এবারের ইরি বোরো মৌসুম চলছে। ফলন হয়েছে বাম্পার।
কিন্তু কৃষকের সস্তি নেই বরং তাদের চেহারায় দেখা যায় হতাশার ছাপ।
সোনালী ধানে আঙিনাটা ভরপুর হলেও ধানের নেই উপযুক্ত
বাজার দর। মাত্র ৫০০ টাকা মন দরে ধান বেঁচতে হচ্ছে কৃষককে!
সরকার খাদ্য মন্ত্রনালয় কত্তৃক একটি বেশ ভালো দাম বেধে দিলেও
সেই দাম কার্যকর হচ্ছেনা। বরং স্হানীয় বেপারী ও মিলারদের নির্ধারিত
দরেই বাধ্য হয়ে বিক্রী করছে কৃষক তার কষ্টে উৎপাদিত ধান।
খাদ্য মন্ত্রনালয় দায়সারা গোছের একটি দাম নির্ধারন করে দিলেও
তারা নিজেরাই ধান কিনছেনা। তাই মিলার এবং বেপারী চক্র এই দুই
শ্রেণীর মধ্যসত্বভোগীর কাছেই জিম্মি হয়েই বেচতে হচ্ছে ধান!
সরকার ধান না কেনায় ধান এবং চালের বাজার নিয়ন্ত্রন করছে মিলার
সিন্ডিকের। সরকারী দাম কার্যকর হচ্ছেনা বরং মিলারদের দামেই চলছে
এই ধান চালের বাজার।
কৃষকের অতিরিক্ত পয়সা নেই যা দিয়ে সংসার খরচ নিবারন করবে।
তাই দাম কম হলেও তাদের ধান বিক্রী করতে বাধ্য হচ্ছেন তারা।
অপরদিকে মিলারেরা ব্যংক লোন নিয়ে কম মূল্য ধান কিনে গুদামজাত
করছে। কিছুদিন পরেইতো খাদ্য মন্ত্রনালয়ের গুদামের জন্য ধান চাল
কিনবে সরকার উচ্চমূল্য। সেই টার্গেটেই ধান কিনে গুদামে ভরছে মিলারেরা।
সরকার যখন ধান কেনা শুরু করবে তখন আর অবশিষ্ট থাকবেনা কৃষকের
গোলায় ধান। ততদিনে অধিকাংশই মিলারদের গুদামে থাকবে কৃষকের উৎপাদিত
ধান।
সরকারী রেটে ধান, চাল বেচে মোটা অংকের টাকা কামাবে এই মধ্যসত্তভোগী
মিলারেরা আর কৃষকগন হায়! হায় করে দেখবে।
মাঝে মাঝে প্রশ্ন জাগে মনে সরকার কেন কৃষকের কাছ থেকে ধান চাল
না কিনে মিলারের কাছে থেকে কেনে?
এতে করে গরীব কৃষকেরা গরীবই রয়ে যাচ্ছে চিরদিন
আর ধনী মিলারেরা আরো ধনী হচ্ছে।
সমাজে সৃষ্টি হচ্ছে বৈষম্য...
এমনটিতো হওয়ার কথা ছিলনা? ৭২ এর সংবিধান অনুযায়ী অর্থনৈতিকভাবে
বাংলাদেশের অর্থনীতি হচ্ছে সমাজতন্ত্র। কিন্তু বাস্তবিক প্রেক্ষাপটে চলছে
পূজিঁবাদ! আর এতে পরোক্ষভাবে সহযোগিতা করছে সরকারের নিতীর।
একটি কৃষি প্রধান দেশে কৃষকের উৎপাদিত পন্যর নায্যমূল্য নিশ্চিৎ করা
সরকারের প্রধান দ্বায়িত্ব এবং কৃষিবান্ধব অর্থনীতি প্রনয়নে আরো বেশি
এগিয়ে আসতে হবে সরকারকে।
কৃষক ভাল থাকলে দেশ ভাল থাকবে তাই কৃষকের ফসলের
নায্যদাম নিশ্চিৎ করুন।