somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ইহুদি রাজার গণহত্যা ও আ’দ জাতির খোঁজে-৬ (আরব ডায়েরি-৫৬)

০৩ রা জুন, ২০১৩ দুপুর ২:১৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

১ম পর্ব
২য় পর্ব
৩য় পর্ব
৪র্থ পর্ব
৫ম পর্ব

পবিত্র কোরআনের সুরা শুআ’রা (২৬:১২৮-১২৯) মাধ্যমে আমরা জানতে পারি আ’দ জাতি দম্ভ বশত উঁচু স্থানগুলোতে স্মৃতি স্তম্ভ ও প্রাসাদ নির্মাণ করেছিল।

ইতিহাস থেকে আমরা আরও জানতে পারি আ’দ জাতিতে ১০০০ এর মত গোত্র ছিল। প্রতিটি গোত্রে হাজারের উপর লোকসংখ্যা ছিল। এই গোত্রগুলো আরবের বিভিন্ন দিকে ছড়িয়ে পড়েছিল। সাদ্দাদের সময় এই গোত্রগুলির কেউ কেউ ইরাক, সিরিয়া ও মিশরে বসতি স্থাপন করে।
তাহলে তাদের নির্মিত স্মৃতি স্তম্ভগুলো কি পিরামিড ছিল? অনেকে তাই মনে করেন, যদিও বিতর্ক আছে। প্রত্নতত্ত্ববিদ আর ইতিহাসবিদদের জন্য এটি একটি চমৎকার বিষয় হতে পারে।


এমনি একপর্যায়ে যখন আ’দ জাতি আল্লাহ’র মহিমা কে ভুলে গেল, হযরত হূদ (আঃ) আ'দ জাতির মাঝে আল্লাহর বানী প্রচার করতে থাকেন।

আর আ’দ জাতির প্রতি আমি তাদের ভাই হুদকে (আঃ) প্রেরণ করেছি; তিনি বলেন-হে আমার জাতি, তোমরা আল্লাহর ইবাদত কর, তিনি ভিন্ন তোমাদের কোন সত্য মাবুদ নেই, তোমরা শুধু মিথ্যা উদ্ভাবনকারী। (সূরা হূদঃ ৫০)

তারা হুদ (আঃ) কে পাগল ভাবল। যেহেতু তারা দীর্ঘকায় ছিল, তারা ভাবত তাদের চেয়ে বড় আর শক্তিশালী কেউ হতে পারে না। তারা তাদের দেবতাদেরকে বর্জন করতে অস্বীকার করল। হযরত নুহ (আঃ)ও হযরত হুদ (আঃ) ছিলেন এমন দু’জন নবী যারা আল্লাহ প্রদত্ত কোন ধরনের মোজেযা তাদের জাতির সামনে উপস্থাপন করেননি। তাই তারা হুদ (আঃ) কে মিথ্যাবাদী বলল।

তারা বলল-হে হুদ, তুমি আমাদের কাছে কোন প্রমাণ নিয়ে আস নাই, এবং আমরা তোমার কথায় আমাদের উপাস্য দেবতাদেরকে বর্জন করতে পারি না, আর আমরা কিছুতেই তোমার প্রতি বিশ্বাস স্থাপনকারী নই।(সূরা হূদঃ ৫৩)

আমাদের কথা তো এই যে,আমাদের উপাস্য দেবতাদের মধ্য হতে কেউ তোমাকে দুর্দশায় ফেলে দিয়েছে; হূদ (আঃ) বললেনঃ আমি আল্লাহকে স্বাক্ষী করছি এবং তোমরাও স্বাক্ষী থেকো। আমি ঐ সব কিছু থেকে মুক্ত যাদেরকে তোমরা শরীক সাব্যস্ত করেছ। (সূরা হূদঃ ৫৪)


আ’দ জাতি দাম্ভিকতার সাথে হূদ (আঃ) কে প্রত্যাখান করল। তারা বলল, পারলে আমাদেরকে তোমার আল্লাহ প্রদত্ত শাস্তির ব্যবস্থা কর। হূদ (আঃ) মিথ্যাবাদীদের উপর বিজয়ী হবার জন্য আল্লাহর নিকট প্রার্থনা করলেন। পরবর্তী ৩ বছর কোন প্রকার বৃষ্টি হল না। খরায় গাছপালা ও গবাদিপশু ধবংস হয়ে গেল। তারপর বিশাল কালোমেঘপুঞ্জ দেখা গেল। আ’দরা খুশী হয়ে গেল। তারা ভাবল শীঘ্রই বৃষ্টি হবে। কিন্তু তারা জানতনা তাদের জন্য কি অপেক্ষা করছিল। এই মেঘ প্রচন্ড বাতাস বয়ে নিয়ে এল। এই বাতাস ঝড় এতটাই শক্তিশালী ছিল যে, কেউ পালাতে পারল না। সবাইকে উড়িয়ে নিয়ে আছড়ে মারল। শুধুমাত্র হূদ (আঃ) ও তার অনুসারিরা বেঁচে রইলেন।


