somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

হজরত ঈসা (আ.) এর দেয়া শিক্ষা

১০ ই সেপ্টেম্বর, ২০১২ বিকাল ৪:৪৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

প্রথম নবী হজরত আদম (আ.) হতে শুরু করে শেষ নবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) পর্যন্ত সকল নবী ও রাসুল মহিমান্নিত আল্লাহতায়ালার পক্ষ হতে আমাদের কাছে এসেছেন একেকজন মহান শিক্ষকরূপে. সমকালীন সম্প্রদায়ের দ্বারা হয়েছেন চরমভাবে নির্যাতিত, লাঞ্চিত, উপেক্ষিত এবং হয়েছেন ঠাট্টা বিদ্রুপের পাত্র. অনেক নবী ও রাসুলকে ছাড়তে হয়েছে নিজের জন্মভূমি. তারপরও নিজেদের উম্মতের জন্য তারা কেঁদেছেন, মহান আল্লাহতায়ালার কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করেছেন আর একটি মহান লক্ষকে সামনে রেখে এই ক্ষুদ্র ইহকালীন জীবনকে যথার্তরূপে পরিচালিত করার জন্য দিয়েছেন উত্তম উপদেশ. হজরত ঈসা (আ.) আমাদের দিয়েছেন জীবনঘনিষ্ঠ অনেক শিক্ষা. তার দেয়া অনেক উপদেশ হতে আমি কয়েকটি আপনাদের জন্য তুলে ধরছি ।

বন্ধুরা আমার, আমি তোমাদের বলছি, যারা দেহ ধ্বংস করার পর আর কিছুই করতে পারে না, তাদের ভয় করো না. কাকে ভয় করবে আমি তোমাদের তা বলে দিচ্ছি. তোমাদের মেরে ফেলার পর দোজখে ফেলে দেবার ক্ষমতা যার আছে, তাকেই ভয় কর. হ্যা, আমি তোমাদের বলছি, তাকেই ভয় কর।


কি খাবে বলে বেঁচে থাকবার বিষয়ে কিংবা কি পরবে বলে দেহের বিষয়ে ভেব না. জীবনটা কেবল খাওয়া- দাওয়ার বিষয় নয় আর দেহটা কেবল কাপড়-চোপড়ের ব্যপার নয়. ভেবে দেখো , ফুল কেমন করে বেড়ে উঠে, তারা পরিশ্রম ও করে না, সুতাও কাটে না. মাঠে যে ঘাস আজ আছে আর আগামীকাল চুলায় ফেলে দেয়া হবে, আল্লাহ যখন তা এইভাবে সাজান, তখন ওহে অল্প বিশ্বাসীরা, তিনি যে তোমাদের সাজাবেন তা কত না নিশ্চয়. তোমাদের মধ্যে কে চিন্তা-ভাবনা করে নিজের আয়ু এক ঘন্টা বাড়াতে পারে? এই সামান্য কাজটাও যদি তোমরা করতে না পর, তবে অন্যান্য বিষয়গুলির জন্য কেন চিন্তা কর? কি খাবে ভেবে অস্থির বা ব্যস্ত হয় না, তার চেয়ে বরং আল্লাহর রাজ্যের বিষয়ে ব্যস্ত হও. তাহলে এইগুলিও তোমরা পাবে.

চাও , তোমাদের দেয়া হবে, খোঁজ কর, পাবে, দরজায় আঘাত কর, তোমাদের জন্য খোলা হবে. যারা চায় তারা প্রত্যেকে পায়, যে খোঁজ করে সে পায়, আর যে দরজায় আঘাত করে তার জন্য দরজা খোলা হয়. তোমাদের মধ্যে এমন লোক কে আছে, যে তার ছেলে মাছ চাইলে তাকে সাপ দিবে, কিংবা ডিম চাইলে তাকে বিছা দিবে? তোমরা খারাপ হয়েও যদি তোমাদের ছেলে মেয়েদের ভালো ভালো জিনিস দিতে পারো , তবে যারা আল্লাহর নিকট চায়, তিনি যে তাদের দিবেন তা কত নিশ্চয়।

