পুতিনের জনপ্রিয়তা পড়া নিয়ে কৌতুক আছে -”পুতিনের পড়ে যাওয়া জনপ্রিয়তা পশ্চিমা বিশ্বের জনপ্রিয় নেতাদের থেকে ঢের বেশী”।ফোবর্স মাগ্যাজিনের মতে ওবামা নন, ভ্লাদিমির পুতিন বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষমতাধর ব্যাক্তি। ২০১৫ সালের সেপ্টেম্বর মাসের শেষদিকে রাশিয়া তার সিরিয়ার মিত্র আসাদের বিরোধীদের উপর বিমান হামলা চালিয়ে ক্ষীয়মান মার্কিন আধ্যিপত্যের মধ্যপ্রাচে শক্তির প্রদর্শন করে। আর গত বছর, ইউক্রেনের লড়াইয়ে রাশিয়ার ক্রিমিয়ায় নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা এবং রাশিয়ান প্রোপাগাণ্ডা RT’র কাছে আমেরিকা-ইংল্যান্ডের প্রোপাগান্ডা জায়ান্ট CNN,BBC মার খাওয়া, সোভিয়েত ইউনিয়নের ভস্ম থেকে ভূ-রাজনিতীতে রাশিয়ার পুর্নউত্থানের বার্তা দেয়।
ক্রেমলিনের মসনদে আসাঃ
মাফিয়া ভাবাদর্শের রাষ্ট্র রাশিয়ার গডফাদার ভ্লাদিমির পুতিনের হাত ধরে রাশিয়ার পুর্নউত্থানের আলামতগুলো দেখা যাচ্ছে।পেশায় সাবেক KGB কর্ণেল।বর্তমানে রাশিয়ান ফেডারেশনের রাষ্ট্রপতি।এ বছরের মে মাস ক্ষমতায় আরোহনের ১৫ বছর পার করলেন। ঐতিহাসিক প্রাসাদ ক্রেমলিন তার দপ্তর।পুতিন কোন গতানুগুতিক শাসক নন। তার যৌবনের মত বর্তমান জীবন ধোয়াশচ্ছান্ন।শক্ত পুরুষদের প্রতিক হলেও এখন তার মুখ থেকে প্রমের বাণীও শোনা যায়।তার কারণ- প্রথম স্ত্রীর সাথে ছারাছাড়ী হলেও, সত্তরের ঘরে এসে তিনি প্রথম কোন নারীর প্রতি ক্রাশ খান। রাশিয়ার অলিম্পিক গোল্ড মেডেলিস্ট এলিনা খাবেবা তার ক্রাশ।
ওবামার হাত ঘড়ির দাম ২০০$ হলেও পুতিনের মুখপাত্রের হাত ঘড়ির মাত্র দাম ৪ লাখ, না টাকা নয় ডলার। বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষমতাধর ব্যাক্তি হবার পাশাপাশি পুতিন অপ্রর্শিত সম্পদের দিক দিয়ে বিশ্বের অন্যতম ধনী ব্যক্তি। প্রাঞ্জল জার্মান বলতে পারেন,তার কারণ তিনি দীর্ঘ সময়ধরে সাবেক পূর্ব জার্মানীতে KGB’র গুপ্তচর ছিলেন। ২০০১ সালে জার্মানি সফরে তিনি জার্মান ভাষায় ভাষণ প্রদান করেন। এর বাইরে তিনি রাশান ব্যাতিত ভিন্ন ভাষায় বক্তৃতা দেন নি।
১৯৯৯ সালে ইয়েলসিনের নৈরাজ্যের সময় তিনি ক্রেমলিনের মসনদে আসেন না, বরং আনা হয়।ইতিঃপূর্বে পুতিন প্রতক্ষ রাজনিতীর সাথে সম্পৃত্ত ছিলেন না।পুতিনের ক্ষমতায় আসা ছিল আকস্মিক। অলিগার্গ বরিস বেরেজোভস্কির জন্য তা খাল কেটে কুমির আনা। সমাজতান্ত্রিক অর্থনিতীর সোভিয়েত রাশিয়ার পতনের পর রাশিয়ার অর্থনিতীর বেসরকারীকরণের সময় গুটিকয়েক ব্যাক্তি প্রতারণা,দুর্ণিতীর মাধ্যমে রাষ্ট্রের সিংহভাগ সম্পদের মালিক বনে যায়।তারাঅলিগার্গ নামে পরিচিত।চেলসির সত্বাধিকারী রোমান আব্রাহামোভিচও অলিগার্গ। তারা ইসরায়েল-রাশিয়ার দ্বৈত নাগরিক।তার মানে হল জায়নিস্ট।ইসরায়েল মানবিক কারণে কাউরে দ্বৈত নাগরিকত্ব দেয়না,বরং ইজরায়েলের কাজে লাগলে দেয়।নতাদের ইশারাতেই রাশিয়া চলত।অলিগার্গদের লোক তৎকালীন রাষ্ট্রপতি বরিস ইয়েলসিনের স্বাস্থ্যের মারাত্বক অবনতি হলে অলিগার্গ বরিস বেরেজোভস্কি ইয়েলসিনের উত্তরসূরি হিসেবে পুতিনকে আনেন ক্ষমতায় আনেন।কেইবা জানত এই পুতিনই সুই হয়ে ঢুকে ফাল হয়ে বের হবে!
