের সপক্ষেও। এর সঙ্গে সঙ্গে নারীশিক্ষার প্রচারেও যথাযথ গুরুত্ব আরোপ করেন তিনি। মানুষের দুঃখে তিনি সবসময় মানুষে সাথে ছিলেন এবং সাধ্য মত সাহায্য করতেন এই জন্য দাকে “দয়ার সাগর” নামেও ডাকা হতো।
মাতৃভক্তি ছিল তাঁর চরিত্রে অন্যতম গুণ। শোনা যায়, এই মায়ের ডাকে একবার তিনি ঝঞ্ঝাবিক্ষুধ্ব দামোদর নদ সাঁতরেও পার হয়েছিলেন।
***পয়দা হওয়ার পর কোন ঋষি তো দূরে থাক কোন মহান ব্যক্তিরেই দেখলাম না। শুধু দেখলাম কিছু গুন্ডা আর বদমাইশ।

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