অপরের বিচার করো না, তাহলে তোমাদেরও বিচারের সম্মুখীন হতে হবে না. অপরের দোষ ধরো না, তাহলে তোমাদেরও দোষ ধরা হবে না. অন্যকে ক্ষমা করো, তাহলে তোমাদেরও ক্ষমা করা হবে. দান করো তাহলে প্রতিদান তোমরাও পাবে. অনেক বেশি করে, ঝাঁকিয়ে ঝাঁকিয়ে, উপচে পরবার মত করে দেয়া হবে, কারণ যেভাবে তোমরা মেপে দাও, তোমাদের জন্য সেইভাবে মাপা হবে।

তোমার ভাইয়ের চোখে যে কুটা আছে কেবল তাই তুমি দেখছ, অথচ তোমার নিজের চোখে যে কড়িকাঠ আছে তা লক্ষ্য করছ না কেন? তোমার নিজের চোখের কড়িকাঠ যখন লক্ষ্য করছ না তখন কেমন করে বলতে পর, "ভাই, তোমার চোখে যে কুটা আছে, এসো, তা বের করে দেই. " ভন্ড, প্রথমে তোমার নিজের চোখ হতে কড়িকাঠটা বের করে ফেল, তাহলে তোমার ভাইয়ের চোখে যে কুটা আছে তা বের করবার জন্য স্পষ্ট দেখতে পাবে.

যারা তোমাদের ভালবাসে, তোমরা যদি কেবল তাদেরই ভালবাস, তবে তাতে প্রশংসার কি আছে? খারাপ লোকেরাওতো এইভাবে ভালোবেসে থাকে. যারা তোমাদের মঙ্গল করে, তোমরা যদি কেবল তাদেরই মঙ্গল করো, তবে তাতে প্রশংসার কি আছে? পাপীরাও তো তাই করে. যাদের নিকট হতে তোমরা ফিরে পাবার আশা করো, যদি তাদেরই টাকা ধার দাও, তবে তাতে প্রশংসার কি আছে? ফিরে পাবে বলেইতো পাপীরা পাপীদের ধার দেয়. কিন্তু তোমরা শত্রুদের ভালবেসো, তাদের মঙ্গল করো, কিছু ফিরে পাবার আশা না করে ধার দিও. যারা তোমাদের সাথে খারাপ ব্যবহার করে, তাদের জন্য মুনাজাত করো, তাহলে তোমাদের জন্য মহা পুরস্কার আছে. তোমাদের সৃষ্টিকর্তা যেমন দয়ালু, তোমরাও তেমন দয়ালু হও. কারণ তিনি অকৃতজ্ঞ ও দুষ্টদেরও প্রতিও দয়া করেন.


প্রত্যেক গাছকে তার ফল দিয়েই চেনা যায়. লোকে কাঁটা -ঝোপ হতে ডুমুর বা বুনো ঝোপ হতে আঙ্গুর সংগ্রহ করে না. সৎ লোকের অন্তরের ভালো ভান্ডার হতে ভালো জিনিসই বের হয়. আর দুষ্ট লোকের মন্দ অন্তর থেকে মন্দ বিষয়ই বের হয়. মানুষের অন্তর যা দিয়ে পূর্ণ থাকে, মুখ তো সে কথাই বলে.


তোমাদের সম্পদ বিক্রি করে অভাবীদের দাও. যে টাকার থলি কখনো পুরাতন হয় না তাই নিজেদের জন্য তৈরী কর, অর্থাৎ যে ধন চিরদিন টিকে থাকে তাই বেহেশতে জমা কর. সেখানে চোরও আসেনা এবং পোকায়ও নষ্ট করে না. তোমাদের ধন যেখানে থাকবে, তোমাদের মনও সেখানে থাকবে।