তার জনপ্রিয়তার রহস্য ,জায়নিস্ট অলিগার্গদের সাথে গ্যাং ওয়ারঃ
পুতিনের আকাশচুম্বী জনপ্রিয়তার কারণ নিম্নের তুলনায় স্পষ্ট হবে।
দ্বায়িত্ব নেবার সময় GDP ৭৮% ঋণে জর্জরিত রাশিয়ার ঋণ এখন ১৫ বছর পর ৮%।পেনশন ৪৯৯ রুবল থেকে বেড়ে ১০,০০০ রুবল হয়েছে।১৫ বছর আগে রাশানদের চিত্র ছিল মস্কোর রাস্তায় খাদ্যের সন্ধানে ইতস্তত ঘোরা শুকনো মুখ।আজ,২০১৮ সালের ফুটবল বিশ্বকাপের আয়োজক রাশিয়া।
না,পুতিন কোন যাদুকর নন। তার সাহসী পদক্ষেপের ফল পরিবর্তিত রাশিয়া। KGB’র লোক হওয়ায় তার মনে সোভিয়েতি কঠোর নিয়ন্ত্রনের মানুষিকতা বিদ্যমান।কঠোর নিয়ন্ত্রঙ্কে তিনি ২১ শতাব্দির আলোকে সংস্কার করেন।তখন রাশিয়া আবার বিভক্ত হবার প্রহর গুনছিল।ক্ষমতা পাকাপাকি করার পর তার প্রথম শিকার অত্যধিক ধনী অলিগার্গরা।খনিজ সম্পদে পরিপূর্ণ রাশিয়ার খনিজ সম্পদে একচেটিয়া আধিপত্য শুধু অলিগার্গদের ছিল।তারা বিপুলহারে কর ফাকি দিত।বিশ্বের বৃহত তেল,গ্যাস,নিকেল উৎপাদন কম্পানি গুলো অলিগার্গদের অধীনে ছিল। পুতিন রাষ্ট্রের ব্যবহার করে তাদের হুমকি,ব্লাক মেইল,জেলে পাঠিয়ে এসবের রাষ্ট্রিয়করণ করেণ। তাদের জন্য দুটি পথ খোলা রাখেন আমরা সাথে আস-ব্যবসা কর ট্যাক্স দাও, আর না হলে ব্যাবসা করবা,ট্যাক্স ফাঁকি দিয়ে রাষ্ট্রের কাজে নাক গলাও আর পেদানি খাও। রোমান আব্রাহামোভিচ,বরিস বেরেজোভস্কি, মিখাইল খোদরোভস্কির মত ঘাড়ত্যাড়ারা রাশিয়া ত্যাগ করে অন্যদেশের আশ্রয়ে বিশেষত রাশিয়ার চিরবৈরি ইংগল্যান্ডে যায়।মিখাইল খোদরোভস্কিরে দিয়ে আমেরিকা,ই উ পুতিনের বিরোধী দল দাঁড় করাতে চাইলেও সফল হতে পারেনাই।পুতিন একদম গডফাদার স্টাইলে মিখাইল খোদরোভস্কিরে জেলে পুরায় এবং পরে বিদেশ নির্বাসনের শর্তে ছেড়ে দেয়।