আর আ’দ সম্প্রদায়, তাদেরকে ধ্বংস করা হয়েছিল এক প্রচন্ড ঘুর্ণিঝড়ের দ্বারা। যা তিনি তাদের উপর প্রবাহিত করেছিলেন সাত রাত ও আট দিন বিরামহীনভাবে, তুমি (সেখানে থাকলে) সেই সম্প্রদায়কে দেখতে খেজুর কান্ডের ন্যায় সেখানে পড়ে আছে। (সুরা হাককাহঃ ৬-৭)

আর যখন আমার (শাস্তির) হুকুম এসে পৌছল তখন আমি হূদকে (আঃ) এবং যারা তার সাথে ঈমানদার ছিল তাদেরকে স্বীয় অনুগ্রহে রক্ষা করলাম, আর তদেরকে বাঁচিয়ে নিলাম অতি কঠিন শাস্তি হতে। (সূরা হূদঃ ৫৮)


আ’দ জাতি তাদের শক্তিমত্তা নিয়ে দম্ভ করত। আল্লাহ তাদেরকে মিথ্যা প্রমাণিত করলেন। তাদেরকে ও তাদের শহরকে ধ্বংস করে দিলেন। সাত রাত ও আট দিন বিরামহীনভাবে বয়ে চলা ঘুর্ণিঝড় পুরো শহরকে বালির নীচে চাপা দেয়। সাদ্দাদের বেহেশত তৈরি শেষ হয়ে গিয়েছিল। জাকজমকভাবে তার তৈরি বাগানে প্রবেশের পূর্ব মূহুর্তেই সে সহ সবকিছু ধ্বংস হয়ে যায়।

আর আ’দ সম্প্রদায়ের ব্যাপার এই যে, তারা পৃথিবীতে অযথা দম্ভ করত এবং বলতঃ আমাদের অপেক্ষা শক্তিশালী কে আছে? তারা কি তবে লক্ষ্য করেনি যে, আল্লাহ, যিনি তাদেরকে সৃষ্টি করেছেন, তিনি তাদের অপেক্ষা শক্তিশালী? অথচ তারা আমার নির্দেশাবলীকে অস্বীকার করত। (সুরাঃ হা-মীম-আসসাজদাহ ১৫)

যুগে যুগে কেন বিভিন্ন জাতিকে ধ্বংস করা হয়েছে? এর উত্তর পাওয়া যায় পবিত্র কোরআনে। এই ধ্বংসপ্রাপ্ত জনপদসমূহ এখন আমাদের জন্য নিদর্শনসরুপ। আমরা যাতে শিক্ষা নিয়ে আল্লাহ’র পথে সুদৃঢ় থাকতে পারি।

আর তোমার প্রতিপালক এমন নন যে, জনপদসমূহকে অন্যায়ভাবে ধ্বংস করে দিবেন, অথচ ওর অধিবাসী সৎকাজে লিপ্ত রয়েছে। (সুরা হূদ-১১৭)

রাসূলদের ঐ সব বৃত্তান্ত আমি তোমাদের কাছে বর্ণনা করছি, এর দ্বারা আমি তোমার চিত্তকে দৃঢ় করি, এর মাধ্যমে তোমার কাছে এসেছে সত্য এবং মুমিনদের জন্য এসেছে উপদেশ ও শিক্ষনীয় বানী। (সুরা হূদ-১২০)

অবশ্যই এতে নিদর্শন রয়েছে পর্যবেক্ষণ শক্তি সম্পন্ন ব্যক্তিদের জন্য। (সুরা হিজর-৭৫)
সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা জুন, ২০১৩ বিকাল ৫:৫৮
৫টি মন্তব্য ৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। গানডুদের গল্প

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:২৮




তীব্র দাবদাহের কারণে দুবছর আগে আকাশে ড্রোন পাঠিয়ে চীন কৃত্রিম বৃষ্টি নামিয়েছিলো। চীনের খরা কবলিত শিচুয়ান প্রদেশে এই বৃষ্টিপাত চলেছিলো টানা ৪ ঘন্টাব্যাপী। চীনে কৃত্রিম বৃষ্টি নামানোর প্রক্রিয়া সেবারই প্রথম... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতকে জানতে হবে কোথায় তার থামতে হবে

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৪৫


ইন্ডিয়াকে স্বপ্ন দেখানো ব্যাক্তিটি একজন মুসলমান এবং উদার চিন্তার ব্যাক্তি তিনি হলেন এপিজে আবুল কালাম। সেই স্বপ্নের উপর ভর করে দেশটি এত বেপরোয়া হবে কেউ চিন্তা করেনি। উনি দেখিয়েছেন ভারত... ...বাকিটুকু পড়ুন

জামায়াত শিবির রাজাকারদের ফাসির প্রতিশোধ নিতে সামু ব্লগকে ব্লগার ও পাঠক শূন্য করার ষড়যন্ত্র করতে পারে।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:৪৯


সামু ব্লগের সাথে রাজাকার এর সম্পর্ক বেজি আর সাপের মধ্যে। সামু ব্লগে রাজাকার জামায়াত শিবির নিষিদ্ধ। তাদের ছাগু নামকরণ করা হয় এই ব্লগ থেকেই। শুধু তাই নয় জারজ বেজন্মা... ...বাকিটুকু পড়ুন

×