বিয়ের ভোজে যখন কেউ তোমাকে নিমন্ত্রণ করে, তখন সম্মানের জায়গায় গিয়ে বসবে না, কারণ তোমার চেয়ে হয়ত আরো সম্মানিত কাউকে সেখানে নিমন্ত্রণ করা হয়েছে. তা করলে যিনি তোমাদের উভয়কে নিমন্ত্রণ করেছেন , তিনি এসে তোমায় বলবেন, এই জায়গাটি উনাকে ছেড়ে দিন. তখন তো তুমি লজ্জা পেয়ে সবচেয়ে নিচু জায়গায় বসতে যাবে. তুমি যখন নিমন্ত্রণ পাবে তখন বরং সবচেয়ে নিচু জায়গায় গিয়ে বসবে. তাহলে নিমন্ত্রনকর্তা এসে তোমায় বলবে, " বন্ধু, আরো ভালো জায়গায় গিয়ে বস." তখন অন্য সমস্ত অতিথিদের সামনে তুমি সম্মান পাবে. যে কেউ নিজেকে সম্মান দিতে চায় তাকে নত করা হবে,আর যে নিজেকে নত করে তাকে সম্মানিত করা হবে.



তোমার চোখ তোমার দেহের প্রদীপ. তোমার চোখ যদি সুস্থ থাকে , তবে তোমার সমস্থ দেহটি দীপ্তিময় হবে. চোখ মন্দ হলে তোমার দেহ অন্ধকারময় হবে. তাই সাবধান তোমার মধ্যে যে আলো আছে তা যেন অন্ধকার না হয়.







সর্বশেষ এডিট : ১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১২ দুপুর ২:৫৪
৩টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

=যাচ্ছি হেঁটে, সঙ্গে যাবি?=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:০৬


যাচ্ছি হেঁটে দূরের বনে
তুই কি আমার সঙ্গি হবি?
পাশাপাশি হেঁটে কি তুই
দুঃখ সুখের কথা ক'বি?

যাচ্ছি একা অন্য কোথাও,
যেখানটাতে সবুজ আলো
এই শহরে পেরেশানি
আর লাগে না আমার ভালো!

যাবি কি তুই সঙ্গে আমার
যেথায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

আগামী নির্বাচন কি জাতিকে সাহায্য করবে, নাকি আরো বিপদের দিকে ঠেলে দিবে?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৮:১২



আগামী নির্বচন জাতিকে আরো কমপ্লেক্স সমস্যার মাঝে ঠেলে দিবে; জাতির সমস্যাগুলো কঠিন থেকে কঠিনতর হবে। এই নির্বাচনটা মুলত করা হচ্ছে আমেরিকান দুতাবাসের প্রয়োজনে, আমাদের দেশের কি হবে, সেটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

ফেসবুক বিপ্লবে সেভেন সিস্টার্স দখল—গুগল ম্যাপ আপডেট বাকি

লিখেছেন মহিউদ্দিন হায়দার, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:৩০




কিছু তথাকথিত “বাংলাদেশি বিপ্লবী” নাকি ঘোষণা দিয়েছে—ভারতের সেভেন সিস্টার্স বিচ্ছিন্ন করে ফেলবে! সহযোগী হিসেবে থাকবে বিচ্ছিন্নতাবাদী সন্ত্রাসী আর পাকিস্তানি স্বপ্ন।শুনে মনে হয়—ট্যাংক আসবে ইনবক্সে। ড্রোন নামবে লাইভ কমেন্টে। আর... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঙ্গু এনালিস্ট কাম ইন্টারন্যাশনাল সাংবাদিক জুলকার নায়েরের মাস্টারক্লাস অবজারবেশন !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:২৬

বাংলাদেশের দক্ষিণপন্থীদের দম আছে বলতে হয়! নির্বাচন ঠেকানোর প্রকল্পের গতি কিছুটা পিছিয়ে পড়তেই নতুন টার্গেট শনাক্ত করতে দেরি করেনি তারা। ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহ ঘিরে নতুন কর্মসূচি সাজাতে শুরু করেছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ক্ষমতাচ্যুত ফ্যাসিবাদ: দিল্লির ছায়া থেকে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র

লিখেছেন কৃষ্ণচূড়া লাল রঙ, ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ ভোর ৫:৫৭

একটা সত্য আজ স্পষ্ট করে বলা দরকার—
শেখ হাসিনার আর কোনো ক্ষমতা নেই।
বাংলাদেশের মাটিতে সে রাজনৈতিকভাবে পরাজিত।

কিন্তু বিপদ এখানেই শেষ হয়নি।

ক্ষমতা হারিয়ে শেখ হাসিনা এখন ভারতে আশ্রয় নিয়ে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র... ...বাকিটুকু পড়ুন

×